১২ জুলাই ২০২৫

কে হচ্ছেন চসিক প্রশাসক!

বাংলাধারা প্রতিবেদন »

অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে গেল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) নির্বাচন। এদিকে চসিকের বর্তমান পর্ষদের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে আগামী ৫ আগস্ট। এ অবস্থায় চসিক পরিচালনায় প্রশাসকের দায়িত্ব ভার কার উপর ন্যাস্ত হতে যাচ্ছে তা নিয়ে নগরজুড়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। উঠে আসছে একাধিক ব্যক্তির নাম।

স্থানীয় সরকার আইনে বলা আছে, কোনো সিটি কর্পোরেশনের পর্ষদ মেয়াদোত্তীর্ণ হলে সরকার নতুন পর্ষদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত একজন উপযুক্ত ব্যক্তি বা কোনো কর্মকর্তাকে প্রশাসক নিয়োগ দেবে। প্রশাসকের কাজে সহায়তার জন্য সরকার প্রয়োজন মনে করলে একটি কমিটিও করে দিতে পারবে। প্রশাসক এবং সেই কমিটির সদস্যরা মেয়র ও কাউন্সিলরের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন। তবে তাদের মেয়াদও হবে ১৮০ দিন। আইনের এ পথ ধরেই এখন প্রশাসক নিয়োগ করতে যাচ্ছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। নির্বাচন কমিশন এ মুহূর্তে স্থগিত হওয়া চসিক নির্বাচন করতে চায় না বলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় প্রশাসক নিয়োগ দিতে যাচ্ছেন।

গুঞ্জন উঠেছে, রাজনৈতিক কোনো ব্যক্তিকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নগর আওয়ামী লীগের দুই সহ সভাপতি এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল এবং খোরশেদ আলম সুজনের নাম বারবার উঠে আসছে। আলোচনার তালিকায় রয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুচ ছালামের নামও।

অন্যদিকে, সরকারি কোনো কর্মকর্তাকে প্রশাসক পদে নিয়োগ দেয়া হলে অতিরিক্ত সচিব শংকর রঞ্জন সাহা দায়িত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নির্দেশে সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তার সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিচ্ছে বলে জানা গেছে। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গকে চসিকের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় তাহলে তার ক্লিন ইমেজ থাকতে হবে। ক্লিন ইমেজ বিবেচনায় এগিয়ে রয়েছেন ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল। অপরদিকে বারবার দলীয় মনোনয়ন চেয়ে পান নি খোরশেদ আলম সুজন। সে আক্ষেপ গোছাতে তাকেও প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হতে পারে।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে যে, করোনার প্রাদুর্ভাব এবং বর্ষা মৌসুমে অতি বৃষ্টি ও পাহাড় ধসের ঝুঁকি থাকায় এখন নির্বাচন করা সম্ভব নয়। এই বক্তব্য পাওয়ার পর স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নির্বাচন করা সম্ভব না হলে স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ হবে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, পর্ষদের মেয়াদ শেষ হলে কোনো কারণে নির্বাচন করা সম্ভব না হলে আইন অনুযায়ী সরকার সিটি করপোরেশনে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসক নিয়োগ দেবে। চসিকে প্রশাসক নিয়োগের এখতিয়ার প্রধানমন্ত্রীর। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক আমরা মেয়াদ শেষের আগেই প্রজ্ঞাপন জারি করব।

উল্লেখ্য, গত ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট আ জ ম নাছির উদ্দীন মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী পর্ষদের মেয়াদ পাঁচ বছর। এই হিসাবে বর্তমান পর্ষদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৫ আগস্ট। নিয়মানুযায়ী মেয়াদপূর্তির ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। সে হিসাবে ২৯ মার্চ ভোটের তারিখ নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন তফসিলও ঘোষণা করেছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ভোটের এক সপ্তাহ আগে ২১ মার্চ নির্বাচন স্থগিত করেন ইসি।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম

আরও পড়ুন