খাগড়াছড়ি শহরের গিরিফুল এলাকা থেকে অপহৃত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ শিক্ষার্থীসহ মোট ছয়জনের এখনও কোনো খোঁজ মেলেনি। অপহরণের চারদিন পেরিয়ে গেলেও উদ্ধার তৎপরতায় এখনও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথবাহিনী গত চারদিন ধরে খাগড়াছড়ি শহরের গিরিফুল, শিব মন্দির, রাবার বাগান, পানখাইয়াপাড়া, মধুপুর, এপিবিএন, তেতুলতলা ও পেরাছড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, এখনও অপহৃতদের পরিবার থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
অন্যদিকে স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার সন্ধ্যার পর স্থানীয় হেডম্যান ও কারবারিদের সমন্বয়ে অপহৃতদের উদ্ধারের চেষ্টা করা হলেও সেটিও ব্যর্থ হয়েছে। এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপহৃতদের ‘সন্তু লারমা’পন্থী এলাকা ভ্রমণ ও পরিকল্পনার উদ্দেশ্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
অপহৃতদের পক্ষে মুক্তির দাবি জানিয়েছে ‘সংঘাত ও বৈষম্য বিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন’। এক বিবৃতিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে সুচিন্তা চাকমা অপহরণের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দ্রুত মুক্তি দাবি করেন। বিবৃতিতে বলা হয়, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে এবং ঐক্যের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।”
ঘটনার বিষয়ে ইউপিডিএফ (প্রসীত) পক্ষ থেকে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দলের জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা। তিনি বলেন, “আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না। অপহরণের ঘটনাকে ঘিরে কোনো মহল ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাদের উপর দায় চাপাতে চায়।”
উল্লেখ্য, বুধবার (১৬ এপ্রিল) ভোরে চবি’র আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী রিশান চাকমাসহ মোট ৬ জনকে গিরিফুল এলাকা থেকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। বাকি অপহৃতরা হলেন চারুকলা বিভাগের মৈত্রীময় চাকমা ও অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো এবং টমটম চালক। সকলেই চবির ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল জানান, “আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপহৃতদের অবস্থান শনাক্তের কাজ চলছে। তাদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
এইচ এম আলমগীর /এআরই/ বাংলাধারা