বাংলাধারা প্রতিবেদন »
চট্টগ্রাম নগরীর মাদক ব্যবসায়ী ছগির হোসেনের কারাগারে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সহযোগি মফিজকে খুনের পরিকল্পনা হয়। পরিকল্পিতভাবে জনৈক মফিজুর রহমানকে হত্যা করতে গিয়ে ভুল করে রাজুকে হত্যা করে হত্যাকারীরা। হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা জেলে বসেই করেন ছগির।
বৃহস্পতিবার ( ১৬ মে ) সিএমপির পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম। এ ঘটনায় জড়িত আটজনকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে ডবলমুরিং থানা পুলিশ।
গ্রেফতার আটজন হলেন- শিমুল দাশ (২০), তানভির হোসেন প্রকাশ সিফাত (১৮), মো. সুজন প্রকাশ মধু (১৮), মো. রাকিব হোসেন প্রকাশ শাহ রাকিব (১৮), মো. নুর নবী (১৮), মেহেদী হাসান রুবেল (১৮), ওসমান হায়দার কিরন (১৮) ও সেলিনা আক্তার সেলি (৪৫)। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৭ এপ্রিল ইয়াবা ও অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন মাদক ব্যবসায়ী ছগির হোসেন। এ ঘটনার জন্য সহযোগী মফিজকে সন্দেহ করেন ছগির।
গ্রেপ্তারের ৫ দিন পর কারাগারে দেখা করতে যান ছগিরের স্ত্রী, ছেলে কিরনসহ কয়েকজন। তখন মফিজকে খুনের নির্দেশ দেন ছগির হোসেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৩ মে খুনের খরচ বাবদ ছগিরের স্ত্রী সেলিনা আক্তার সেলী শুক্কুর নামে একজনকে ১ হাজার টাকা ও ছগিরের ছেলে ওসমান হায়দার কিরন একটি কিরিচ দেন। পরের দিন (১৪ মে) সবাই হাড্ডি কোম্পানীর মোড়ে রুবেলের টং দোকানের সামনে জড়ো হন ছগিরের ছেলে কিরন, শুক্কুর, শিমুল, রাকিব, সিফাত। সেখারে খুনের চূড়ান্ত পরিকল্পনা করে।
এ সময় কিরন ব্যাগে করে নিয়ে আসা চাইনিজ কুড়াল রাকিবকে দেয় ও ছুরি সিফাতকে দেয়। পরে রাত ১১টার দিকে কিরন বাসায় চলে যায়। অন্যরা ওখানে অবস্থান নেয়। ভোরে ফজরের নামাজের পর হত্যায় অংশ নিতে শিমুল, শুক্কুর, রাকিব, সিফাত, সুজন প্রকাশ মধু মফিজের ভাড়া ঘরে প্রবেশ করে। পাহারা দেওয়ার জন্য বাইরে অংশ নেয় নুর নবী ও রুবেল।
ভাড়া ঘরে মফিজের রুম মনে করে পাশের রুমে প্রবেশ করে হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা। ঘুমন্ত অবস্থায় রাজুকে মফিজ মনে করে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে আহত করে তারা। পরে লোকজনের চিৎকারে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। যদিও সে সময় টার্গেট হওয়া মফিজও তার রুমে ছিলেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ডবলমুরিং থানার উপ-পরিদর্শক অর্নব বড়ুয়া জানান, ছগিরের স্ত্রী সেলিনা আক্তার সেলি (৪৫) ও শিমুল দাশের বিরুদ্ধে মাদক আইনে ডবলমুরিং থানায় মামলা রয়েছে।
শিমুল, সিফাত, সুজন, রাকিব, নুর নবী, রুবেলসহ একটি কিশোর গ্যাংকে নিয়ন্ত্রণ করে ছগির হোসেন। তাদেরকে ছগির সেবন করার জন্য ইয়াবা সরবরাহ করেন বলে তারা সবাই ছগিরের অনুগত। গ্রেফতার আসামিদের দেওয়া তথ্যে খুনে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান এসআই অর্নব বড়ুয়া। সংবাদ সম্মেলনে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) ফারুক উল হক, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) কামরুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ডবলমুরিং জোন) আশিকুর রহমান, ডবলমুরিং থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক (তদন্ত) জহির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর/এসবি