সম্পাদকীয় »
আজ ১ জানুয়ারি। ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন। ২০২০ সালের শেষ সুর্যের রক্তিম আভা মিলিয়ে গেল, শীতের ঘন কুয়াশা ভেদ করে পূর্ব আকাশে উদিত ভোরের সূর্য আলো ছড়াবে দিগন্তজুড়ে। নতুন বছরের অপার সম্ভাবনা নিয়ে উদীত এ সূর্যের আলোতে আলোকিত হবে একটি নতুন দিন, একটি নতুন বছর। পুরোনো জরা-গ্লানি-হতাশাকে পেছনে ফেলে আবারও নতুন সম্ভাবনা আর স্বপ্নের প্রতীক্ষায় প্রস্তত বিশ্ববাসী, স্বাগতম ইংরেজি নববর্ষ ২০২১, শুভ হউক তোমার আগমন।
বাংলাদেশের মানুষ অর্থাৎ বাঙালি অন্যদের তুলনায় এই ভেবে অনায়াসে গর্ব করতে পারে যে, তাদের একটি নিজস্ব বর্ণমালা এবং একটি বর্ষপঞ্জি রয়েছে, যা বিশ্বের অনেক বিখ্যাত জাতিরও নেই। নিজস্ব বর্ষপঞ্জি থাকার কারণে বাঙালি বছরে দু’বার বর্ষবরণ করে, তার একটি পয়লা বৈশাখ। আরেকটা হলো ১লা জানুয়ারি। বাঙালি একবার বলে শুভ নববর্ষ। আরেকবার বলে হ্যাপি নিউ ইয়ার।
বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথায়, ‘বন্ধু হও, শত্রু হও, যেখানে যে কেহ রও,/ ক্ষমা করো আজিকার মতো,/পুরাতন বর্ষের সাথে/পুরাতন অপরাধ যত।’ আমাদেরও প্রত্যাশা পুরনো বছরের যত ব্যর্থতা-বেদনা, হতাশা-নিরাশা এমনি করে ক্ষয় হোক আবর্ত আঘাতে।
কবি সুফিয়া কামাল লিখেছেন, ‘ অনন্ত সূর্যাস্ত-অন্তে আজিকার সূর্যাস্তের কালে/সুন্দর দক্ষিণ হস্তে পশ্চিমের দিকপ্রান্ত-ভালে/দক্ষিণা দানিয়া গেল, বিচিত্র রঙের তুলি তার/বুঝি আজি দিনশেষে নিঃশেষে সে করিয়া উজাড়/দানের আনন্দ গেল শেষ করি মহাসমারোহে।
২০২০ সালজুড়েই সারা পৃথিবীর মানুষের মধ্যে ছিল আতংক ভয় শংকা অস্থিরতা, বছরের শেষেও চোখ রাঙাচ্ছে করোনা (Corona-virus)। এই মরণ ভাইরাসের নতুন মিউটেশন নিয়ে ফের আতঙ্কে ভুগছেন মানুষজন। এর মাঝেই নববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তবে জারি থাকছে একাধিক বিধিনিষেধ। পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন এবার প্রকাশ্যে কোন অনুষ্ঠান করা যাবে না।
পুরনো বছরের ভুলগুলো শুধরে সমস্ত ইতিহাস থেকে ভালো ভালো শিক্ষা গ্রহণ এবং অতীতের সফলতা-ব্যর্থতাকে পুনর্মূল্যায়নের মাধ্যমে সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের লক্ষ্যে আমাদের সামনের দিকে দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে যেতে হবে।
মুছে যাক বিশ্ব জুড়ে ব্যধি৷ ফের শুরু হোক সুস্থতার কোলাহল৷ কালো গহ্বরে ঢুকে যাক মরণ ভাইরাস করোনা৷ গোটা বিশ্ব চোখ মেলুক এক নতুন সকালে৷ নতুন বছরের সূর্যাদয়ের সঙ্গে এই প্রার্থনা তো আমরা করতেই পারি৷ চাইতেই তো পারি নিজের, পরিবারের, প্রতিবেশী, শহর পেরিয়ে গ্রাম, দেশ পেরিয়ে গোটা বিশ্বের সুস্থতা৷
হোয়াটসঅ্যাপ থেকে ফেসবুক, ট্যুইটার, ইনস্টাগ্রামে সকাল সকালই ছড়িয়ে পড়ুক না হয়, নতুন বছরের পজিটিভিটি৷ নিজেদের ভালো থাকা ও পৃথিবীকে ভালো রাখার বার্তা৷ এভাবেই ছড়িয়ে পড়ুক এক আশার আলো৷ একদিন ঝড় থামবে, বিপর্যয় কাটিয়ে ‘সুস্থ’ হবে নতুন বছর৷ সুস্থ হবে বিশ্ব৷
সম্মানিত পাঠক, লেখক, শুভানুধ্যায়ী, সাংবাদিক ও বিজ্ঞাপনদাতা সবাইকে জানাই ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা।
বাংলাধারা/এফএস/এআর