কক্সবাজারে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ডেঙ্গুতে রোহিঙ্গা মৃত্যুর পর এবার দুই দিনের ব্যবধানে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে স্থানীয় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে নতুন করে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ২০২ জনের। যার ৯৭২ জন রোহিঙ্গা এবং ২৩০ জন স্থানীয়। কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. শাহ ফাহিম আহমদ ফয়সাল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সোমবার (৭ আগস্ট) পর্যন্ত কক্সবাজারে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ৫ হাজার ৭৬০ জন। এর মধ্যে ৪ হাজার ৮৬৯ জন রোহিঙ্গা ও ৮৯১ জন স্থানীয়। কিন্তু গত ৭ দিন আগে (১ আগস্ট) দেয়া তথ্য বিবরণীতে দেখা যায়, কক্সবাজার জেলায় মোট ৪ হাজার ৫৫৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত ছিলেন। যেখানে রোহিঙ্গা ছিলেন ৩ হাজার ৮৯৭ জন ও স্থানীয় ছিলেন ৬৬১ জন।
৭ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে নতুন করে দুজনসহ ৭ মাস ৭ দিনে মৃত্যুবরণ করেছে ৬ জন। এর আগে মৃত্যুবরণ করা ৪ জনই রোহিঙ্গা ছিলেন। কিন্তু নতুন করে মৃত্যুবরণ করা দুজনই টেকনাফ উপজেলার এবং জেলা সদর হাসপাতালেই এ দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. শাহ ফাহিম আহমদ ফয়সাল।
এ দুজনের মাঝে ডেঙ্গু সিনড্রম নিয়ে ভর্তি হওয়া ২০ বছর বয়সী তরুণী সানিয়া (ছদ্মনাম) মারা যান ৫ আগস্ট আর ৬ আগস্ট মারা যায় ১৭ বছর বয়সী এক তরুণ (বিজয়)। তার ডেঙ্গুজনিত মাল্টি অর্গান ফেইলিউর ছিল। মারা যাওয়া দুজনের নাম-ঠিকানা গণমাধ্যমে প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান কর্তৃপক্ষ।
কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যে আরো দেখা যায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত বিবেচনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও তার আশেপাশের এলাকা ক্রমাগত অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পরিসংখ্যান মতে, গত ৭ দিনে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক নতুন করে এক হাজার ১০৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। যেখানে ৯৫৪ জন রোহিঙ্গা এবং ১৫৪ জন স্থানীয়।
এর বাইরে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সোমবার (৭ আগস্ট) পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৪৪৪ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। যেখানে ৩২৩ জন স্থানীয় বাংলাদেশি এবং ১২১ জন রোহিঙ্গা। জেলা সদর হাসপাতালে গত ৭ দিনে নতুন করে ৯৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। যেখানে রয়েছে ৭৬ জন স্থানীয় ও ১৮ জন রোহিঙ্গা।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে কক্সবাজারে মোট ১৯ হাজার ২৩১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। যার মধ্যে ১৫ হাজার ৬৩৬ জন রোহিঙ্গা ও ৩ হাজার ৫৮৫ জন স্থানীয়। এই এক বছরে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যার মধ্যে রোহিঙ্গা ২৬ জন ও স্থানীয় ১৩ জন।