কক্সবাজার প্রতিনিধি »
কক্সবাজার শহর ও বিভিন্ন উপজেলায় লাখো মানুষ বাস্তুহারা ও ভূমিহীন। এদের অনেকে খাস জমিতে মানবেতরভাবে বাস করছে। ভূমিহীন এসব মানুষের জন্য বাসস্থান নিশ্চিত করা জরুরি। আবার অনেকে দখলদারিত্ব চালিয়ে কক্সবাজারকে খাবলে খাচ্ছে। তবে, মনে রাখতে হবে কক্সবাজার আমাদের সম্পদ, এ সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। কোন দুর্নীতিবাজদের কারণে কক্সবাজার যেন কলুষিত না হয়।
‘বিশ্ব বসতি’ দিবস উপলক্ষ্যে সোমবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেছেন।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি স্থানীয় সাংসদ সাইমুম সরোয়ার কমল বলেন, আমরা মানুষের পক্ষে কথা বলি, মানুষের জন্য কাজ করি। কাজ করতে গেলে অনেক সময় ভুল হতেই পারে। এতে কে কি বলছে তা দেখার সময় আমাদের নেই।
তিনি আরো বলেন, কক্সবাজারে ৩ লাখ কোটি টাকার উন্নয়নের কাজ চলছে। উন্নয়নের কাজ চলাকালিন জনগণকে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। আশা করি অচিরেই মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুনাম রক্ষা করতে সবাইকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান করার আহ্বান জানিয়ে এমপি কমল বলেন, কক্সবাজারে অবৈধ দখলদার, চাঁদাবাজি কিংবা সরকারি দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কোন অন্যায় বা অপরাধ সহ্য করা হবে না। এ জন্য সবাইকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। কারো ব্যক্তিগত অপরাধের দায়ভার আওয়ামী লীগ বা সরকার নিবে না। দুদক আমার বিরুদ্ধেও তদন্ত করেছিল। কিন্তু আমি কোন অপরাধের সাথে জড়িত ছিলাম না বলেই আমাকে দুর্নীতিবাজ হিসেবে প্রমাণ করতে পারেনি। কক্সবাজার আমাদের সম্পদ, এ সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। কোন দুর্নীতিবাজদের স্থান কক্সবাজারে হবে না।
সভাপতির বক্তব্যে কউক চেয়ারম্যান বলেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের খাস জমিগুলো এক শ্রেণীর বিত্তবানদের দখলে। তারা আবার গরীব লোকদের কাছে জমি বিক্রি করে। আমরা এসবের বিরুদ্ধে কাজ করতে গেলে আমার নামে অপ-প্রচার চালানো হয়। কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। তবে, আমি কিছুই মনে করিনি। বরং তাদের অপ-প্রচারগুলো আমার চলার পথে সতর্ক হতে সহযোগিতা করেছে।
কক্সবাজারে কোন অবৈধ স্থাপনা করতে দিবে না কউক এমনটি জানিয়ে তিনি আরো বলেন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে একটি সুন্দর, আধুনিক পরিকল্পিত কক্সবাজার গড়ে তুলতে চাই।
নিজেকে ও নিজের প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতি মুক্ত দাবি করে কউক চেয়ারম্যান বলেন, আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দুর্নীতির বিরুদ্ধে থাকব। আমার নিয়ন্ত্রিত কাউকে দুর্নীতি করতে দিব না। কক্সবাজারে বিভিন্ন দলের নেতারাই বিভিন্ন আকাম কুকাম করে বেড়ান। সাধারণ মানুষ এসবের কিছুই করে না। আমি যদি কোন ভুল করে থাকি আপনারা ভুলগুলো ধরে দিবেন। আমি শুধরে নিব। আমরা সকলে মিলে কক্সবাজারকে সাজাতে চাই। ইতিমধ্যে, জীববৈচিত্র রক্ষা, শহর আলোকায়ন, সবুজায়ন, পরিত্যাক্ত পুকুর সংস্কার করে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ ফিরে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি কক্সবাজারের রাস্তাটা আধুনিকতার ছোঁয়া দিতেই কাজটি হাতে নিয়েছি। সকলের সহযোগিতা পেলে অতি দ্রুত সময়ে কাজ শুরু করবো। তিন বছরের কাজ যেন দেড় বছরে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব আবু জাফর রাশেদের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার বিধান চন্দ্র, নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের নাজিম উদ্দিন, কক্সবাজার জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (ডিএসবি) খন্দকার গোলাম শাহনেওয়াজ, জাসদ সভাপতি নাঈমুল হক চৌধুরী টুটুল, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন আহমদ, মুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেন চৌধুরী, কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র নুরুল আবচার, কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রদীপ্ত খীসা, সাংবাদিক ফজলুল কাদের চৌধুরী, কউক’র সাবেক সদস্য ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম ও কক্সবাজার চেম্বার সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা প্রমুখ।
বাংলাধারা/এফএস/এএ