জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার »
কক্সবাজার সদরের চৌফলদন্ডির একটি বসতবাড়িতে অভিযান চালিয়ে চার নারীসহ জমির হোসাইন রুবেল নামে কথিত এক মানবাধিকার কর্মীকে আটক করেছে সদর থানার পুলিশ। শনিবার (১৪ আগষ্ট) ভোর রাত ৩টার দিকে চৌফলদন্ডির উত্তরপাড়ায় (নয়নাখাতু বাপের পাড়ায়) অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এসময় বেশ কিছু পর্ণোভিডিও জব্দ করা হয় বলে জানিয়েছেন সদর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস। ।
আটক জমির হোসাইন রুবেল (৩৫) চৌফলদন্ডির উত্তরপাড়ার(নয়নাখাতু বাপের পাড়া) মৃত মো. আলমের ছেলে। তিনি আওয়ামী লীগের সহযোগী বলে প্রচারকরা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগ নামে নামসর্বস্ব একটি সংগঠনের ইউনিয়ন সভাপতি বলে জানা গেছে। এর আগে আরেক নামসর্বস্ব সংগঠন বাস্তুহারা লীগের জেলার দায়িত্বশীল হিসেবে পরিচিত রয়েছে তার।
আটককালে তার কাছ থেকে উদ্ধারকৃত পরিচয়পত্রে ‘মানবাধিকার তথ্য পর্যবেক্ষণ সোসাইটি’ নামক একটি সংস্থার চৌফলদন্ডি কমিটির সভাপতি লেখা। তারা কক্সবাজার সদর মডেল থানা হেফাজতে রয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস।

ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস জানান, বেশকিছু নারী রেখে অনৈতিক কর্মকান্ড চালানোর অভিযোগ পেয়ে চৌফলদন্ডির উত্তরপাড়ায় (নয়নাখাতু বাপের পাড়া) একটি বসতবাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় জমির হোসাইন রুবেল নামক ব্যক্তি এবং ৪ নারীকে আটক করা হয়। তারা মাদক ও দেহ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
ওসি জানান, রুবেলের মোবাইলে অনৈতিক ভিডিও এবং ছবি পাওয়া গেছে।
স্থানীয় ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জমির হোসাইন রুবেল কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে চাকরি করতো। সেখানে থাকাকালীন পতিতা, মাদক সাপ্লাইয়ের সাথে সম্পৃক্ত হন। এ অপকর্ম নির্বিঘ্ন করতে বাস্তুহারা লীগের জেলা কমিটির সাথে যুক্ত হন। পরে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগের সাথে যোগ দেন। গায়ে ফুলটাইম মুজিব কোট পড়ে হোটেল-মোটেল জোনে বিচরণ করা রুবেল নির্দিষ্ট কিছু হোটেলে নারী প মাদকেট আসর বসাতো। লকডাউনে হোটেল বন্ধ থাকায় নিজ বাড়িতেই আসর গড়ে তুলে। তার সঙ্গে রয়েছে আরো নামিদামি কয়েকজন ব্যক্তি। যারা রুবেলের অপকর্মের ভাগ নেয়। আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়। তার নিকটাত্মীয় একজনের সাথে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের একশীর্ষ নেতার পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। সেই সুবাদে ঐ ব্যক্তি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ সুযোগও কাজে লাগায় রুবেল।
অভিযোগ আছে, বিভিন্ন পথভ্রষ্ট নারী রয়েছে রুবেলের ঢেরায়। কৌশলে তাদের গোপনে ভিডিও ধারণ করতো। তা নিয়ে ব্লেকমেইলিং ও টাকা হাতিয়ে নিত। রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিচয়ে রুবেল গড়ে তুলে অপ্রতিরোধ্য সিন্ডিকেট। যারা ইয়াবাসহ নানা ধরণের মাদক বিক্রি করে রাতারাতি অনেক টাকার মালিক বনেছেন।
স্থানীয়দের মতে, নিরপেক্ষ অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসবে রুবেলের আরো অনেক অজানা তথ্য ও রহস্য। পাওয়া যাবে তার নেপথ্যে থাকা লোকদের আসল পরিচয়। মুখোশ উন্মোচন হবে অপরাধীচক্রের।
সদর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস বলেন, রুবেলের বিরুদ্ধে পর্ণোগ্রাফী ও মানবপাচার আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। সাথে আটক নারীদেরও মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ওসি।
বাংলাধারা/এফএস/এআই