ksrm-ads

২৫ মার্চ ২০২৫

ksrm-ads

‘কক্সবাজারকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ডে রূপান্তর করছেন প্রধানমন্ত্রী’

সায়ীদ আলমগীর, কক্সবাজার »

পাঁচ বছর পর এক দিনের সফরে বুধবার (৭ ডিসেম্বর) কক্সবাজারে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন সৈকতরে লাবণী পয়েন্টের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আওয়ামীলীগের জনসভায় বক্তব্য দিবেন প্রধানমন্ত্রী। এ জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে মন্তব্য করে, আওয়ামীলীগ নেতারা বলেছেন, ২০১৭ সালে কক্সবাজারকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিশ্রুতি মতে কক্সবাজারে গত ১৪ বছরে সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার ৭২টি উন্নয়ন প্রকল্প দিয়েছে সরকার। এরমাঝে ২৮টি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাস্তবায়নাধীন রয়েছে আরো প্রায় ৪৫টি প্রকল্প। বিএনপি সরকারের আমলে সারা বছরের জন্য বার্ষিক বাজেট ছিল ৬৯-৭০ হাজার কোটি টাকা। সেই হিসেবে বিএনপি আমলের ৪ বছরের বাজেটের বেশি টাকা কক্সবাজারের উন্নয়নে ব্যয় করছে আওয়ামীলীগ সরকার। চলমান প্রকল্পের সিংহভাগ কাজই শেষ হয়েছে। অতীতে আওয়ামীলীগকে কক্সবাজারবাসী তেমন কিছু না দিলেও সরকারের প্রকল্পের কৃতজ্ঞায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করা সবার দায়িত্ব।

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে জনসভা স্থলের পাশে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন দলের আরো নেতারা বলেন, বাস্তবায়িত উন্নয়ন প্রকল্পের পাশাপাশি নতুন করে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সংযুক্তি, কক্সবাজারের সাথে মহেশখালী উপজেলার সংযোগ সেতু ও বাঁকখালী নদীর তলদেশ দিয়ে ট্যানেল নির্মাণের দাবি জানানো হবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে।

সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, কক্সবাজারের মানুষ না চাইতেই প্রধানমন্ত্রী সব কিছু দিয়েছেন। বর্তমানে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, রেল লাইন, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর, মাতারবাড়ীর কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প, সাবরাং এক্সক্লোসিভ ট্যুরিজম জোন, মেরিন ড্রাইভ সড়ক, মেডিকেল কলেজ, সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও ফুটবল স্টেডিয়াম, বিকেএসপি, খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প, শেখ হাসিনা নৌ ঘাটি, হাই-টেক পার্ক, জাতীয় সমুদ্র গবেষনা ইনন্সিটিটিউট, অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে কক্সবাজারে।

তিনি আরো বলেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের সাথে নতুন করে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সংযুক্তিকরণ, কক্সবাজারের সাথে মহেশখালী উপজেলার সংযোগ সেতু ও বাঁকখালী নদীর তলদেশ দিয়ে ট্যানেল নির্মাণ, কুতুবদিয়া মগনামার মধ্যে ফেরি সার্ভিস চালুকরণ, কক্সবাজার পর্যটন গবেষনা ইনস্টিটিউট, চার লেনের মেরিন ড্রাইভ সড়ক, ছয় লেনের কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহসড়ক, কক্সবাজার সিটি কর্পোরেশন, কক্সবাজার সিটি কলেজকে সরকারিকরণের দাবি জানানো হবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে।

আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের এগিয়ে যাওয়া বিএনপি-জামাতসহ স্বাধীনতা বিরোধীদের পছন্দ নয়। তাই দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তারা। আন্দোলনের নামে তারা সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, অরাজগতা সৃষ্টি করে দেশের শান্ত পরিস্থিতি বিনষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, গেল ১৪ বছরে আটবার কক্সবাজার এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। কক্সবাজারের গুরুত্ব উপলব্ধি করে সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। অথচ বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা দেশের বাজেট করেছিল ৬৯ হাজার কোটি টাকা। ভেবে দেখুন বিএনপির আমলে দেশের যত টাকা বাজেট ছিল কক্সবাজার উন্নয়নে তার চেয়ে কতগুণ বরাদ্দ বেশি দিয়েছেন। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে শুধু কক্সবাজারের জনগণ নয়, পুরো দেশের মানুষ সুবিধা পাবে। দুর হবে বেকার সমস্যাও।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, কক্সবাজারের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিই আলাদা। তাই ক্ষমতায় আসার পর বড় বড় মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করছেন এখানে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে লাভবান হবে জাতীয় অর্থনীতি।

আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ২০১৭ সালে একই মাঠে কক্সবাজারকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিশ্রুতির সিংহভাগ কাজই এখন শেষ পর্যায়ে।

কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, দেশকে দারিদ্রতা থেকে মুক্তি দিয়ে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে মর্যাদা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গৃহহীনকে গৃহ, ভূমিহীনকে ভূমি প্রদান করেছেন। এছাড়াও বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, পুষ্টি ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, পঙ্গু ভাতাসহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা ভাতা প্রদান করে সাধারণ মানুষের অন্তর জয় করেছেন। দেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে এক নজর দেখতে উন্মুখ হয়ে আছে।

জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম লাখো মানুষের পদচারনায় মুখোরিত হবে। শুধু জনসভা স্থল নয়, সারা কক্সবাজার শহর হবে জনসমুদ্র।

সংবাদ সম্মেলন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব শাখাওয়াত মুন ও উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার, চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাংসদ জাফর আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালা উদ্দিন আহমেদ সিআইপি, সহ-সভাপতি এথিন রাখাইন, রেজাউল করিম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রণজিত দাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, সাবেক কউক চেয়ারম্যান ফোরকান আহমেদ, পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম, এম এ মনজুরসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন