সায়ীদ আলমগীর, কক্সবাজার »
২৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকাসহ কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান ঢাকায় দুদকের হাতে আটকের পর আবারো আলোচনায় আসে এলএ শাখার দুর্নীতি। প্রশাসনের সুনাম ধরে রাখতে এবার একযোগে ৯ সার্ভেয়ারকে বদলী করা হয়েছে। আগামী ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল হতে অবমুক্ত হয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে এ নয় সার্ভেয়ারকে। অন্যথায় ২৫ জুলাই তাদের স্ট্যান্ড রিলিজ করা হবে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক স্বারকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ সার্ভেয়ার বদলীর সত্যতা স্বীকার করেছেন।
জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্র জানায়, বদলী হওয়া সার্ভেয়ার মো. সাইফুল ইসলামকে ফেনী পরশুরাম উপজেলা ভূমি অফিসে, দুলাল খানকে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই, মো. ইব্রাহিম ফয়সালকে বান্দরবান সদর ভূমি অফিসে, মীর্জা মোহাম্মদ নুরে আলমকে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া আখাউড়া, হযরত আলীকে নোয়াখালী হাতিয়ায়, মো. আব্দুল কাইয়ুমকে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে, মো. শরিফুল ইসলামকে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে, জিয়াউর রহমানকে বান্দবানের আলীকদমে এবং মো. নুর উদ্দিন আলমকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ভূমি অফিসে পদায়ন করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় বিভিন্ন সময় অভিযোগ ছিল। অতিক গ্রেফতার হওয়ার পূর্বেও অনেক সার্ভেয়ার গ্রেফতার হয়েছিল। সবকিছু মিলে জেলা প্রশাসনের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। তাই সুনাম ধরে রাখতে জেলা প্রশাসক নিজেই তাদের বদলী চেয়েছেন।
এদিকে এল শাখায় কাজ করা অনেকে জানিয়েছেন, ১০ থেকে ২০ পারসেন্ট কমিশন ছাড়া এলএ শাখায় কোন কাজ হয় নি। বর্তমানে বদলী হওয়া সার্ভেয়ার অনেকে কাছে আগাম হাতিয়ে নেয়া কমিশনের টাকা রয়েছে । এ অবস্থায় ভোগান্তিতে পড়তে হবে কমিশন দিয়ে চেক আদায়ে চেষ্টা কারি বা কমিশন বাণিজ্যের সাথে জড়িতদের।
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, এলএ শাখার সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠায় তাদের বদলী করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সব সময় সরকারের হয়ে জনকল্যানে কাজ করছে। কিছু অসাধু কর্মকর্তার কারণে প্রশাসনের সুনাম ক্ষুন্ন হতে পারে না।
অন্য একটি সূত্র জানায়, যতবারই অভিযোগ উঠেছে ততবারই সার্ভেয়ারদের বদলি করা হয়েছে, কিন্তু কার কাছে কি পরিমাণ অবৈধ টাকা আছে তা উদ্ধার করা হয়নি৷ এমন বদলি তাদের অনৈতিক ভাবে হাতিয়ে নপয়া টাকা হজমের উত্তম পন্থা বলে মনে করেন তারা। উন্নয়ন প্রকল্পে ভুমি অধিগ্রহণ শুরুর পর কমিশন বাণিজ্যে টাকা হাতানের অভিযোগে যাদের বদলি করা হয়েছে সবার নিজ একাউন্ট, স্বজনদের একাউন্ট বা ব্যবসা বাণিজ্যের তথ্য যোগাড় করে তাদের অনৈতিক আয় বাজেয়াপ্ত করা দরকার বলেও উল্লেখ করেন সূত্রটি।