জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার »
প্রতি শুক্রবার ভোর পাঁচ থেকেই সমুদ্র শহর কিংবা পর্যটন নগরী কক্সবাজারে প্রবেশ করতে শুরু করে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পর্যটকরা বাস থেকে নামেতই তাদের ওপর হুমড়িখেয়ে পড়ে একদল মানুষ। তারা দালাল। বিভিন্ন পর্যটন জোন কিংবা হোটেল-মোটেল-রিসোর্টের দালাল। অল্প ভাড়ার হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিত তারা। এমনকি ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে।
এমন অভিযোগে ভিত্তিতে শুক্রবার (৫ আগস্ট) ভোরে এসব বাসের যাত্রী হয়েই শহরের বাইরে থেকে পর্যটকের বেশ ধরে উঠে পড়েন ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। বাস থেকে নামতেই পর্যটক ভেবে তাদের টানাহ্যাচড়া শুরু করেন দালাল চক্রের সদস্যরা। এসময় ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা কক্সবাজার শহরের কলাতলীর হোটেল-মোটেল জোনের বিভিন্ন পয়ন্ট থেকে ১৯ দালালকে আটক করে। জব্দ করা হয় আরও ১৪টি ইজিবাইক (টমটম)।
ধৃতরা হলেন, জাফর আলম (৩৮), মো. আব্দুলাহ (১৮), ইসমাইল (২৪), ইব্রাহীম (৩৭), নুর আলম (২৬), চাঁদ মিয়া (১৯), নজু আলম (৩৫), রুবেল (২৬), জুয়েল মিয়া (৩২), সাদেকুর (২৬), সৈয়দ নুর (৩০), সাহিদ (২৬), হেলাল উদ্দিন (৪০), সাগর (২৩), গিয়াস উদ্দিন (৩৩), সৈয়দ আলম (৩৬), মো. হোসেন (৪৭), রবিউল হাসান (২০), ও ইমরান (২১)।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অটোরিকশার চালকের বেশ ধরে একটি চক্র পর্যটকদের হয়রানি করে আসছে। তারা পর্যটকদের অল্প ভাড়ার ভালো হোটেলে নিয়ে যাবে বলে মৌখিক চুক্তি করে বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে যেত এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ ব্ল্যাকমেইল করত। পর্যটকদের মালামাল ছিনতাই করা, ইভটিজিং করা, এমনকি ধর্ষণের মত ঘটনার সাথেও তারা জড়িত। এই চক্রের কিছু সদস্য পর্যটকদের ফাঁদে ফেলে আপত্তিকর ছবি তুলে টাকা হাতিয়ে নিত। এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম আরও বলেন, অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অভিযান চালাতে শুক্রবারকে বেছে নেওয়া হয়। আটকরা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন তারা দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের এ ধরণের অভিযান নিয়মিত চলবে। কক্সবাজারে পর্যটকদের নানাভাবে হয়রানি করা কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে উল্লেখ করেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।