পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র এলাকায় ভেজাল গাওয়া ঘি ও চায়ের পাতা বিক্রি করে আসছিল। অবশেষে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় ভেজাল ঘি ও চা পাতা বিক্রির সময় স্থানীয়দের সহায়তায় দুইজনকে হাতেনাতে আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল (১৬ ফেব্রুয়ারি) সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার আমানউল্লাহ্ পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় জনতা দুই ব্যক্তিকে মালামালসহ আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সাতকানিয়া এওচিয়া এলাকার মৃত আহম্মদ হোসেন চৌধুরীর পুত্র সাহেদুল আলম চৌধুরী (৪৭), যিনি নিজেকে আরসি ফুড কোম্পানির জিএম দাবি করেছেন, এবং সীতাকুণ্ড লতিফপুর এলাকার মৃত আবদুল ওদুদের পুত্র মো. আব্দুল বাতেন (৪৮), যিনি কোম্পানির এজিএম পরিচয় দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসামিদের সরবরাহকৃত ভেজাল পণ্য বাজারজাত করার ফলে আমানউল্লাহ পাড়া এলাকায় নাছির নামের এক ডিলারের আর্থিক ও ব্যবসায়িক সুনামের ক্ষতি হয়। তার গুদামে এখনও বিপুল পরিমাণ আনন্দ গাওয়া ঘি ও লাইক চায়ের পাতা মজুত রয়েছে। ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়ে নিরুপায় হয়ে তিনি আসামিদের ডেকে আরও পণ্য আনানোর কথা বলেন। আসামিরা মালামাল নিয়ে আমানউল্লাহ পাড়ায় এলে স্থানীয়রা তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভেজাল পণ্যের বৈধ কাগজপত্র দেখতে চাইলে আসামিরা তা দেখাতে ব্যর্থ হন। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে ঘি ও চায়ের পাতা পরীক্ষা করে ভেজালের প্রমাণ পাওয়া যায়। পণ্যগুলো জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়।
মামলার বাদী বোয়ালখালী উপজেলার মো. ইসহাক চৌধুরীর পুত্র এমদাদ হোসাইন সাগর চৌধুরী (২৯)। তিনি স্টার ফুড, শাহী ফুড এবং আরসি ফুড কোম্পানীর আনন্দ গাওয়া ঘি ও লাইক চায়ের পাতার ডিস্ট্রিবিউটর।
এমদাদ হোসাইন সাগর চৌধুরী জানান, সাহেদুল আলম ও আব্দুল বাতেন গত বছরের ১৭ অক্টোবর বোয়ালখালী ফুলতল কালাম মার্কেটে গিয়ে ২ লাখ টাকা মূল্যে আনন্দ গাওয়া ঘি ও লাইক চায়ের পাতা সরবরাহ করেন। কিন্তু এসব পণ্য বাজারজাত করার পর ভোক্তাদের অভিযোগ আসে, ঘি ও চায়ের পাতা ভেজাল। অনেকেই এসব পণ্য সেবন করে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ভেজাল খাদ্যপণ্য বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।