ksrm-ads

৫ অক্টোবর ২০২৪

ksrm-ads

অবরোধ-পরিবহন ধর্মঘটে অচল খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি

Rangamati

‘পাহাড়ী-বাঙালিদের’ মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে পার্বত্য দুই জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ আছে। এতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে জনজীবনে।

এর মধ্যে বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতার আহ্বানে খাগড়াছড়িসহ তিন জেলায় চলছে ৭২ ঘণ্টার অবরোধ। অন্যদিকে রাঙামাটিতে বাস ট্রাক সিএনজি মিনিট্রাক চালক মালিক ঐক্য পরিষদের ডাকে শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট।

অবরোধের প্রথম দিন শনিবার সকালে খাগড়াছড়িতে সাজেক সড়ক, পানছড়ি, রামগড় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন অবরোধকারীরা।

সকাল থেকেই খাগড়াছড়ির সঙ্গে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া খাগড়াছড়ির দীঘিনালা, পানছড়ি, মাটিরাঙাসহ আন্তঃউপজেলাগুলোতে সড়ক যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে।

এর আগে পার্বত্য দুই জেলায় পাহাড়িদের ওপর হামলা, খুন ও বিহার-ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শুক্রবার ঢাকায় বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতার আয়োজিত সমাবেশ থেকে তিন পার্বত্য জেলায় ৭২ ঘণ্টা সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

এই অবরোধ কর্মসূচির প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন জানিয়েছে ইউপিডিএফ।

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরিফিন জুয়েল বলেন, ‘অবরোধে জনজীবন স্বাভাবিক রয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জেলা সদর ও উপজেলাগুলোয় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি টহল রয়েছে।’

এদিকে রাঙামাটিতে পাহাড়ী-বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে বিভিন্ন স্থানে গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও চালকদের মারধরের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে।

শুক্রবার সকাল থেকে বাস ট্রাক সিএনজি মিনিট্রাক চালক মালিক ঐক্য পরিষদের ডাকে এই ধর্মঘট পালিত হচ্ছে।

ধর্মঘটের কারণ সকাল থেকে চলছে না শহরের একমাত্র গণপরিবহন অটোরিকশা। গাড়িশূন্য শহর থেকে ছাড়েনি দূরপাল্লার কোনো বাসও।

অটোরিকশা চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু জানিয়েছেন, ‘শুক্রবার বিনা উস্কানিতে অসংখ্য গাড়ি ভাঙচুর করেছে পাহাড়িরা, কয়েকজন চালককেও মেরে আহত করেছে। এর প্রতিবাদে ও বিচার দাবিতে আমরা পরিবহন ধর্মঘট শুরু করেছি। ’

তবে শুক্রবার সংঘাতের পর শান্ত শহরে এখনো জারি আছে ১৪৪ ধারা।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোশারফ হোসেন খান জানিয়েছেন, শহরে ১৪৪ ধারা এখনো বহাল আছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। কোথাও কোনো সংঘাত বা সহিংসতার খবর নাই।

এর আগে খাগড়াছড়িতে বুধবার সকালে চুরির অভিযোগে ‘গণপিটুনিতে’ মামুন নামে এক যুবক হত্যার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকালে বিক্ষোভ মিছিল বের করে দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ মিছিলের এক পর্যায়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। পরে লারমা স্কয়ারের দোকানপাটে আগুন দেয় একপক্ষ। তাতে শতাধিক দোকান পুড়ে গেছে বলে ক্ষতিগ্রস্তদের ভাষ্য।

দীঘিনালার ওই ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতভর খাগড়াছড়ি জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে পুরো জেলায় আতঙ্ক তৈরি হয়।

সংঘর্ষে আহতদের খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজনের মৃত্যু হয়।

খাগড়াছড়িতে সংঘর্ষ ও মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে রাঙামাটি শহরের জিমনেসিয়াম চত্বর থেকে কয়েক হাজার পাহাড়ির একটি মিছিল বের হয়।

সেই মিছিলের জেরে সেখানে শুরু হওয়া সংঘর্ষে মারা গেছেন একজন। আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। এসব সংঘর্ষের জেরে শুক্রবার দুই জেলাতেই ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।

এদিকে শনিবার রাঙামাটি যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রউপদেষ্টাসহ কয়েকজন উপদেষ্টার সমন্বয়ে সরকারের একটি উচ্চপদস্থ টীম। তারা সকাল স্থানীয় প্রশাসন, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও দায়িত্বশীলদের সঙ্গে মতবিনিময় করার কথা রয়েছে। সূত্র : বিডিনিউজ

আরও পড়ুন