ksrm-ads

১৫ অক্টোবর ২০২৪

ksrm-ads

আফগানিস্তান কি সত্যিই ম্যাচ পাতিয়েছে?

বাংলাধারা ডেস্ক »

আফগানিস্তান-পাকিস্তানের ম্যাচের লাগাম তখন আফগানদের হাতে। কিন্ত ম্যাচে ৮ ওভার বল করে ৪৭ রান দিয়েও আসলেন বল করতে। আর এর খেসারতও দিতে হয়েছে তাকে। এই ওভারে ১৮ রান দিয়ে ম্যাচটিই যেন জিতিয়ে দিলেন পাকিস্তানকে।

আর এমন বোকামি করে রীতিমত সমর্থক এবং ক্রিকেট বিশ্লেষকদের রোষানলে পড়েছেন আফগান অধিনায়ক। সমর্থকরা তো সরাসরি বলেই বসেছেন ম্যাচ পাতিয়েছে গুলবাদিন। সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক টুইটারে তো গুলাবদিনকে ‘বলদ’ বলেও আখ্যায়িত করেছেন।

হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে শনিবার (২৯ জুন) ৩ উইকেটের ব্যবধানে হারে আফগানিস্তান। যে হারে দলকে প্রায় একাই ডুবিয়েছেন গুলবাদিন। ব্যাট হাতে তেমন কিছু না করার পর, বল হাতে তার খরুচে বোলিংয়েই হার নিশ্চিত হয় আফগানিস্তানের। দারুণ বল করছেন রশিদ-মুজিব আর শিনওয়ারি। তিন বোলার মিলিয়ে বাকি আছে ৫ ওভার। আর তখনও পাকিস্তানের জিততে দরকার ৪ ওভারে ৪৬ রান হাতে আছে চার উইকেট। আর পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা পেরে উঠছেন না আফগান স্পিনারদের সামলাতে। সবাই ধরেই নিয়েছিল শেষ চার ওভারে রশিদ-মুজিবরাই বল করবেন।

কিন্তু একি? অবাক করা কান্ড করে বসলেন আফগান অধিনায়ক গুলবাদিন। ম্যাচ পরবর্তী প্রতিবেদনে ফক্স স্পোর্টস বলে, গুলবাদিন নাইব পাকিস্তানকে ম্যাচটি উপহার দিয়েছেন। ফক্স তাদের প্রতিবেদনে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে করা ক্রিকেটপ্রেমীদের বার্তাগুলোও তুলে ধরে। এছাড়া দ্য টেলিগ্রাফও তাদের প্রতিবেদনে এই বিষয়টি তুলে আনে।

সবগুলো প্রতিবেদনেই বলা হয়, নবী-রশিদ-মুজিবরা যখন ম্যাচের লাগাম নিজেদের দিকে নিয়ে আসেন, ঠিক তখন গুলবাদিন ৪৬তম ওভারে বল করতে এসে ৬ বলে ১৮ রান দিয়ে পুরো ম্যাচটি জিততে পাকিস্তানকে প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করে। মুজিবুর রহমান ৩৪, মোহাম্মাদ নবী ২৩, রশিদ খান ৫০ এবং সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ৩২ রান দিয়েছেন। সেখানে গুলবাদিন মাত্র ৯.৩ ওভার বল করে ৭৩ রান দিয়েছেন। আর এখানেই মূলত ম্যাচ তাদের হাতছাড়া হয়েছে।

এমন ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় যারপরনাই হতাশ আফগান সমর্থকরা। হতাশ আপামত ক্রিকেট পাগল মানুষও। ম্যাচ শেষে তাই খলনায়ক গুলবাদিনকে নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। তাকে সমালোচনার সাগরে ভাসিয়ে দেন ফেসবুক-টুইটারসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। ভারতের সাবেক ক্রিকেটার এবং ক্রিকেট বিশ্লেষক আকাশ চোপড়া টুইট করেছেন, ‘আম্পায়ারিং ও নেতৃত্বের মান আজ প্রশ্নের মুখে…।’

আম্পায়ারিং নিয়ে প্রশ্ন হয়তো উঠত না যদি আফগানিস্তানের হাতে রিভিউ থাকত। আর এই রিভিউ না থাকার পেছনে অবদানও গুলবদিনের। ৫ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান তখন আরও একটি ম্যাচ হারের মুখে। ম্যাচসেরা ওয়াসিম তখন মাত্র ১ রানে উইকেটে আছে। এমন অবস্থায় রশিদের একটি বল প্যাডে লেগেছিল। আফগানদের জোরালো আবেদনেও নড়লেন না আম্পায়ার উইলসন। রিভিউ না থাকায় আফগানরাও সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেনি।

পরে দেখা গেল, ওটা নিশ্চিত আউট ছিল। রিভিউ না থাকার কারণ, বাবর আজম উইকেটে থাকতে আফগান বোলার আর উইকেটরক্ষক তেমন একটা আগ্রহ না দেখালেও গোঁয়ার্তুমি করে রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন গুলবদিন। কেবল বাজে বোলিং করেই ক্ষান্ত হয়নি আফগান অধিনায়ক। ৫০তম ওভারে পাকিস্তানের জয়ের জন্য যখন শেষ ৬ বলে ৬ রান দরকার, তখনও সে একটি সহজ রান আউটের সুযোগ মিস করেন। আর এই মিস থেকে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা ২ রান সংগ্রহ করেন। ম্যাচ শেষে অবশ্য নিজের সাফাই গেয়েছেন গুলবাদিন। এই অলরাউন্ডার আফগান সমর্থকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশ্বকাপের দুই মাস আগে বিতর্কিতভাবে আফগান বোর্ডের নির্বাচিত এই অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি, তারা সবাইকে আক্রমণ করে খেলেনি। প্রত্যেক দলেরই বিশেষ পরিকল্পনা থাকে। আমি ৪৬তম ওভারকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধরে নিয়ে বল করেছিলাম। কিন্তু ১৮ রান দিয়ে দিয়েছি। এটা মোটেও ভালো হয়নি।’ তবে নাইব যতই নিজের পক্ষে সাফাই গাক না কেন এতো সহজেই তাকে ক্ষমা করছেন না ক্রিকেটপ্রেমীরা। কেননা তার বিতর্কিত পারফরম্যান্সই বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ইংল্যান্ডের সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে যোগ করেছে নতুন মাত্রা।

সেই সঙ্গে বিশ্বকাপের এবারের আসরকেও করে তুলেছে আরও বেশি আলোচিত-সমালোচিত। এদিকে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ শুরুর আগে আইসিসি ফিক্সিং রোধে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে। এ জন্য বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ১০ দলের প্রতিটির সঙ্গে একজন করে দুর্নীতি দমন কর্মকর্তা রাখার ব্যবস্থা করে। কিন্তু ফিক্সিংয়ের অভিযোগ শেষপর্যন্ত চলেই আসে। আর সেটা আফগানিস্তান-পাকিস্তান ম্যাচ দিয়ে। চলতি বিশ্বকাপে ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছ থেকে পাওয়া এটাই প্রথম কোনো ফিক্সিংয়ের অভিযোগ।

বাংলাধারা/এফএস/এমআর/এসবি

আরও পড়ুন