ksrm-ads

১৯ মার্চ ২০২৫

ksrm-ads

কক্সবাজার সৈকতে পর্যকটদের ভিড়; সৈতকে প্রবেশ এখনো নিষেধ

কক্সবাজার প্রতিনিধি»

দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। সংক্রমণ থেকে দেশবাসীকে রক্ষায় সারাদেশের বিধিনিষেধ আরোপের পাশাপাশি গত এপ্রিল থেকে বন্ধ হয়ে যায় কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল-রেস্তোরা ও পর্যটন স্পট। দীর্ঘ সাড়ে চারমাস পর বিধিনিষেধ ১১ আগস্ট হতে শিথিল করা হয়। স্বাস্থ্য বিধি মেনে সবকিছু শুরুর নির্দেশ দেয়া হলেও কক্সবাজার সৈকত ও অন্যান্য পর্যটনস্পটে যেতে নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রেখেছিল প্রশাসন।

কিন্তু ১২ আগস্ট প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ১৯ আগস্ট হতে সকল পর্যটনস্পট শর্ত সাপেক্ষে খুলে দেয়া হচ্ছে।  স্বাস্থ্য বিধি মেনে অর্ধেক কক্ষ ভাড়া দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে হোটেল-মোটেল, রেস্তোরা ব্যবসা করতে পারবে। পাশাপাশি পর্যটন স্পট গুলোতে লোকসমাগম নিয়ন্ত্রণ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পর্যটনস্পট ১৯ আগস্ট খোলার ঘোষণা হলেও শুক্রবার থেকেই ভ্রমণ ও সমুদ্র প্রেমীরা সৈকত এলাকায় ভীড় জমিয়েছেন। তবে, প্রশাসনিক নির্দেশনা না থাকার কথা বলে, বীচকর্মী, টুরিস্ট পুলিশ ও লাইফগার্ড কর্মীরা সৈকততীরে ভীড় করা নানা বয়সী মানুষকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কিছু কিছু পয়েন্টে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সৈকতে নেমে পড়েন ভ্রমণ প্রেমীরা।

সৈকতে হাঁটতে আসা এক দম্পতি বলেন, ‘অনেকদিন ঘর থেকে বের হতে পারিনি। বাচ্চাদের পাশাপাশি আমরাও হাঁপিয়ে উঠেছি। গতকাল টিভিতে শুনলাম পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়া হচ্ছে। সেই খুশিতে আজ (শুক্রবার) কক্সবাজার সৈকতে এসেছিলাম। কিন্তু ব্যারিকেটে প্রশাসনের লোকজন আমাদের নামতে দেয়নি। এত কাছে এসেও সাগরের ঢেউটা ছুঁতে পারিনি এটা খুবই কষ্টের।‘

সৈকতে কাজ করা সী সেইফ লাইফগার্ডের সুপারভাইজার মোহাম্মদ ওসমান বলেন, ‘আমরাও অকর্মন্য বসে আছি। লকডাউনেও প্রতিদিন পালা করে আমরা সৈকতে এসেছি। বীচকর্মী, পুলিশের সাথে দায়িত্ব পালন করেছি নিরবিচ্ছিন্ন। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটককে ঢেউয়ে ভেসে যাওয়া থেকে রক্ষায় কাজ করেছি। কিন্তু কোভিড-১৯ এর চলমান পরিস্থিতিতে গত বছরের মতো এবারও প্রায় ৫ মাস জনশূন্য সৈকতে খাঁ খাঁ বালিয়াড়িতে বসে থাকতে আমাদেরও খারাপ লাগছে। অনেকে প্রতিদিন সৈকতে এসে বালিয়াড়িতে নামতে চান। কিন্তু সরকারি নির্দেশনার কারণে অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাদের ফিরিয়ে দিতে হয়। আজও (শুক্রবার) কয়েকশ ভ্রমণ পিপাসুকে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে তুলে দেয় হয়েছে। আমরা বুঝতে পারছি মানুষের ধৈর্য আর সইছে না।‘

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হোয়াইট অর্কিড হোটেলের জিএম রিয়াদ ইফতেখার বলেন, ‘জেলা প্রশাসন বলে দিয়েছে  শুধুমাত্র জীবন ও জীবিকার তাগিদে যারা কক্সবাজার আসবেন তাদেরকেই হোটেলে রাখা যাবে। তাই পূর্বের মতো পর্যটন সেবা নিশ্চিত করতে হোটেল রেস্তোরাঁ পরিস্কার- পরিচ্ছন্ন করা শুরু করেছেন সবাই।‘   

কক্সবাজার গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য বিধি মেনে হোটেলের অর্ধেক কক্ষ ভাড়া দিতে। যেহেতু মহামারীর সময়, তাই সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত জরুরি। আমাদের অর্থলগ্নি আছে সেহেতু ব্যবসা সচল রাখা জরুরি। তেমনি আগত এবং অবস্থানরত সবাইকে নিরাপদ রাখা আরো জরুরি। যারা হোটেল আসবেন তাদের সচেতনামুলক পরামর্শ দিতে হবে সবার।‘

কক্সবাজার বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘সম্ভাবনার পর্যটনশিল্প করোনার কারণে ধুকছে। গত বছরের মতো চলতি বছরেও বিপুল পরিমাণ লোকসান গুনছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। করোনা মোকাবিলার পাশাপাশি সব ধরনের ব্যবসা সচল করতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সেভাবেই পর্যটনও সচল করা হচ্ছে। ব্যবসায়ী, পর্যটক ও সংশ্লিষ্ট সকলের মাঝে সচেতনতা থাকলে আমরা ব্যবসা সুচারু করার পাশাপাশি করোনার প্রাদূর্ভাবও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো বলে আশা রাখছি। এবিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্ব্বোচ্চ নজরদারি থাকবে বলে উল্লেখ করেন ডিসি।‘

বাংলাধারা/এফএস/এফএস

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ