কক্সবাজার প্রতিনিধি »
কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে মেশিন বসিয়ে বালি উত্তোলনকালে ২০টি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সেলো (ড্রেজার) মেশিন ও এক হাজার ফুট পাইপসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।
ফুলছুড়ি রেঞ্জের খুটাখালী, মেধাকচ্ছপিয়া, মধুশিয়া ও ফুলছড়ি খাল এলাকায় মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) বেলা ১১ থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়। জব্দ করা সেলোমেশিনগুলো ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় অবৈধভাবে বালি উত্তোলনকারিদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের বিশেষ টহলদলের ইনচার্জ এমদাদুল হক।
বন কর্মকর্তা এমদাদুল হক জানান, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে মেশিন বসিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে এমন অভিযোগে বেশ কয়েকবার অভিযান চালানো হয়। কিন্তু অভিযানের পূর্বেই তারা মেশিন সরিয়ে ফেলতো।
‘মঙ্গলবারও বালু তোলা হচ্ছে এমন খবরে উত্তর বনবিভাগের সহকারি বনসংরক্ষক মো. সোহেল রানার নেতৃত্বে রেঞ্জ কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম, সৈয়দ আবু জাকারিয়া, সুলতান মাহমুদ টিটু ও বিশেষ টহলদলের সমন্বয়ে বিট কর্মকর্তা-কর্মচারি ও ভিলেজারসহ ৪০-৫০ জন বেশ কয়েকটিমে ভাগ হয়ে ফুলছুড়ি রেঞ্জের খুটাখালী, মেধাকচ্ছপিয়া, মধুশিয়া ও ফুলছড়ি খাল এলাকায় একসাথে অভিযান চালানো হয়।’
তিনি আরও বলেন, অভিযানে বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ২০টি সেলো মেশিন, এক হাজার ফিট পাইপসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়। এর মাঝেও অভিযানের বিষয়ে টের পেয়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এসময় জেলা প্রশাসনের পক্ষে সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর হোসেন সহযোগিতা দেন।
কক্সবাজার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (উত্তর) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, প্রভাবশালী লোভী প্রকৃতির কিছু লোক পাহাড়ের ভেতর চলমান ছরা থেকে অনিয়ন্ত্রিত বালি উত্তোলন, সংরক্ষিত বন দখল করে বাড়ি নির্মাণ ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার চেষ্টা চালান। খবর পেলেই অভিযান চালিয়ে বনভূমি জবরদখল মুক্ত করা হয়। কিন্তু আজ (১৩ অক্টোবর) এক সাথে ২০টি সেলোমেশিন জব্দ করা বড় সাফল্য বলা যায়।
তিনি বলেন, স্বল্প সংখ্যক লোকবল নিয়ে চাইলেও দুর্গম বনে এভাবে অভিযান করা কষ্টসাধ্য। প্রতিটি অভিযান শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। বন ও পাহাড় রক্ষায় এসব অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ৬ অক্টোবর উত্তর বনবিভাগের বাঘখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম আতা এলাহির নেতৃত্বে বাঘখালী রেঞ্জের কচ্ছপিয়া বিটের নতুন তিতার পাড়া এলাকায় সরকারি সংরক্ষিত বনের কাছে বনভূমি জবরদখল করে নির্মাণাধীন দুটি পাকা স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়ে বনভূমি জবরদখল মুক্ত করা করা হয়েছে।
গত ২ অক্টোবর উত্তর বন বিভাগের ঈদগাঁওর মেহেরঘোনা রেঞ্জের মাছুয়াখালী বিটের কানছিরাঘোনায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে মেশিন বসিয়ে বালি উত্তোলনকালে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সেলো মেশিন, পাইপসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করে মেহেরঘোনা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মামুন মিয়ার নেতৃত্বে অভিযানকারিরা।
একইভাবে পিএমখালীতে অবৈধ ভাবে সরকারী পিএফ বনভূমিতে মুরগির ফার্ম নির্মানের উদ্দেশে সদ্য ঢালাই কৃত কংক্রিটের পিলার নষ্ট এবং অবৈধ ভাবে গড়া একটি পান বরজ ভেঙে দেয়া হয়। জবরদখলকারি দের বিরুদ্ধে পি ও আর বন মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বাংলাধারা/এফএস/এএ