কক্সবাজার সৈকত তীরের ইকোলুজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়ায় (ইসিএ) ভবন নির্মাণ বন্ধে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন। আদালতের নির্দেশনা উপক্ষো করে নিষিদ্ধ ইসি এলাকায় ভবন নির্মাণ বিষয়ে সোমবার (৩ জুন) বাংলাধারায় সচিত্র তথ্যবহুল প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিকেলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মাসুদ রানার নেতৃত্বে একটি টিম এ অভিযান চালান।
অভিযানে কলাতলী জোনের এমদাদ হোসেনের নির্মানাধীন ভবনসহ একাধিক প্লটের চলমান কাজ বন্ধ করে স্থাপনাসমূহ আগামী তিনদিনের মধ্যে নিজস্ব উদ্যোগে সরিয়ে নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা।
প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা আইন মতে, কক্সবাজার সৈকত হতে উপরে ৩০০ মিটারে নতুন কোন স্থাপনা নির্মাণে ২০১৮ সালে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভবন নির্মাণ হচ্ছিল। এ বিষয়ে সোমবার (৩ জুন) বাংলাধারা- অনলাইনে একটি তথ্যবহুল সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন পেয়ে জেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। তারা পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা ও শৃংখলাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে অভিযানে যান জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট। তারা নিষেধাজ্ঞা থাকা জায়গায় গোপনে স্থাপণা নির্মানাধীন প্লটে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন।
সূত্র মতে, পরিবেশগত বিবেচনায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে টেকনাফ সমুদ্র সৈকতের ১০ হাজার ৪৬৫ হেক্টর এলাকার প্রাণ বৈচিত্র্য, নির্মল জলরাশি এবং পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় সরকার ১৯৯৯ সালে এ এলাকাকে প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে। এ নির্দেশনা মতে, কক্সবাজার পৌরসভার নাজিরারটেক থেকে টেকনাফের বদর মোকাম পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত, সৈকতের ঝাউ গাছসমৃদ্ধ ৩০০ মিটার উন্নয়ন নিষিদ্ধ ও ৫০০ মিটার সংরক্ষিত এলাকা। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা এক রীটের বিপরীতে ‘ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান ফর কক্সবাজার টাউন এন্ড সি আপ টু টেকনাফ’ মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী জোয়ার ভাটার মধ্যবর্তী লাইন থেকে পৌরসভার প্রথম ৩০০ মিটার ‘নো ডেভেলপমেন্ট জোন’ উল্লেখ করে এ এলাকায় কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না বলে নির্দেশনা দেয় উচ্চ আদালত।
এরপর পূর্বে বরাদ্দ পাওয়া খালি অর্ধশতাধিক প্লটের বরাদ্দ বাতিলের করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও (কউক) সৈকত হতে ৩০০ মিটারে কোন স্থাপণা নির্মাণ থেকে বিরত থাকতে প্রচারণা চালায় সেই সময় (২০১৭-২০১৮ সালে)। বাতিল বলে ঘোষণা হয় পূর্বে নেয়া স্থাপণা নির্মাণ অনুমতিও।