বাংলাধারা ডেস্ক »
করোনায় দেশের বেশিরভাগ পণ্যের রপ্তানি নেতিবাচক হলেও কিছু পণ্যের রপ্তানি আগের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি হয়েছে। এরমধ্যে পাটজাত, ক্যামিক্যাল, নিটওয়্যার, চিংড়ি, হোম টেক্সটাইল, কাট ফ্লাওয়ার, তামাক ও ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য অন্যতম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ সালে জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট রপ্তানি হয়েছিল ২৭ হাজার কোটি টাকার পণ্য। ২০২০ সালে একই সময়ের জানুয়ারি মাসে রপ্তানি কমে ২৩ হাজার কোটি টাকা হয়। তবে ২০২০-২১ সালের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি কিছুটা বেড়ে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা হয়।
কিন্তু এটি ২০১৯ সালের চেয়ে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা কম। রপ্তানি কমের যাওয়ার মধ্যেও চিংড়ি রপ্তানি বেড়েছে ৪৪ শতাংশ। সার্বিকভাবে মাছ রপ্তানি কমেছে ১০ শতাংশ। ২০১৯-২০ সালের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চিংড়ি রপ্তানি হয়েছিল ৬২ কোটি টাকার। কিন্তু ২০২১ সালের ওফব্রুয়ারি পর্যন্ত রপ্তানি হয়েছে ৯০ কোটি টাকা। এ হিসাবে করোনাকালীন চিংড়ি রপ্তানি বেড়েছে ৪৪ শতাংশ।
রপ্তানি পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে কাট ফ্লাওয়ার। এই পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি পয়েছে ২৫০ শতাংশ। ২০১৯-২০ সালের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কাট ফ্লাওয়ার রপ্তানি হয়েছিল ২ লাখ টাকার। কিন্তু ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফুল রপ্তানি হয়েছে ৭ লাখ টাকার। এরপরেই রপ্তানি বেড়েছে হোম টেক্সটাইলের। ২০১৯-২০ সালে হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি ছিল ৫২৭ কোটি টাকার। কিন্তু ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি হয়েছে ৭৩১ কোটি ডলারের পণ্য। এ হিসাবে হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি বেড়েছে ৩৯ শতাংশ।
এ ছাড়াও গার্মেন্ট রপ্তানির মধ্যে নিটওয়্যারের রপ্তানি বেড়েছে ৫ শতাংশ। ২০১৯-২০ সালে নিটওয়্যারের রপ্তানি ছিল ১১ হাজার কোটি টাকার। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকার। করোনা সময়ে কেমিক্যাল পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২২ শতাংশ। তামাক পন্য রপ্তানি বেড়েছে ৩ শতাংশ। ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৫৭ শতাংশ।
এ বিষয়ে বিকেএমইএর সহ-সভাপতি মোহম্মদ হাতেম বলেন, ইউরোপে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের দিকে করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়। এ সময়ে তারা নিম্ন মূল্যের কিছু কাপড় ক্রয় করে। বিশেষ করে আন্ডার গার্মেন্ট, টি শার্ট, এ ধরনের বিভিন্ন নিট পোশাকের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এ কারণে ফেব্রুয়ারিতে নীটপণ্যের কিছুটা রপ্তানি বাড়ে। কিন্তু ফেব্রুয়ারির পরে অবস্থা কিন্তু ভাল নয়। এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে আবারো রপ্তানি কমবে বলে তিনি মনে করেন।
অর্থনীতিবিদ আমিনুর রহমান বলেন, দেশের ৮৫ ভাগ রপ্তানি হলো গার্মেন্ট পণ্য। অন্যান্য কিছু অপ্রচলিত পণ্যের রপ্তানি বাড়লেও এটি তেমন উল্লেখ করার মতো নয়। চিংড়ি রপ্তানি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ চীনে করোনার প্রকোপ কমে যাওয়া। দেশের বেশিরভাগ চিংড়িই রপ্তানি হয় চীনে।
তিনি মনে করেন, দেশের রপ্তানিকে টেকসই করতে হলে শুধু গার্মেন্ট নির্ভর রপ্তানি থাকলে হবে না। রপ্তানির বৈচিত্র্য থাকা দরকার। করোনার সময়ে ছোট ছোট পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি আমাদের এ বিষয়টিই মনে করিয়ে দিয়েছে।
বাংলাধারা/এফএস/এআই