চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রাঙ্গাদিয়া এলাকায় ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (ডিএপিএফসিএল) সার কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানি খেয়ে তিনটি মহিষের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে আরও সাতটি গবাদি পশু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে, নিখোঁজ রয়েছে অন্তত পাঁচটি মহিষ।
রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে কারখানার পেছনে মাঝের চর খালের পাশে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় খামারিরা জানান, কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা বা মাইকিং ছাড়াই কারখানার বর্জ্য পানি খালে ছেড়ে দিলে গরু-মহিষগুলো সেটি পান করে।
ক্ষতিগ্রস্ত খামারি মো. রফিক বলেন, “আমার তিনটি মহিষ মারা গেছে, দুইটি অসুস্থ। পাঁচটি মহিষ এখনও খুঁজে পাইনি। আমরা এসব পশু পালনের ওপর নির্ভর করেই সংসার চালাই। এখন আমি নিঃস্ব।”
আরেক খামারি মো. ফারুক বলেন, “আমার একটি গরু মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। চিকিৎসকের মতে, বাঁচার সম্ভাবনা খুব কম। এছাড়া আরও অনেকের পশুও অসুস্থ হয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর ডিএপি ও সিইউএফএল সার কারখানার বর্জ্য খালে ছাড়া হয়। এতে পারকি ও রাঙ্গাদিয়া এলাকার খোলা মাঠে বিচরণরত গবাদি পশু বিষাক্ত পানি খেয়ে মৃত্যুর মুখে পড়ে। পূর্বে এ ধরনের ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিক গরু-মহিষ মারা যাওয়ার তথ্যও জানা যায়। যদিও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে কিছু ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়েছিল, তবুও এ সমস্যা সমাধানে নেওয়া হয়নি কোনো স্থায়ী উদ্যোগ।
দাবি অস্বীকার কারখানা কর্তৃপক্ষের?
এ বিষয়ে ডিএপি সার কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল বলেন, “আমাদের কারখানা থেকে কোনো বিষাক্ত বর্জ্য ছাড়া হয়নি। কারখানার পানিতে অ্যামোনিয়া না থাকায় কোনো গবাদি পশুর মৃত্যুর সম্ভাবনা নেই। মহিষগুলোর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।”
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর এই ধরনের ঘটনা ঘটলেও কারখানাগুলো সময়মতো সতর্কতা না নেওয়ায় তারা বারবার ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, কারখানার অনিয়ন্ত্রিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কারণে তারা বারবার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই তারা ক্ষতিপূরণসহ এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জোর দাবি জানান।
মন্জু/এআরই/বাংলাধারা