ইজিবাইকের (টমটম) ছাদে তুলে এক শিশুকে ফিল্মী স্টাইলে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ ঘুরে বেড়াচ্ছে। কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের মরিচ্যাবাজার এলাকায় সংগঠিত এ ঘটনার ভিডিওটি আইনশৃংখলা বাহিনীর নজরে আনার পর অভিযুক্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১১ জুন) ভোরে মরিচ্যার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় নিয়মিত মামলাও রুজু হয়েছে বলে জানিয়েছেন উখিয়া থানার ওসি মো. শামীম হোসেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন, হলদিয়াপালং ইউনিয়নের পাগলিরবিল এলাকার মৃত কাশেম আলীর ছেলে ফরিদুল আলম, আবুল কালামের ছেলে শফিউল করিম ও পূর্ব মরিচ্যা কাঠালিয়া এলাকার লিয়াকত আলীর ছেলে খাইরুল ইসলাম।
ওসি শামীম হোসেন বলেন, গত ৯ জুন দুপুরে উখিয়ার হলদিয়াপালং ১ নম্বর ওয়ার্ড মরিচ্যা বাজার পাগলিরবিল রাস্তার মাথা এলাকায় চোর সন্দেহে শিশুটিকে অমানবিক নির্যাতন করে অভিযুক্তরা। আট বছর বয়সী শিশুটিকে হাত-পা বেঁধে ইজিবাইকের (টমটম) ছাদে তুলে ফিল্মী স্টাইলে শাস্তি দেয়া হয়। শিশুটিকে নির্যাতনের এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ওসি আরো জানান, পরে বিষয়টি উখিয়া থানা পুলিশের নজরে আসলে এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার গ্রেপ্তার করা হয়। ভুক্তভোগীর বাবা আব্দুল শুক্কুর বাদী হয়ে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
শিশুটির বাবা আব্দুল শুক্কুর বলেন, ৩-৪ জন দুর্বৃত্ত মিলে সন্দেহজনকভাবে চোর আখ্যা দিয়ে আমার ছেলেকে লোহার রড ও গাছের ভাটাম (চিরাই কাঠ) দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম করে। ফরিদুল আলমের মারধরের আঘাতে আমার ছেলের বাম পায়ে মারাত্মক জখম হয়। আমি ছেলেকে রক্ষা করতে গেলে আমাকেও মারধরের চেষ্টা করে এবং হুমকি দেয় তারা। এসময় আশপাশের লোকজন শিশু নির্যাতনের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। নির্যাতনের শিকার আমার ছেলে তার মায়ের সাথে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) মো. রাসেল জানান, শিশুকে নির্যাতনের বিষয়টি পুলিশের নজরে আসা মাত্রই গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। শিশুটির পিতা এজাহার দিলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করে অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তাদের সহযোগীদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো বলেন, শিশুটিকে মারধরের ঘটনা অনেকেই ভিডিও করতে এবং প্রত্যক্ষ করতে দেখা গেলেও উদ্ধারে কেউ এগিয়ে আসেনি। এমনকি পুলিশকেও কেউ অবগত করেনি। পুলিশ তাদের ধারাবাহিক কাজ হিসাবে ভিডিও নজরে আসার পর তড়িৎ ব্যবস্থা নিয়েছেন। এ ধরনের ঘটনা দেখলে নিজ অবস্থান থেকে প্রতিরোধে এগিয়ে আসা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।