কাউছার আলম, পটিয়া »
আট মামলা আর ঠিকাদারের অনিয়মের কারণে আটকে গেছে পটিয়া পৗরসভার সুচক্রদন্ডী থেকে হাইগাঁও পর্যন্ত মরা খাল খনন কাজ।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে শেখ হাসিনার শতবর্ষের ডেল্টা প্ল্যানের আওতায় সুচক্রদন্ডী থেকে হাইদগাঁও পর্যন্ত মরা খালের খনন কাজ শুরু হলেও বড় এস্কেবেটরের ব্যবহার এবং মাটি বিক্রিসহ নানা অনিয়মের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয়নি। আর ঠিকাদারের বিলম্বের এ সুযোগে ৮টি মামলা দায়ের হয়েছে।
জানা গেছে, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর খালের খনন কাজ শুরুর মাধ্যমে জাতীয় সংসদের হুইপ ও স্থানীয় এমপি সামশুল হক চৌধুরীর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন শুরু হয়। পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের সুচক্রদন্ডী গ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে খাল খনন কাজের উদ্বোধন করা হয়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ কাজের উদ্বোধন করেন। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর স্থানীয় লোকজন তাতে বাদ সাধে।
পরে স্থানীয় এমপি ও জাতীয় সংসদের হুইপের হস্তক্ষেপে সুচক্রদন্ডী এলাকায় খালের খনন কাজ সম্পন্ন হয়। খালের সুচক্রদন্ডী এলাকায় খালের খনন কাজ ঠিকমত হলেও পরবর্তীতে সুচক্রদন্ডীর পূর্ব দিক থেকে মাটি বিক্রির ব্যবসায় জড়ায় ঠিকাদার। খালের মাটি তুলে বিক্রি করা হতো খাল সংলগ্ন বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে।
কোন কোন স্থানে খালের ওপর ব্যক্তি বিশেষের বাড়িঘর ও দখলীয় খালের অংশ রক্ষায় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়ে খাল খনন না করেই অন্যত্র চলে যায় ঠিকাদার। সে সময় এলাকার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে এবং বিষয়টি জানালে সামশুল হক চৌধুরী মরা খাল যথাযথভাবে খননের নির্দেশ দেন। এরপরই ঠিকাদার মাটি বিক্রির বাণিজ্য করতে না পেরে খনন শেষ না করেই চলে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান শতবর্ষের ডেল্টা প্ল্যানের আওতায় পটিয়াসহ সারাদেশের ৬৪ জেলার অভ্যন্তরিন ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের (১ম পর্যায়ে) কাজ আগামী বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা থেকে সাধারণ মানুষকে মুক্তি দেয়ার উদ্দেশ্যে এ কাজ শুরু করেন। প্রথম পর্যায়ে পটিয়ার সুচক্রদন্ডী গ্রামে ৮১ লাখ ৭১ হাজার টাকার কাজটি পেয়েছেন মেসার্স মোস্তফা এ্যান্ড সন্স। প্রকল্পের অধীনে প্রায় ৫ কিলোমিটারের বেশি খাল খনন করার কথা।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী খালের খনন সম্পন্ন হলে পটিয়া পৌর এলাকার বিশাল একটি অংশ ও হাইদগাঁও ইউনিয়নের জলাবদ্ধতা নিরসন হতো। পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর জোয়ারের পানি দিয়ে সেঁচের মাধ্যমে শুকনো মৌসুমে চাষাবাদ সম্ভব হতো।
গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে অবশেষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে কাজটি শুরু হয়েও শেষ হয়নি। বিপত্তি বাঁধে ঠিকাদারের গাফেলতি, অনিয়ম এবং মাটি বিক্রিকে কেন্দ্র করে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী একরাম হোসাইন বাংলাধারাকে বলেন, ঠিকাদার কতটুকু খাল খনন করেছেন তা জরিপ করা হচ্ছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে অর্ধেকের বেশি খাল খনন হয়েছে।
আগামী শুকনো মৌসুমে খালটি আবারও খনন করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলার কারণে বিষয়টি এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ছোট এস্কেবেটর দিয়ে খনন করা হলে নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে পুরো খালটিই খনন হয়ে যেত। মামলা বা অন্য কোন সমস্যা এতে বাধা হতো না। এতে ঠিকাদারের গাফিলতি রয়েছে।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর