ঋণ খেলাপী কাণ্ডে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জনতা ব্যাংক বকেয়া ঋণের টাকা আদায়ে আবারও নিলামে তুলেছে এস আলমের সম্পত্তি । এবার নিলামে তোলা হচ্ছে এস আলম গ্রুপের কোম্পানি এস আলম সুগার রিফাইন ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের দুই হাজার ৯৭১ শতাংশ জমি। এস আলম সুগার রিফাইন ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের কাছে ব্যাংকটির পাওনা এক হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। চট্টগ্রামের সাধারণ বীমা করপোরেট শাখায় এই ঋণ রয়েছে।
জানা গেছে, জনতা ব্যাংক থেকে নেওয়া এস আলম গ্রুপের ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণের প্রায় পুরোটাই খেলাপি হয়ে গেছে। ফলে প্রতিটি ঋণের বিপরীতে যে জমি বন্ধক দেওয়া আছে, তা একের পর এক নিলামে তুলছে জনতা ব্যাংক।
জনতা ব্যাংকের চট্টগ্রামের সাধারণ বীমা ভবন করপোরেট শাখা থেকে এই ঋণ নেওয়া হয়। সে শাখায়ই নিলাম ডাকা হয়। সেই ঋণের দায়ে এই জমি নিলামের তোলার বিষয়টি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে জনতা ব্যাংক।
ব্যাংকিং আইন অনুসারে প্রথমে জমি নিলামে তোলা হবে, তা না হলে অন্য প্রক্রিয়ায় এই অর্থ তুলে নেওয়া হবে।
জনতা ব্যাংক সূত্রে জানায়, এস আলম গ্রুপ ২০০৪ সাল থেকে জনতা ব্যাংকের গ্রাহক। ব্যাংকটির চট্টগ্রামের সাধারণ বীমা ভবন করপোরেট শাখার দেওয়া ঋণের ৮০ শতাংশের বেশি নিয়েছে গ্রুপটি।
এসব ঋণের বিপরীতে যে জমি ও স্থাপনা বন্ধক দেওয়া আছে তা বিক্রি করেও টাকা তুলতে পারবে না জনতা ব্যাংক। ১০ হাজার ১০০ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে ব্যাংকটিতে বন্ধক আছে দুই হাজার ৭৪৯ কোটি টাকার জমি ও স্থাপনা।
জানা যায়, এস আলম গ্রুপ ও এর সংশ্লিষ্টরা জনতা ব্যাংকের সাধারণ বীমা শাখা থেকে ১৪ বছরে প্রায় ৯ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার এক বছর পর ২০১০ সাল থেকে এভাবে ঋণ নেওয়া শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।
হাসিনা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক— এ সাতটি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ছিল এস আলম গ্রুপের কাছে।
এসব ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে এস আলম গ্রুপ অন্তত দেড় লাখ কোটি টাকা বের করে তার বেশিরভাগই পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।