বাংলাধারা প্রতিবেদন »
নগরীর কদমতলী এলাকা থেকে এক কারারক্ষীকে ইয়াবাসহ আটকের পর চট্টগ্রাম কারাগারে মাদক ব্যবসার এক নেটওয়ার্কের সন্ধান পেয়েছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
অস্ত্র, ছিনতাই ও সন্ত্রাসসহ অন্তত ২০ টি মামলার আসামি নূরুল আলম (হামকা নুরুল আলম) চট্টগ্রাম কারাগারে বসে কারারক্ষীদের ব্যবহার ভেতরে-বাইরে মাদকের এই নেটওয়ার্কের চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ‘হামকা গ্রুপ’ নামে একটি সন্ত্রাসী দলের নেতা তিনি। বছর কয়েক আগে হামকা গ্রুপ ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও অস্ত্রবাজি চালিয়ে চট্টগ্রাম নগরে ত্রাস সৃষ্টি করে। পরে পুলিশে তৎপরতায় তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রনে আসে।
শনিবার নগরীর কদমতলী ফ্লাইওভারের উপর থেকে ৫০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কারারক্ষী সাইফুল ইসলামকে (২২) আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ এসব তথ্য জানতে পেরেছে।
সাইফুলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রাতে মাদকের এই নেটওয়ার্কের এক নারীসহ আরও তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তারাও পুলিশের কছে শ্বিকারোক্তি দেয় যে হামকা নূর আলমের নির্দেশেই তারা কারারক্ষী সাইফুলকে ইয়াবা ও গাঁজা সরবরাহ করতেন। নূর আলম কারাগারে বসেই মাদকের দাম শোধ করতেন।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- দিদারুল আলম মাছুম ওরফে আবু তালেব মাছুম (৩৫) ও আজিজুল ইসলাম জালাল (৩৬) এবং আলো বেগম (৩৫)।

কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বাংলাধারাকে জানান, কারারক্ষী সাইফুল জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে মাছুমের কাছ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করেছে । আর থানায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার মোবাইলে ফোন করে জালাল তাকে গাঁজা সংগ্রহ করতে ডাকে।
তিনি বলেন, এরপর ফাঁদপেতে লালদীঘির পাড় এলাকা থেকে জালালকে ১’শ গ্রাম গাঁজাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রাতে তাদের নিয়ে এনায়েত বাজার এলাকা থেকে মাছুমকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান ওসি।
ওসি মহসিন বলেন, গ্রেপ্তার সাইফুল মাছুমের কাছ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে হালিশহর কাঁচাবাজার এলাকায় এক লোকের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিল। ৫০টি ইয়াবার মধ্যে ওই লোকের হাতে ১০টি দেওয়ার কথা ছিল তার। বাকি ৪০টি ইয়াবা কারাগারে নূরুল আলমের কাছে পৌছানোর কথা ছিল।
২০ মামলার আসামি নূরুল আলম দুই বছর আগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে কারাগারেই আছেন। তবে সেখানে বসেই তিনি বাইরে নিজের সহযোগীদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ রাখতেন এবং মাদকের কারবার চালিয়ে আসছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, মাছুম গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গিয়ে নূরুল আলমের সঙ্গে পরিচিত হয়। জেল থেকে বেরিয়ে মাছুম জেলে থাকা নূর আলমকে নিয়মিত ইয়াবা সরবরাহ করে আসছে। কারারক্ষী সাইফুলের মাধ্যমে হত তাদের এই লেনদেন।
তিনি বলেন, নূরুল আলম তাকে ফোন করে কারারক্ষী সাইফুলের মাধ্যমে ইয়াবা পাঠানোর কথা বলে। সকালে আলোর কাছ থেকে মাছুম ৫০টি ইয়াবা সংগ্রহ করে। দুপুরে সাইফুল ইয়াবাগুলো মাছুমের কাছ থেকে বুঝে নেয়। তিন দিন আগেও একবার সাইফুলকে ৫০টি ইয়াবা দেওয়ার কথা তিনি জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন।
ওসি আরো বলেন, এক বন্ধুর মাধ্যমে হামকা নূরুল আলমের সঙ্গে জালালের পরিচয় হয়। নূরুল আলম তাকে ফোন করে গাঁজা পাঠানোর কথা বললে সাইফুল তার কাছ থেকে সেই গাঁজা সংগ্রহ করে পৌঁছে দিত।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর