বাংলাধারা প্রতিবেদক »
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের বাড়িতে হামলা, ককটেল, গুলি ও রকেট লেঞ্চার নিক্ষেপ এবং এই সব নিয়ে অপপ্রচার গুজব ছড়ানোসহ ফেসবুকে নানামুখী অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে আশরাফুল কামাল মিঠু নামে মিরসরাইয়ের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি ডিবির সাইবার ইউনিট।
মঙ্গলবার রাতে মিরসরাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয় বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে ডিএমপি ডিবির সাইবার ইউনিট।
এর আগে ১৯ নভেম্বর কামাল উদ্দীন নামে এলিটের এক কর্মী বাদি হয়ে ১৩ জনের বিরুদ্ধে ডিএমপির বনানী থানায় একটি জিডি করেন। সেই জিডির তদন্তে আটকদের সম্পৃক্তা পেয়ে ডিবির একটি দল তাকে আটক করে।
অভিযুক্তরা হলো— আবুল হাসনাত ওরফে হাবিব খান (৩২), আশরাফুল কালাম মিঠু (৩৬), শামিম হাসান রেহান (২৮), আরাফাতুল ইসলাম, কামরুল হাসান প্রকাশ ভুয়া সাংবাদিক, ওমর ফারুক, প্রিন্স হাবিব, মো. হাসান রনি, ইমরান হোসেন তুহিন, আশ্রাফ উদ্দিন চৌধুরী, আর এন এম মোজাহিদ হোসাইন, একরামুল হক সোহেল, মো. ইবরাহিম নিশানসহ অজ্ঞাত আরও কিছু ব্যক্তি এই ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত।
সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়, রাজাকার পরিবারের সন্তান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শিবিরকর্মী আবুল হাসনাত ওরফে হাবিব খান ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ক্যাডার আশরাফুল কালাম মিঠুর নির্দেশনা, পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে আরো কিছু ব্যক্তি যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ এলিটকে সামাজিকভাবে হেয়পতিপন্ন ও সম্মানহানি করার উদ্দেশ্যে দীর্ঘদিন যাবত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের জনপ্রিয়তা, রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থানে ঈর্ষান্বিত হয়ে তারা এ অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়। নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের সুনাম নষ্টের উদ্দেশ্যে মিথ্যা অপপ্রচার এবং প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছে একটি কুচক্রি মহল। তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
ফেসবুকে অপপ্রচারকারীদের মধ্যে আশরাফুল কামাল মিঠুসহ বেশ কয়েকজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গত ১৯ ডিসেম্বর দুপুরে মিরসরাই উপজেলার ১২ নম্বর খৈইয়াছড়া ইউনিয়নের নয়দুয়ার এলাকায় নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের বাড়িতে বোমাবাজি ও গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে।
এই সময় এলিট অভিযোগ করে বলেছিলেন, মিরসরাইয়ে দশজন শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে হুইলচেয়ার বিতরণ করার কর্মসূচি শেষ হতে না হতেই আশরাফুল কামাল মিঠুর সেকেন্ড ইন কমান্ড আলমগীর হোসেন ও কামরুল হাসান এবং উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক, ধর্ষণ এবং ছিনতাই, মাদক মামলার আসামি মাসুদ করিম রানার নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি গুলি করার পর রকেট লেঞ্চহার ও হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। যার ভিডিও ফুটেজ সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। ঘটনাটি মিরসরাই উপজেলার দুই প্রেসক্লাবের সামনে ঘটে।
উল্লেখ্য, নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের বাড়িতে হামলার পর মূলত সবার নজরে আসে আশরাফুল কামাল মিঠু। এই মিঠুর দাদা হাজী চাঁন মিয়া সওদাগর ৭১ সালের একজন তালিকা ভুক্ত রাজাকার ছিল, আল শামস বাহিনীর ইউনিয়ন কমান্ডর ছিল, মিঠুর বাবা গত বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে বিএনপির বড় মাপের একজন গডফাদার ছিল, ইউনিয়ন বিএনপির গত কমিটির উপদেষ্টা এবং উপজেলা বিএনপির সদস্য ছিল,তার চাচা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এবং গত ১০ তারিখে ঢাকা গিয়ে আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছে।
এই মিঠুর উত্থান ২০১৪ সালে ১০ মার্চ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হাসান হাবিব রনির ওপর হামলার মধ্যে দিয়ে। সে তখন অন্যদের ব্যবসা বাণিজ্য দখল করে মিরসরাইয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে এলাকায়। এরপর ২০১৫ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আকবরের গায়েও সরাসরি হামলা করার দুঃসাহস করলেও কেউ এর প্রতিবাদ করেননি। মিঠুর বিরুদ্ধে প্রথম সিটি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা মমতাজকে ছোট কমলদহ বাজারে স্বয়ং উপস্থিত থেকে দিনের আলোয় নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে হাদি ফকির হাটের আরেক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আমীন মুহুরীকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। সে দিনে দুপুরে নিজামপুর কলেজ ক্যাম্পাসে হত্যা করে তাকে।
তার কিছুদিন পর এই নিজামপুর কলেজ এলাকায় যুবলীগ নেতা ফজলুকে হত্যা করে বলে অভিযোগ রয়েছে মিঠুর বিরুদ্ধে। আশরাফুল কামাল মিঠু হাদি ফকির হাটের আরেক যুবলীগ কর্মী হত্যার সাথে সম্পৃক্ত। এছাড়া মিরসরাই উপজেলার সাবেক সফল চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিনের ওপর হামলাসহ অসংখ্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচারের স্ট্রিম রোলার চালিয়েছে রাজাকার এবং বিএনপি পরিবারের সন্তান এই মিঠু।
এছাড়া চোরাকারবারী, মাদক, দখল বাণিজ্যসহ আরো অসংখ্য অভিযোগ আছে মিঠুর বিরুদ্ধে। অথচ আজ পর্যন্ত বিএনপি জামায়াতের কোন একজন নেতাকর্মীকেও এই মিঠুরা কিছু করেনি, বরং শিবিরের সাবেক সাথী, বর্তমান সাংবাদিক নামধারী কামরুল হাসানসহ অসংখ্য ছাত্রদল ছাত্রশিবিরের ক্যাডারদের সাথে নিয়ে বুক ফুলিয়ে শত শত অপরাধ করে বেড়াচ্ছে এই সাবেক ছাত্রদল এবং যুবদল কর্মী থেকে ২০১৪ সালে যুবলীগে যোগ দিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম কারী আশরাফুল কামাল মিঠু।