বাংলাধারা প্রতিবেদন »
হাটহাজারীর উত্তর মাদার্শ, দক্ষিণ মাদার্শা, চিকনদন্ডি, ফতেহপুর ইউনিয়নের অন্যতম দুঃখের নাম এশিয়ান পেপার মিল। এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান যাদের শিল্প বর্জ্য প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীসহ আশে পাশের পরিবেশকে ধংস করছে। এ শিল্পের বর্জ্যের কারণে জলজ প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে যাচ্ছে। দূর্গন্ধে বাঁচা দায় আমেপাশের মানুষের! এ নিয়ে এলাকাবাসী অভিযোগ করে আসছিলেন অনেকদিন ধরে। তবে প্রশাসন রহস্যজনকভাবে চোখ বুজেই ছিল এতদিন।
সম্প্রতি, দৈনিক আজাদীর ফটোসাংবাদিক অমিন মুন্না সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেয়া এক ভিডিওতেও তুলে ধরেন এই কারখানা দ্বারা হালদা দুষনের চিত্র।
অবশেষে, দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা দূষণের অভিযোগে নন্দীরহাট এশিয়ান পেপার মিলের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে রাউজানের সত্তারঘাট এলাকায় পোনা সংগ্রহকারীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে হালদা পাড়ের জনগণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে হালদা দূষণ করায় এশিয়ান পেপার মিলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার জন্য এডিশনাল সেক্রেটারি রোকনউদ্দোলাকে এ নির্দেশ দেয়া হয়।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এডিশনাল সেক্রেটারি রোকনউদ্দোলা বাংলাধারাকে বলেন, হালদাপাড়ের মানুষের সঙ্গে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মতবিনিময় করেন। সেখানে পোনা সংগ্রহকারীরা হালদা দূষণ নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ করেন এবং এশিয়ান পেপার মিলের বিষয়টিও এ সময় তুলে ধরা হয়। পেপার মিলের বর্জ্য বিভিন্ন খালের মাধ্যমে হালদা নদীতে গিয়ে পড়ে। অভিযোগ শুনেই সচিব এশিয়ান পেপার মিলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেন এবং বিষয়টি পরিবেশ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার জন্যও বলা হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ড: মনজুরুল কিবরিয়া বাংলাধারাকে বলেন, এশিয়ান পেপার মিল এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যাদের শিল্প বর্জ্য প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীসহ আশেপাশের পরিবেশকে ধংস করছে। হালদার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে গিলে খাচ্ছে এই মিল। গত বছরও হালদায় ডিম ছাড়ার সময় এই মিল তাদের বিষাক্ত পানি ছেড়ে অসংখ্য মা মাছ নিধন করেছে। আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি দ্রুত এই প্রতিষ্ঠান কে আইনের আওতায় আনার জন্য।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বাংলাপধারাকে বলেন, উত্তর মাদার্শ, দক্ষিণ মাদার্শা, চিকনদন্ডি, ফতেহপুর ইউনিয়নের অন্যতম দুঃখের নাম এশিয়ান পেপার মিল। প্রকৃতিকে দারুণভাবে বিনষ্ট করছে এ শিল্প। গত দুইদিন আগে এশিয়ান পেপার মিল এই খালে তার শিল্পবর্জ্য ছাড়ে। এই পেপার মিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দীর্ঘ পুরানো। বিশেষ করে বৃষ্টি পড়লেই তারা রাতের আঁধারে লোকালয়ে বর্জ্য গুলো ছেড়ে দেয়, যা মাদারী খাল হয়ে পড়ে হালদা নদীতে। যে সময় মা মাছ ডিম ছেড়েছে সেই সময় তারা এই ভয়ানক কাজ করেছে।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর/টিএম