ksrm-ads

২১ এপ্রিল ২০২৫

ksrm-ads

খাগড়াছড়িতে গোমতি নদী ভাঙনে হুমকির মুখে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা

জসিম উদ্দিন জয়নাল, খাগড়াছড়ি »

পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার গুমতি ইউনিয়নের গুমতি নদীর ভাঙনে বর্ষার আগেই হুমকির মুখে মাটিরাঙ্গা উপজেলার প্রাচীন গোমতি বিকে উচ্চ। শুধু গোমতি বিকে উচ্চবিদ্যালয় নয় গোমতি নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে মাটিরাঙ্গা-গোমতি সড়ক, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান,বসতবাড়ী ফসলি জমি সহ গুরুপূর্ণ স্থাপনা।

গোমতি নদী ভাঙ্গনে বসতবাড়ি, ফসলি জমি স্কুল-মসজিদ-মাদ্রাসা হুমকির মুখে পড়েছে। এসব এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলেও গোমতি ইউনিয়নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হুমকিতে।

মঙ্গলবার (১৬মার্চ) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই গোমতি নদী বর্ষার পানিতে ৪০শতক জায়গা ভেঙ্গে গেছে বসতবাড়ি, সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, মসজিদ,মাদ্রাসা, পাকা সড়ক, হাটবাজার দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙনের মুখে রয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, প্রতি বছর মার্চ মাস থেকে জুন পর্যন্ত নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়। প্রতি বছরই বর্ষাকালে ভাঙ্গছে গোমতি নদী। সেই সাথে সাথে নদীগর্বে বিলিন হয়েছে ফসলি জমি সহ মানুষের বসতবাড়ি অতিক্রম করে গোমতি বিকে উচ্চ বিদ্যালয়ের দিকে নদী ভেঙ্গে আসছে। সামনের বর্ষামৌসুমে ভাঙ্গনের মুখে পড়বে গোমতি বিকে উচ্চ বিদ্যালয়।

ভাঙনের শিকার গোমতি ইউনিয়নের গ্রামের আমিরুননেচ্ছা বলেন, গোমতি নদীর ভাঙনে গত কয়েক বছরে কৃষি জমি গাছপালা গোয়ালঘর সব হারিয়েছি। এখন বসত বাড়ির সামনে নদী চলে এসেছে। এই বর্ষায় বাড়িটি কোনো রকমে রক্ষা পেলেও শুষ্ক মৌসুমে একমাত্র সম্বল ঘরটি নদী গর্ভে চলে যাবে। শেষ সম্বল ঘরটি চলে গেলে আমার পরিবারের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।

সম্প্রতি ওই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গেল বছরের ভাঙনের ফলে গোমতি বিকে উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের ফসলি জমি নদী গর্বে বিলীন হয়েছে। গোমতি নদী ভাঙতে ভাঙতে বিদ্যালয় থেকে বিশ গজ দুরে এসে দাড়িয়েছে। চলতি বছরের বর্ষায় নদী ভাঙণ গোমতি বিকে উচ্চ বিদ্যালয়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি স্পর্শ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গোমতি বিকে উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও গোমতি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. মনির হোসেন।

তিনি বলেন, প্রতি বছরই ভাঙছে নদী আর কমছে কৃষকের জমি। নদী ভাঙণে গোমতি নদীর পাড়ের মানুষ অনেকটাই দিশেহারা। তবে গোমতি বিকে উচ্চ বিদ্যালয় ভাঙনের মুখে পড়লে এষানকার গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে। বন্ধ হয়ে যাবে লেখাপড়া। তাই তিনি ভাঙনের মুখে পড়ার আগেই নদী শাসনের মাধ্যমে ভাঙন রোধের দাবী জানিয়েছেন।

গোমতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন লিটন জানান, ইউনিয়নে নদী ভাঙ্গন রোধে সরকারের পক্ষ থেকে কোন বরাদ্ধ দেওয়া হয়না। তাই ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে নদী ভাঙ্গন রোধে আমরা কিছু করতে পারি না। গোমতি বিকে উচ্চ বিদ্যালয়,ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ী, সড়কসহ, ফসলি জমি রক্ষায় আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের দাবী জানিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন গুমতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: ফারুক হোসেন লিটন।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম জানান, গোমতি নদীর পাড়জুড়ে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ, নদী ভাঙ্গনের থেকে রক্ষা করতে না পারলে মাটিরাঙ্গা কৃষি জমি কমে যাবে। অন্যদিকে বিদ্যালয়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বসত বাড়ী, সড়ক, নদী ভাঙ্গনে হুমকির মুখে পড়বে বলেও জানান তিনি। নদী ভাঙ্গন রোধের জন্য উপজেলা পর্যায়ে সরকারি তেমন কোন বরাদ্ধ নেই। বিষয়টি সর্ম্পকে যেহেতু আমি জেনেছি গোমতি নদীর ভাঙন রোধে জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আমি অবহিত করবো।

বাংলাধারা/এফএস/এআই

আরও পড়ুন