টানা বৃষ্টি ও সাগরের প্রবল স্রোতের কারণে ভাঙনের কবলে আনোয়ারা উপকূলের অধিকাংশ এলাকার বেড়িবাঁধ। লাগাতার বৃষ্টি, সাগরের উত্তাল জোয়ারের ঢেউ, নির্মাণ কাজে ধীরগতিসহ নানা অনিয়মের কারণে উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চল পারকি সমুদ্র সৈকত থেকে রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর পরুয়াপাড়া গলাকাটার ঘাট থেকে গহিরা বাইগ্যার ঘাট, পূর্বগহিরা ফকির হাট থে দক্ষিণ সরেঙ্গায় বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশে ভাঙন ধরেছে। যার ফলে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে উপকূলের প্রায় অর্ধলাখ মানুষ।
শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাগরের ঢেউয়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে অল্পে আটকে আছে, পাশের মসজিদের পাশে কবরস্থানে পানি উঠানামা করছে।বিগত এক সপ্তাহের বৃষ্টি ও উত্তাল সাগরের ঢেউয়ে আনোয়ারার পারকি সমুদ্র সৈকত ও রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর পরুয়াপাড়া, গলাকাটার ঘাট, গহিরা ও সরেঙ্গা উপকূলের বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে, এসব এলাকা জরুরি ব্যবস্থা না নিলে প্লাবিত হবে পুরো ইউনিয়ন।
এছাড়া জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ১১ নং জুঁইদণ্ডী ইউনিয়নের প্রায় তিন কিলোমিটার বাঁধ ও ফসলি জমি তীব্র ভাঙনের মুখে রয়েছে। এতে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি হারাতে বসছে এলাকায় বসবাসরত মানুষগুলো।
ভাঙনের মুখোমুখি এসে জিও ব্যাগ দিতে দেখা যায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষকে। কিছু দিন আগে জিও ব্যাগ দিলেও সাগরের ঢেউয়ে তা তলিয়ে যায়। দ্রুত বেড়িবাঁধ সংস্কার না হলে বন্যা বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হবে পুরো জুঁইদন্ডী ইউনিয়ন। এমনটা ধারণা করছে স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ভাঙ্গনকৃত বেড়িবাঁধ এলাকাগুলোতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহিদ জানান, রায়পুর ইউনিয়নের উপকূলীয় এলাকায় ৫ হাজার ১৭৫ মিটার বেড়িবাঁধে ব্লক বসানোর জন্য নতুন করে ৩৯৯ কোটি টাকার প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারনে জরুরি মেরামতেরও সম্ভব হচ্ছে না, এখন ঠিকাদাররা কোথাও কাজ করছেনা, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ভাঙন ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, আনোয়ারা উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে ২০১৮ সালে সরকার ৩২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের উন্নয়নে ৫৭৭ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শুরু করে। এতে রায়পুর ইউনিয়নের ১৩ কিলোমিটারের মধ্যে ৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধে পাথর বসানো হয়। বাকি ৫ কিলোমিটার এলাকায় মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এই ৫ কিলোমিটারের মধ্যে গহিরা সাগর উপকূলে ২৭৭৫ মিটার ও সরেঙ্গা শঙ্খ নদীর ২৪০০ মিটার রয়েছে। এই ৫ কিলোমিটারের জন্য নতুন করে ৩০০ কোটি টাকার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।