ksrm-ads

১৯ মার্চ ২০২৫

ksrm-ads

আত্মসমর্পণকারী ৭৭ জলদস্যুকে ‘ঈদ উপহার’ দিল র‍্যাব

কক্সবাজার প্রতিনিধি »

কক্সবাজার-বাঁশখালী উপকূল থেকে আত্মসমর্পণকারী ৭৭ জলদস্যুকে ঈদ উপহার দিয়েছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা পরিষদ হলরুমে এস উপহার সামগ্রী তুলে দেন র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল এমএ ইউসুফ।

র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারি পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার জানান, র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের বিশেষ অভিযান এবং কঠোর পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে গত ২০১৮ সালের ৪৩ জন জলদস্যুকে আত্মসমর্পণ করাতে সক্ষম হয়। তাদের আত্মসমর্পণ পরবর্তী সময়ে র‌্যাব-৭ বিভিন্ন সময়ে সহযোগিতার মাধ্যমে তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করে। আত্মসমর্পণকৃত জলদস্যুদের সমাজে স্বস্তির সাথে স্বাভাবিক জীবনযাপন ও র‌্যাবসহ সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী কর্তৃক সহযোগিতার মনোভাবের কথা বিবেচনা করে গত ২০২০ সালে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম আরও ৩৪ জনজলদস্যুকে আত্মসমর্পণ করাতে সক্ষম হয়।

তিনি আরও জানান, র‌্যাব-৭ উল্লেখিত জলদস্যুদের আত্মসমর্পণের পর থেকে সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন সময়ে উপহার এবং প্রণোদনা দিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৮ এপ্রিল র‌্যাবের মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে মহেশখালী, কুতুবদিয়া, বাঁশখালী এবং পেকুয়া উপকূলীয় অঞ্চলের আত্মসমর্পণকৃত আলোর পথের অভিযাত্রীদের মাঝে ঈদ সামগ্রী তুলে দেয়া হয়। এসময় তাদের বর্তমান জীবনযাপন নিয়ে বিশেষ মতবিনিময় সভাও করা হয়।

ঈদ সামগ্রী পেয়ে সরকারের প্রতিসন্তুষ্ঠি প্রকাশ করে এক সময়ের আলোচিত জলদস্যু পেকুয়ার আলী আকবর (ছদ্মনাম) বলেন, নানা ভাবে স্বাবলম্ভি হবার চেষ্টা করেও বিফল হয়ে অপরাধ জগতে পা বাড়ানো। নব্বই দশকে অপরাধ শুরুর পর এক যুগেরও বেশি সময় লুটপাটের জীবন কাটিয়েছি। সবসময় শৃংখলাবাহিনীর গ্রেফতার আতংক নিয়ে থাকতে হয়েছে। কারাগার, জলদস্যুতা, পালানো এ-নিয়ে জীবন এক সময় বিষিয়ে উঠেছিল। ২০১৭ সালের শেষের দিকে সাংবাদিক আকরাম আমাদের কয়েকজনকে অপার করলেন আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরলে সুন্দর ভাবে জীবন চালানোর ব্যবস্থা করবে সরকার।

তিনি আরো বলেন, তখন কথাটি বিশ্বাস হয়নি। আমরা সময় ও কথার নিশ্চয়তা চাইলাম। একসময় বিশ্বাস যোগ্যতা দেখালেন আর আমরাও রাজি হয়ে গেলাম। ২০১৮ সালে আত্মসমর্পণ করার পর থেকে সরকারি সহযোগিতা পাচ্ছি। এটি সেই নব্বই দশকে পেলে আজ সমাজে মাথা উচু করে চলতে পারতাম। এখন অতীত অপরাধের কারণে মাঝে মাঝে লজ্জা লাগে। কিন্তু এখনো এলাকার কিছু স্বার্থন্বেষী মহল আমাদের বেকায়দায় ফেলতে নানা চলচাতুরির মাধ্যমে বিপদে ফেলতে চেষ্টা করে। তখন মন চাই আবার অপরাধে জড়ায়। কিন্তু সে জীবন অনিশ্চিত।

একই ভাবে আত্মসমর্পণরা অন্যরাও র‌্যাবের মাধ্যমে সরকারের এমন মানবকল্যাণ মূলক কর্মকান্ডে গভীর সন্তুষ্টি ও অপকর্ম থেকে ফিরে সুন্দরভাবে স্বাভাবিক জীবন যাপনের অনুপ্রেরণা যোগানোয় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, আত্মসমর্পণকারী দস্যুরা পুনর্বাসিত হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। সরকারের পক্ষ থেকে দস্যুদের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর ও গুরুতর অপরাধের মামলা ব্যতীত অন্যসব সাধারণ মামলা সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। সমাজে চলতে গিয়ে কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে আইনশৃংখলাবাহির কাছে সহযোগিতা চাইলে গুরুত্ব সহকারে তা পেতে পারেন তারা।

এসময় র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান, পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূর্বিতা চাকমা, সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার, অপস্ অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার মো. রায়হান উদ্দিন মুরাদ, পেকুয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী, আত্মসমর্পণে সমঝোতাকারি সাংবাদিক এমএম আকরাম হোসাইনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন