কর্ণফুলী উপজেলার জুলধা ডাঙারচর খেয়া-ঘাটে স্থানীয় লোকজন ও কথিত খাস কালেকশন আদায়কারীর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
১৫ এপ্রিল (সোমবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ে দু’পক্ষ অবস্থান নেওয়ায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এতে বন্ধ হয়ে যায় খেয়া পারাপার। বিপাকে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহমীরপুর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি এসআই আব্দুল্লাহ আল নোমান।
স্থানীয় সাম্পান মাঝিরা জানান, আবসার উদ্দিন নামে একজন বহিরাগত আজ বিকেলে খাস কালেকশনের দায়িত্ব পেয়েছেন দাবি করে ঘাটে প্রভাব বিস্তার করতে গেলে এ বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
এ সময় সাধারণ যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। স্থানীয় সাম্পান মাঝিদের মাঝেও নানা বিরোধ দেখা দেয়। প্রকৃত সাম্পান মাঝিদের বিতাড়িত করে একটি পক্ষ ঘাটে সিটি কর্পোরেশন এর খাস কালেকশন আদায় করার নামে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙারচর সল্টগোলা ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার লোকজন আসা যাওয়া করেন। জুলধা ডাঙারচর ঘাটসহ অন্যান্য ঘাটগুলো উচ্চ আদালতে মামলা থাকায় এই পহেলা বৈশাখেও ইজারা দিতে পারেনি চসিক। ফলে চসিকের রাজস্ব শাখা ‘খাস কালেকশন’ আদায়ের দিকে হাঁটছে।
এ সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তারা সরকারি অর্থ ইজারা লোভী সিন্ডিকেটকে সহায়তা করে খাস আদায় করতে গেলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বলে জুলধা এলাকার লোকজন জানান।
যদিও চসিক নীতিমালা অনুযায়ী ঘাট ইজারা কিংবা খাস আদায়ে সমবায় অধিদপ্তর কতৃক নিবন্ধিত স্থানীয় পাঠনীজীবি সমিতি কে ঘাট পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু খাস আদায়ের জন্য স্থানীয় পাঠনীজীবিগুলো এ সুযোগ পাচ্ছে না বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানায়।
সল্টগোলা ডাঙ্গারচর পাটনীজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সাম্পান মাঝিরা সাম্পান চালিয়ে বউ বাচ্চা নিয়ে দুমুঠো ডাল-ভাত খেতে চাই। আমরা চাই কেউ আমাদের পেটে লাঁথি না বসায়। টোল কিংবা খাস কালেকশন যে আদায় করবে করুক, আমরা এই ঘাটের মাঝি, আমরা যাত্রী পারাপার করতে চাই। বাহিরের কিছু লোকজন ঘাট দখলের পাঁয়তারা করতেছে। ঘাটে চাঁদাবাজি করার জন্য। আমরা এসব হতে দেব না।’
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সহকারী এস্টেট অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ঘাটের বিষয়টি নিয়ে আমাদের আইন শাখা কাজ করতেছে। শিগগিরই হাইকোর্টের স্টে অর্ডারটি ব্যাকেট করা হবে। তারপর ঘাটগুলোর টেন্ডার কল করা হবে। এখন খাস কালেকশন ছাড়া কোন পথ নেই।’
কর্ণফুলী থানার ওসি তদন্ত মো. মেহেদী হাসান ও শাহমীরপুর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি এসআই আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান,’ চসিক থেকে আফসার মিয়া নামক এক ব্যক্তি ডাঙারচর সল্টগোলা ঘাটের খাস আদায়কারী হিসেবে কাগজপত্র নিয়ে থানায় এসেছিলেন। যারা এতদিন ঘাটে ছিলো তাঁদেরকে থানায় ডাকা হয়েছে। দুপক্ষই বসে একটি সুষ্ঠু সমাধান করতে আশা করি।’