বাংলাধারা প্রতিবেদন »
বিচারকার্যে সহযোগিতা করতে আগত স্বাক্ষীদের উপস্থিতির জন্য যাতায়াত ভাতা পাওয়ার কথা থাকলেও স্বাক্ষীরা সে ভাতা পান না বলে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক টাস্কফোর্সের দৃষ্টিগোচর হয়। এ ভাতা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম জেলার সকল পাবলিক প্রসিকিউটরকে অনুরোধ করা হয়।
আজ সোমবার (১৯ আগস্ট) নগরীর সার্কিট হাউজে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক টাস্কফোর্সের সভায় এ অনুরোধ জানোনো হয়। সভায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আব্দুল মান্নান সভাপতিত্ব করেন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শংকর রঞ্জন সাহা, ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, সকল জেলা প্রশাসক, মামলা পরিচালনাকারী পিপিগণসহ সংশ্লিষ্ট সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জানানো হয়, চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরীর আদালতে ২২ শতাংশ বিচারকের শুন্যতা রয়েছে। এর ফলে মামলা পরিচালনায় ধীরগতির সৃষ্টি হচ্ছে। দ্রুত আদালতে বিচারকশুন্যতা দূর করতে সভায় সংশিষ্ট দপ্তরকে অনুরোধ করা হয়। সভায় আরও জানানো হয় যে, জুলাই মাস পর্যন্ত বিভিন্ন আদালতে ৪১ হাজার ৪২৮টি মামলা পেন্ডিং রয়েছে।
সভায় জুন মাসের সিদ্ধান্তের আলোকে জুলাই মাসের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভায় জানানো হয়, চোরাচালান প্রতিরোধে স্থল ও নৌপথে সংশ্লিষ্ট সংস্থা কর্তৃক জুন মাসে ৩১ হাজার ৬১১টি এবং জুলাই মাসে ৩২,১৯৫টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনা করে জুন মাসে ১ হাজার ৭৩টি মামলা ও জুলাই মাসে ১ হাজার ২৩৩টি মামলা রুজু করা হয়। উক্ত অভিযানের মাধ্যমে জুন মাসে প্রায় ১৩৫ কোটি ও জুলাই মাসে প্রায় ১০৩ কোটি টাকা মূল্যের পণ্য আটক করা হয়। এ অভিযানের মাধ্যমে জুন মাসে ৭৮৫ জনকে এবং জুলাই মাসে ৯৩৮ জনকে আটক করা হয়।
সভায় আরও জানানো হয়, জুন মাসে ৭ হাজার ৮০২টি চেকপোস্টের মাধ্যমে ৬০ হাজার ৫৮২টি যানবাহনে এবং জুলাই মাসে ৭ হাজার ৭৩৬টি চেকপোস্টের মাধ্যমে ৬৬ হাজার ৮৮০টি যানবাহনে তল্লাশী চালানো হয়। এ সংক্রান্তে জুন মাসে ৪৮২টি এবং জুলাই মাসে ৫২২টি মামলা দায়ের করা হয়। তল্লাশীকালে জুন মাসে প্রায় ৩৭ কোটি টাকা মূল্যের এবং জুলাই মাসে ৬১ কোটি টাকা মূল্যের পণ্য আটক করা হয়। এ ঘটনার দায়ে জুন মাসে ৬২২ ব্যক্তি ও জুলাই মাসে ৫৯৮ ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
চোরাচালান নিরোধ কার্যক্রমকে কার্যকর ও গতিশীল রাখার লক্ষ্যে আবাসিক এলাকা, ব্যবসাকেন্দ্র ও গুদাম ইত্যাদিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ জুন মাসে ৩ হাজার ৯৫৭টি ও জুলাই মাসে ৪ হাজার ৬৪টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের ফলে জুন মাসে ১৮৭টি ও জুলাই মাসে ২৩২টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মাধ্যমে জুন মাসে ৯২ লক্ষ টাকা মূল্যের ও জুলাই মাসে প্রায় ১ কোটি টাকা মূল্যের পণ্য আটক করা হয়। এ ঘটনায় জুন মাসে ২২২ জনকে এবং জুলাই মাসে ২৬৪ জনকে আটক করা হয়।
চোরাচালান অভিযানকে আরও কার্যকর করার জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনার অনুরোধ করা হয় জুন ও জুলইি মাসের সভায়। সে প্রেক্ষিতে জুন ও জুলাই মাসে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই অভিযানে জুন মাসে ৬০ হাজার ২টি অভিযান করে ১ হাজার ৭৩৬টি মামলা দায়ের করা হয়। এতে ১৪২ কোটি টাকা মূল্যের পণ্য এবং ১ হাজার ৬০৮ জনকে আটক করা হয়। আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ১ হাজার ২৪৬টি মামলা রুজু করা হয়। জুলাই মাসে ৬০ হাজার ৮০৬টি অভিযানে ১ হাজার ৯৮৭টি মামলা দায়ের করা হয়। এতে প্রায় ১১৬ কোটি টাকা মূল্যের পণ্য ও ১ হাজার ৮৩১ জনকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ১ হাজার ৩৬৩টি মামলা রুজু করা হয়।
চোরাচালান মামলাসহ অন্যান্য মামলা জেলা কমিটিসহ বিজ্ঞ পিপি ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহের সাথে সভার মাধ্যমে নিস্পত্তি ত্বরান্বিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয় সভায়।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর/টিএম