কক্সবাজার প্রতিনিধি »
কক্সবাজার সদরের পোকখালীর পশ্চিম ইছাখালী থেকে এক গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহটি উদ্ধারের পর এটি হত্যা না আত্মহত্যা এ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মেয়ে পক্ষের লোকজন দাবী করছে মারধরের পর মারাগেলে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়। আর শ্বশুর বাড়ির লোকজন দাবী করছে পারিবারিক কলহের জেরে নিজেই ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে গৃহবধূ।
তবে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে এটি আত্মহত্যা। এরপরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৃতের শ্বাশুড়ি এবং এক ননদকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী রেজাউল করিম পলাতক রয়েছে।
সোমবার (২০ মে) সন্ধ্যায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তবে, বিকাল ৩টার দিকে মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। মৃত গৃহবধূ তুফা মনি (২৩) সদর উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের পশ্চিম ইছাখালী (হাইস্কুলের পুর্ব দক্ষিণ পাশ) এলাকার নজির আহমদের ছেলে সিএনজি চালক রেজাউল করিমের স্ত্রী ও চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের খোনকার খীল এলাকার আইয়ুবুর রহমানের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের খোনকার খীল এলাকার আইয়ুবুর রহমানের মেয়ে তুফা মনির সাথে পোকখালী ইউনিয়নের পশ্চিম ইছাখালী নজির আহমদের ছেলে সিএনজি চালক রেজাউল করিমের ৩ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে সুখের সংসার হলেও গত কয়েকদিন আগে পারিবারিক কাজকর্ম নিয়ে কলহের জেরে মারধর করে স্বামী। এনিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গত ২/৩ দিন ধরে মনোমালিন্য চলে আসছে।
এরই জেরে সোমবার স্ত্রীকে আবারো মারধর করে স্বামী রেজাউল। এরপরই ক্ষোভে, অভিমানে পরিবারের সদস্যদের অগোচরে নিজ শয়ন কক্ষে ওড়না পেছিয়ে আত্মহত্যা করে তুফা। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তাকে উদ্ধার করে ঈদগাঁওর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
অপর দিকে, তুফার বাবা আইয়ুবুর রহমান, চাচী রেহেনা বেগমসহ স্বজনরা দাবী করেন তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালাচ্ছে শ্বশুর পক্ষের লোকজন।
খবর পেয়ে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহের সুরহতাল রিপোর্ট তৈরি করে মরদেহটি তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে আসে।
সুরতহাল তৈরিকারি এসআই সনজিত চন্দ্র নাথ জানান, মৃতের শরীরে কোন আঘাত চিহ্ন পাওয়া যায়নি। গলায় একটা কাল চিহ্ন দেখা গেছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসলে হত্যা না আত্মহত্যা জানা যাবে।
ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান খান বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনা জানতে মৃতের শাশুড়ি ও ননদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, তুফার মরদেহ তদন্ত কেন্দ্রে আনার খবরে স্বজনরা সেখানে ভীড় জমান। তাদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর