চট্টগ্রামের বিতর্কিত ব্যাবসায়ী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ৩৬৮ কোটি টাকা মূল্যের ৫৮ একর জমি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে বেশির ভাগ জমি রয়েছে চট্টগ্রাম জেলায়।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারী) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষ থেকে এসব জমি ক্রোকের আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক মো. আবু সাঈদ।
১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন ২৪টি কোম্পানিতে তাঁদের নামে থাকা ৩২ কোটি ১০ লাখের বেশি শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন ঢাকার আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, এস আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে যে ৫৮ একর জমি রয়েছে, তাঁর বেশির ভাগ জমি চট্টগ্রাম জেলায়। যেসব জমি ক্রোক করতে বলা হয়েছে, এর অনেকগুলো এস আলমের নামে কেনা। পাশাপাশি এসব জমিতে এস আলমের বিভিন্ন কারখানা রয়েছে।
এর আগে এস আলমের যে ২৪টি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো এস আলম ট্যাংক টার্মিনাল লিমিটেড, এস আলম রিফাইন সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এস আলম সুপার এডিবল লিমিটেড, এস আলম সিমেন্ট লিমিটেড, এস আলম স্টিলস লিমিটেড, এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্টস লিমিটেড, শাহ আমানত প্রাকৃতিক গ্যাস লিমিটেড, এস আলম পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড, এস আলম ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং মিলস লিমিটেড, হাসান আবাসন লিমিটেড, এস আলম ব্রাদার্স লিমিটেড, এস আলম ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড, গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন লিমিটেড, সোনালী কার্গো লজিস্টিকস লিমিটেড, কর্ণফুলী প্রাকৃতিক গ্যাস লিমিটেড, ওশান রিসোর্স লিমিটেড, এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড, মেরিন ইম্পায়ার লিমিটেড, এস আলম প্রপার্টিজ লিমিটেড, মডার্ন প্রপার্টিজ লিমিটেড, এস আলম লাক্সারি চেয়ার কোচ সার্ভিসেস লিমিটেড, ফাতেহাবাদ ফার্ম লিমিটেড, এস আলম কোল্ড স্টিলস লিমিটেড এবং এস আলম সয়াসিড এক্সট্রাকশন প্ল্যান্ট লিমিটেড।
এর আগে ১৪ জানুয়ারি মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি, উত্তরা, বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন জায়গায় থাকা জমি, ফ্ল্যাট, প্লট, ভবনসহ ২০০ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের ৬৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করারও আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া গত ১৯ ডিসেম্বর মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ১২৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত।
দুদকের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে আদালতকে বলা হয়, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস, সাইপ্রাস ও অন্যান্য দেশে ১ বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান করছে দুদক। গত ৭ অক্টোবর মোহাম্মদ সাইফুল আলম, তাঁর স্ত্রী, সন্তান, ভাইসহ ১৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।