রুপন দত্ত »
কর্ণফুলীর বিভিন্ন এনজিওকমীরা লকডাউনের মধ্যে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে কিস্তি আদায়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের ঋণগ্রহীতারা। ঋণের কিস্তি দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। ছোটখাটো বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা ঋণ নিয়ে তাদের ব্যবসার কার্যক্রম চালান। এ ছাড়াও অনেকে এনজিও থেকে সাপ্তাহিক কিস্তিতে ঋণ নিয়ে ইজিবাইক, থ্রিহুইলারসহ বিভিন্ন যানবাহন কিনে চালিয়ে তা থেকে আয় করে জীবিকা নির্বাহ করেন ও ঋণের কিস্তি দেন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে মৃতু ও আক্রান্তের হার বাড়তে থাকায় সরকার দেশজুড়ে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে। ফলে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যায় অনেক মানুষের। এমন পরিস্থিতিতে এনজিওর ঋণের কিস্তি দিতে হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন আয়ের ঋণগ্রহীতারা।
অধিকাংশ এনজিও বিবাহিত নারীদের সমিতির মাধ্যমে ঋণ দিয়ে থাকে। এমন সময়ে এ সকল ভুক্তভোগী খেটেখাওয়া ঋণগ্রহীতা যখন তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এর মধ্যে বিভিন্ন এনজিওকর্মীরা বাড়ি বাড়ি কিস্তি আদায়ের জন্য ধরনা দিচ্ছেন, চাপ সৃষ্টি করে কিস্তি আদায় করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের সরকারি নির্দেশনা থাকলেও এনজিওকর্মীরা ঋণগ্রহীতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিস্তির টাকা আদায় করছেন। কোনো কোনো এনজিওরকর্মী এক বাড়িতে টেবিল চেয়ার নিয়ে বসে পাড়ার সব নারী ঋণগ্রহীতাদের নিকট থেকে কিস্তি আদায় করছেন। এ সময় নারী গ্রহীতাদের মাঝে মাস্ক ব্যবহার বা সামাজিক দূরত্ব মানার কোনো বালাই থাকছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঋন গৃহীতা বলেন, সম্প্রতি দোকানে মালামাল তোলার জন্য একটি এনজিও থেকে তার স্ত্রীর নামে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিল, এতে সপ্তাহে তার ১১ শ টাকা কিস্তি দিতে হয়। লকডাউনে এক সপ্তাহ বাড়ি বসে আছি, কোনো আয়-রোজগার নেই। ধারদেনা করে সংসার চলছে, কিস্তি কিভাবে দেব ভেবে পাচ্ছি না। লকডাউনের সময় কিস্তি বন্ধ না করলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। কিন্তু এনজিও কর্মীরা কোন কথা শুনতে রাজি নই, তারা একপ্রকার জোর করে এককথায় অত্যাচার করে টাকা আদায় করার চেষ্টা করছে।
আনোয়ারায় বিশেষ করে সামসেড ও বিকস নামের দুটি এনজিওর বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদুটো এনজিও তাদের কর্মীদের উপর কিস্তি আদায়ের জন্য বেশি অত্যাচার করছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এনজিও কিস্তি আদায়ের বিষয় এবার আমরা কোনো নির্দেশনা পাইনি। তারপরেও মানবিক কারণে জবরদস্তি করে আদায় না করা সমীচিন। যারা দিতে সমর্থ তাদের ক্ষেত্রেও কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আর কোন এনজিও যদি জোর করে কিস্তি আদায় করতে চাই, সেক্ষেত্রে আমাদের কাছে অভিযোগ দিলে আমরা এর ব্যবস্থা নিব।
বাংলাধারা/এফএস/এআর