চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় বন্য হাতির আক্রমণে একই রাতে নারীসহ দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২৩) সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের গুয়াপঞ্চক দেয়াং বাজার গুচ্ছগ্রাম বৈরাগ এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— ১নং বৈরাগ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড গুয়াপঞ্চক গ্রামের শাহ আহম্মদ বাড়ির মো. দুলাল (৫০) এবং বৈরাগ ৮ নম্বর ওয়ার্ড খোশাল তালুকদারের বাড়ির মো. আক্তারের স্ত্রী রেহেনা আক্তার (৩৮)।
নিহত দুলালের নিজ জেলা নোয়াখালী হলেও ছোট বেলা থেকেই গুয়াপঞ্চক গ্রামে বসবাস করে আসছিলেন।তিনি ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার বলে জানা গেছে।সে পেশায় একজন কৃষক।নিহত নারীর পরিবারে স্বামী, দুই ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাত নয়টার দিকে কয়েকটি হাতি গুয়াপঞ্চক এলাকায় নেমে পড়ে।হাতিগুলো চলাচলের রাস্তা না পেয়ে আক্রমণাত্মক হয়ে লোকজনকে তাড়া করে। ওইসময় একটি হাতি ওই কৃষককে পেয়ে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আচাঁড় দেন।পরে সেখান থেকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ওই কৃষকের মৃত্যু হয়।
সেখান থেকে পরে বন্য হাতিগুলো গুয়াপঞ্চক হয়ে বৈরাগ খোশাল তালুকদার বাড়ি এলাকায় গেলে রাত ১টার দিকে ওই নারী ঘর থেকে বের হলে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আচাঁড় দিলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।এ ঘটনা দেখে তাঁর ভাসরের স্ত্রী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের ফরেস্টার পটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. নূরে আলম হাফিজ জানান,পাহাড়ে বন বিভাগের কোনো ইউনিট নেই।হাতি তাড়ানোর জন্য এলাকা ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম (ERT) কাজ করে থাকে এবং এর একটা বাজেট বরাদ্দ অপেক্ষামান এবং পাশাপাশি কেইপিজেড দেয়াং পাহাড় এলাকার বন বিভাগ এর একটি ইউনিট স্থাপন করার জন্য একটি চিঠি পাঠিয়েছি।আশাকরি ১৫ দিনের মধ্যে আমরা একটা ফয়সালা পাবো।
দীর্ঘ বছর যাবত বরাবরই বন্য হাতির আক্রমণে আনোয়ারা কর্ণফুলী দুই উপজেলার গ্রামের মানুষ চরম আতঙ্কে আছেন।রাত জেগে পাহারা দিয়েও বাঁশি,ঢাকঢোল পিটিয়ে, পটকা ও মশাল জ্বালিয়ে ঠেকানো যাচ্ছে না বন্যহাতির তাণ্ডব।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের আনোয়ারা এবং কর্ণফুলী উপজেলায় প্রতিনিয়ত হাতির উপদ্রব দেখা যায়।বিশেষ করে রাতে এবং ভোরে বন্য হাতিরপাল লোকালয়ে এসে খাবারের জন্য বিভিন্ন গ্রামে হানা দেয়।এ যাবত বন্যহাতির আক্রমণ প্রায় ১৫ জন ব্যক্তি মারা যান এবং আহত হয়েছে প্রায় শতাধিক।