কক্সবাজার প্রতিনিধি »
কক্সবাজার জেলা কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের লক্ষ্যে আরপি গেইটের দু’পাশে প্রধান সড়ক পর্যন্ত স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় সীমানা দেয়াল নির্মাণ করছে কারা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু স্থানীয় সন্ত্রাসীরা নির্মাণ শ্রমিক ও কারা কর্তৃপক্ষকে হুমকি দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজে বাঁধা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন জেল সুপার মো. বজলুর রশিদ আখন্দ।
জেল সুপার এক লিখিত অভিযোগে জানান, কক্সবাজার জেলা কারাগার একটি স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠান। ৫৩০ জনের জন্য নির্মিত কারাগারে বর্তমানে ধারণ ক্ষমতার ৮ গুনের অধিক বন্দি এখানে অবস্থান করছে। বন্দিদের মাঝে তালিকাভুক্ত মাদক কারবারী গডফাদারসহ চিহ্নিত সন্ত্রাসীও রয়েছে। এদের পাশাপাশি অন্তরীণ রয়েছে প্রায় এক হাজারের অধিক রোহিঙ্গা বন্দিও। প্রতিদিন কারাগারে বন্দীদের স্বজনরা দেখা করতে আসেন। এছাড়াও বিভিন্ন কারণে কারা এলাকায় প্রচুর লোক সমাগম হয়। কিছু অসাধু চক্র এ লোক সমাগমকে কাজে লাগিয়ে কারা ফটকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। এতে প্রতিনিয়ত সাক্ষাত প্রার্থীরা হয়রানীর শিকার হচ্ছেন।
তিনি উল্লেখ করেন, কারাগারের আর.পি গেইট হতে প্রধান সড়ক পর্যন্ত দু’পাশে পাহাড় রয়েছে। উক্ত পাহাড়ে অবৈধভাবে কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাসহ লোকজন বসবাস করছে। উক্ত বাড়ী ঘরে চলছে মাদক ব্যবসাসহ অসামাজিক কার্যকলাপ। তাছাড়া উক্ত বাড়ী ঘরে জঙ্গি আস্তানা গড়ে উঠার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। রাস্তার দুপাশে অসংখ্য অবৈধ দোকানপাট এবং সিএনজি অটোরিক্সার অবৈধ পার্কিং এর কারণে সাক্ষাত প্রার্থীসহ কারা কর্তৃপক্ষ নির্বিঘ্নে কারা এলাকায় প্রবেশ করতে পারেন না। সাক্ষাত প্রার্থীগণ ও কারা কর্মীরা কর্তৃপক্ষের নিকট এ বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ করেন প্রায়শ।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, আরপি গেইটে তল্লাশীকালীন সন্ত্রাসীরা কর্তব্যরত কারারক্ষীদের সাথে অশোভন আচরণ করে থাকেন। কঠোর তল্লাশী ও নজরধারীর কারণে কয়েকদফা ইয়াবা ট্যাবলেটও উদ্ধার করা হয় আরপি গেইটে।
জেল সুপারের মতে, কক্সবাজার জেলা কারাগারকে সুশৃঙ্খল এবং যে কোন ধরণের মাদকের প্রভাব মুক্ত রাখতে কারা কর্তৃপক্ষ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বন্দীর হাতকে কর্মীর হাতে রুপান্তরে নিরলস পরিশ্রমের অংশ হিসেবে বন্দীদের বিভিন্ন ধরণের ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। বহিরাগত কেউ যাতে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে না পারে সে জন্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একবিন্দুও ছাড় দেয়া হচ্ছে না। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে কারাগারের নামে অধিগ্রহণকৃত জমিতে পাকা দেয়াল তোলা হচ্ছে। তবে, কারা সরকারি কাজে বাঁধা দিচ্ছেন এ ব্যাপারে খোলাসা করে কিছু বলেননি জেল সুপার।
জেল সুপার মো. বজলুর রশিদ আখন্দ বলেন, উর্ধ্বতন মহলকে জানানো হয়েছে বিষয়টি। আমরা ভীত না হয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। তবে, কৌশলগত কারণে বাঁধাদানে চেষ্টাকারিদের নাম উহ্য রাখা হয়েছে। এরপরও কোন বাঁধা এলে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ নিয়ে আইনি আশ্রয় নেব।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর