১৪ জুলাই ২০২৫

এশিয়ার প্রবেশদ্বার হতে পারে চট্টগ্রাম সুমদ্র বন্দর, বলছে এডিবি সমীক্ষা

বাংলাধারা  প্রতিবেদক  »

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সমীক্ষায় বলা হয়েছে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর হবে এশিয়ার প্রবেশদ্বার। বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) প্রকাশিত সংস্থাটির সমীক্ষায় সুপারিশ করা হয়েছে তৃতীয় দেশ কার্গোকে ট্রান্সশিপমেন্ট হাব হিসাবে চট্টগ্রাম বন্দরের সর্ম্পূণ সম্ভাবনা উপলব্ধি করতে এবং বন্দরকে গেটওয়ে বন্দর হিসাবে সহায়তা করতে সহযোগিতা করবে।

বর্তমানে বিশ্বে চট্টগ্রাম সমুন্দ্র বন্দরের অবস্থান ৫৮তম স্থানে। প্রতি বছর বাড়ছে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং এর সংখ্যা। বিগত অর্থ বছরে রেকর্ড সংখ্যক হ্যান্ডেলিং বৃদ্ধি পেয়েছে। মাতারবাড়ী প্রকল্পের কাজ শেষ এই সমুদ্র বন্দরটির সক্ষমতা আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের জন্য ট্রান্সমিশন হাব হিসাবে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করা শীর্ষক গবেষণায় বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরটি ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে আগরতলা সংযোগকারী রুট হিসাবে ব্যয় এবং কার্যকর হবে। শিলিগুড়ি করিডোরের তুলনায় ব্যয় সাশ্রয়ী। শিলিগুড়ি করিডোর হয়ে কলকাতা বন্দর থেকে আগরতলা পর্যন্ত সড়কপথটি প্রায় ১৫৭০ কিলোমিটার যার পরিবহণ ৮-১০ দিনের প্রয়োজন। তাছাড়া এর জন্য প্রয়োজন প্রায় ৬৩০০ থেকে ৭০০০ কোটি টাকা দরকার।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ট্রান্সশিপমেন্ট রুটটি ছোট এবং সমুদ্রের দূরত্ব প্রায় ৩৬০ নটিক্যাল মাইল বা ৫০ কিলোমিটার।কলকাতা থেকে চট্টগ্রাম বন্দর এবং আখাউড়া হয়ে আগরতলা পর্যন্ত প্রায় ২৫০ কিলোমিটার অভ্যন্তরের অভ্যন্তরীণ দূরত্ব এবং ব্যয় ৫০০০ থেকে ৫৮০০ ভারতীয় ট্রান্সশিপমেন্ট বিকল্পটির প্রতি টন ৮ শতাংশ থেকে ২০৯ শতাংশ।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সমীক্ষায় আরো বলা হয়েছে,সাবরুম-রামগড়,চট্টগ্রাম রুটটি খোলার ফলে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাথে চট্টগ্রামের দূরত্ব আরো হ্রাস পাবে।যার ফলে পরিবহণ খাতে ব্যয়ের পরিমাণ ও অনেক কমে আসবে।প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়,এটি বাংলাদেশ এবং ভারত সরকারকে পরিবহণ সংযোগ এবং সীমান্ত অবকাঠামো সম্পর্কিত বিভিন্ন হস্তক্ষেপ চিহ্নিতকরণ এবং প্রয়োগ করে এই রুটগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার একটি সুযোগ উপস্থাপন করে।

গবেষণায় কিছু বুনিয়াদি বিকাশের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিলো যেখানে বলা হয়েছিলো বিদ্যমান বন্দর জঞ্জালটি স্বাচ্ছন্দ্যে চট্টগ্রাম বন্দর নতুন বার্থের ব্যাকআপ এবং অবকাঠামো নিমার্ণের সুযোগ সহ পূর্ন সম্ভাবনা ক্যাপচার করতে পারে।চট্টগ্রাম বন্দরে গড় জাহাজের বার্থ সময় বেশি,প্রায় চার দিন।ইয়ার্ড স্টোরেজ সক্ষমতা সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলি বন্দরে পাত্র গড় থাকার সময়কে প্রায় ১০ দিন বাড়িয়ে তোলে।তাছাড়া সীমান্তের ট্রান্সপিশমেন্ট সহজতর করার জন্য শুল্কের অনুশীলনের আধুনিকীকরণকে ত্বরান্বিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সমীক্ষা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে,মূল স্থলবন্দগুলোতে সুবিধাসমূহের সাথে চিহ্নিত এবং র‌্যাটো যোগাযোগ বন্দরে ডিকনজেশন উদ্যোগগুলি আনহাইন্ডার্ড কার্গো চলাচলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।এছাড়া ভারত বাংলাদেশের মধ্যে ৩৮ টি কার্যকরী স্থল শুল্ক স্টেশন (এলসিএস) রয়েছে,যার মধ্যে দুটি এনইআর এ বিজ্ঞপ্তিপ্রাপÍ ২৪ টি (এলসিএস বা আইসিপি) সহ সমন্বিত চেকপোষ্ট (আইসিপি) রয়েছে।এমন একাধিক রুট হয়েছে যেগুলি রাস্তা,রেলপথ এবং নৌথের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরে এনইআরের বড় বড় অর্থনৈতিক কøাস্টারগুলোকে সংযুক্ত করতে সম্ভাব্যন করিডোরস হিসাবে আবির্ভূত হতে পারে।

চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষ বিভিন্ন গ্রিনফিল্ড এবং ব্রাউনফিল্ড টার্মিনাল সম্প্রসারণ যেমন বে কন্টেইনার টার্মিনাল,মিরসরাই টার্মিনাল,মাতারবাড়ি টার্মিনাল এবং কর্ণফূলি কন্টেইনার টার্মিনাল পরিকল্পনা করেছে যা ধারক হ্যান্ডেলিং ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে।বন্দরটির সামগ্রিক উৎপাদনশীলতা উন্নয়নের জন্য সক্ষমতা সম্প্রসারণ পরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করা দরকার যা দীর্ঘ মেয়াদে এনইআরকে ট্রান্সশিপমেন্ট বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।বাংলাদেশ,ভূটান,ভারত ও নেপাল মোটর যানবাহন চুক্তি বাস্তবায়ন সহ চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে এনইআর পণ্যসম্ভারের ট্রান্সশিপমেন্ট সহজতর করার জন্য ভারত ও বাংলাদেশ সরকারকে বিভিন্ন ব্যবধানের সমাধান করতে হবে।

বাংলাধারা/এফএস/এআর

আরও পড়ুন