পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে পাহাড় কাটার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অনেকেই তা মানছেন না। পরিবেশ অধিদফতরের কঠোর নজরদারিতেও থামানো যাচ্ছে না ওই এলাকায় পাহাড় কাটা। বান্দরবানের লামা-ফাইতং সড়কের পাহাড় কেটে কটেজ নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে লামা গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াই চিং মারমা বিরুদ্ধে। পরিবেশ ও প্রশাসনের কোনো অনুমোদন ছাড়াই প্রকাশ্যে পাহাড় কাটলেও তার বিরুদ্ধে এখনো নেওয়া হয়নি কোনো আইনি ব্যবস্থা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত মাসের ১৯ তারিখ থেকে রিসোর্ট তৈরী করতে পাহাড় কাটা শুরু করেছেন এ চেয়ারম্যান। পাহাড়ে কটেজ কিংবা রিসোর্ট তৈরী করতে এরই মধ্যে কিছু কিছু উচুঁ পাহাড়কে ড্রেসিং করে সমতল করেছেন তিনি।
লামা উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াই চিং মারমা সাথে। পাহাড় কাটার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি পাহাড় কাটেনি’ উচুঁ পাহাড়কে লেভেল করার জন্য সমতল করা হয়েছে। কয়েকদশক আগে সেখানে রাস্তাও ছিল। সেখানে পরিদর্শনে এসেছে লামা উপজেলার ইউএনও।
অভিযোগ আছে, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার প্রভাব খাটিয়ে পাহাড়ের সৌন্দর্য ধ্বংস করে এমন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। চারিদিকে সবুজ অরণ্যের বনাঞ্চল ধ্বসের পর উচুঁ পাহাড়কে কেটে সমতল করে চলেছেন। এদিকে পরিবেশ সংরণ আইন, ১৯৯৫ ধারা ৬ এর (খ) স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কতৃর্ক সরকারী বা আধা- সরকারী বা স্বায়ত্ত শাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন করা যাবে না। যা সংশ্লিষ্ট আইনে শাস্তি যোগ্য অপরাধ। পরিবেশ আইন ও উচ্চ আদালতের এমন নির্দেশনা থাকার পরও থেমে নেই পাহাড় কাটা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লামা-ফাইতং সড়কের ৮ কিলোমিটার নামক স্থানে সড়ক ঘেষে একটি বিশাল পাহাড়। সে পাহাড়ের উপর কটেজ নির্মাণের প্রস্তুতির নিচ্ছেন ইউপি চেয়ারম্যান। বড় যন্ত্রের সাহায্যে চারিপাশে পাহাড় কেটে মাঠ তৈরী করা হয়েছে। সেখানে উচুঁ পাহাড় কেটে সমতল করে স্থাপন করেছেন একটি বাশে বেড়া ঘর। পাহাড়কে সমানতলে পরিণত করতে প্রতিদিনই কাজ করছেন আট থেকে নয়জন শ্রমিক। প্রায় কয়েকদিন যাবত চেয়ারম্যানের নির্দেশনার অনুযায়ী পাহাড় কেটে চলেছেন শ্রমিকরা। এখনো সেটি চলমান।
শ্রমিকরা জানিয়েছেন, গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াই চিং মারমা নির্দেশনা অনুযায়ী তারা কাজ করে যাচ্ছেন। সেখানে পাহাড় কেটে কটেজ স্থাপন করা হবে।
এবিষয়ে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ফখর উদ্দিন জানান, সরেজমিনে গিয়ে সেটি পরিদর্শন করা হবে। পাহাড় কাটার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট মামলা করা হবে বলে।