বাংলাধারা প্রতিবেদক»
চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতর থেকে আরও এক কন্টেইনার মদ আটক করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর শাখা। এর আগে শুক্রবার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস হওয়া দুই কন্টেইনার মদ আটক হয় সোনারগাঁও ও নারায়ণগঞ্জ থেকে। এ নিয়ে সর্বমোট দুইদিনে বন্দরের ভেতর ও বাহির থেকে ৩ কন্টেইনার মদ আটক হয়েছে। আর এসবের নেপথ্যে চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং এলাকার সিএন্ডএফ এজেন্ট জাফর আহমেদ।
রোববার (২৪ জুলাই) দুপুরে চীন থেকে বন্দরে টেক্সটার্ড ইয়ার্ড পলিস্টারের মিথ্যা ঘোষণায় আসা মদের চালানটি আটক করা হয়।
কাস্টমস সূত্র থেকে জানা যায়, নিলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের ডং জিন ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডের নামে এই চালানটি আসে। আইপি জালিয়াতি করে এই কন্টেইনার ভর্তি মদ খালাসের চেষ্টা চলছিলো বলে জানায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
তবে কি পরিমাণ মদ সেখানে উদ্ধার করা হয়েছে এবং কি পরিমাণ রাজস্ব জড়িত সেটি এখনো জানা যায় নি। তবে পণ্যচালানটি খালাসের জন্য সিএন্ডএফের দায়িত্বে একই সিএন্ডএফ এজেন্ট চট্টগ্রামের জাফর আহমেদ।
এদিকে গত শুক্রবার (২২ জুলাই) রাতে আইপি জালিয়াতি করে কুমিল্লা ও ঈশ্বরদী ইপিজেডের দুইটি প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে খালাস হওয়া মদের দুইটি বড় চালান আটক করা হয়। চালানকৃত দুইটি গাড়ি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর শাখার সহযোগিতায় সোনারগাঁও ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
কাস্টমসূত্রে জানা যায়, মদ ভর্তি দুইটি কন্টেইনার দুই প্রতিষ্ঠানের নাম অপব্যবহার করে মেশিনারি ও ববিন ঘোষণায় খালাস করা হয়। দুই কন্টেইনার ভর্তি মদ খালাস হয়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বেরিয়ে চলে যায় নারায়ণগঞ্জ ও সোনারগায়ে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম হাউসের কমিশনার ও জয়েন্ট কমিশনার (জেটি) এর সার্বিক তত্ত্ববাধানে এআইআর শাখা, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় শুক্রবার ভোররাতে সোনারগাঁও ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক করা হয়। জালিয়াতি করে দুই কন্টেইনার ভর্তি মদ খালাস করে ২৪ কোটি ৭০ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
গত ২০ জুলাই কুমিল্লার ইপিজেডের হেশি টাইগার কোম্পানি লিমিটেডের নামে চীন থেকেটেক্সার্ড ইয়ান অব পলিস্টার ঘোষণায় আমদানি হওয়া ১৯ হাজার ৬৫০ কেজি এক কন্টেইনার ভর্তি মদ খালাসের জন্য বিল এন্ট্রি দাখিল করে চট্টগ্রামের ডবলমুরিংয়ের ৬৯৯ কেবি দোভাষ লেনের জাফর আহমেদ।
একই দিন চীন থেকে আসা ঈশ্বরদী ইপিজেডের বিএইচকে টেক্সটাইল লিমিটেডের নামে রোভিং মেশিন ববিন ঘোষণায় ২০ হাজার ৭৫০ কেজি ওজনের আরো এক কন্টেইনার ভর্তি মদ খালাসের জন্য একই সিএন্ডএফ এজেন্ট বিল এন্ট্রি দাখিল করে।
২০ জুলাই পণ্যগুলোর শুল্কায়ন সম্পন্ন হলেও শুক্রবার রাত ৯টায় পণ্যগুলো মিথ্যা ঘোষণায় খালাস হওয়ার খবর জানতে পারে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের এআইআর শাখা। এরপর অভিযান পরিচালনা করে সেগুলো র্যাবের সহযোগিতায় আটক করা হয়।
১ দিনের ব্যবধানে ৩ কন্টেইনার ভর্তি আটকের ব্যাপারে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর শাখার ডেপুটি কমিশনার সাইফুল হক বাংলাধারাকে জানান, রবিবার দুপুরে বন্দরে টেক্সটার্ড ইয়ার্ড পলিস্টার ঘোষণায় আসা আরো এক কন্টেইনার মদ জব্দ করে এআইআর শাখা। বৃষ্টির কারণে ইনভেন্ট্রি না হওয়ায় এখনো কি পরিমাণ রয়েছে সেটি বলা যাচ্ছে না।
এছাড়া তিনি জানান, এর আগে আটককৃত দুই কন্টেইনার মদ চট্টগ্রামে ফেরত আনা হয়েছে। যেখানে ২৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা রাজস্ব ফাকিঁ দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়।
কাস্টমসের এই কর্মকর্তা বলেন, ১ দিনের ব্যবধানে জব্দকৃত ৩ কন্টেইনার চাইনিজ মদ মূলত আইপি জালিয়াতি করে খালাসের মাধ্যমে বাজারজাত করার চেষ্টা করা হয়। এই বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে কাস্টমস আইন ও ফৌজাদারি আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাধারা/এসএআর