কক্সবাজারের চকরিয়ায় পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভেসে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এসময় তার সঙ্গে থাকা আরও দুজন সাঁতার কেটে প্রাণে রক্ষা পায়। শুক্রবার বেলা ১২ টার দিকে উপজেলার বরইতলীর পহরচাঁদা বিবিরখিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত কিশোর মো. হাবিব (১৩) বরইতলীর পহরচাঁদা বিবিরখিল এলাকার মো. জসিম উদ্দিনের ছেলে।
চকরিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ভারী বর্ষণে পাহাড়ি ঢল নামে বরইতলীতে। সোনাইছড়ির ছড়াখাল উপচে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল স্থানীয় সড়কের উপর দিয়ে। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তিন কিশোর বাড়ি থেকে বের হয়ে পহরচাঁদা বাজারের দিকে যাচ্ছিল। এসময় সড়কের উপর দিয়ে যাওয়া ঢলের স্রোতে ভেসে যায় তারা তিনজন। দু’কিশোর সাঁতরে বেঁচে গেলেও হাবিব পানিতে ডুবে যায়। অল্পক্ষণ পর তার মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন। ঢলের স্রোতে ভেসে গিয়ে কিশোর মৃত্যুর বিষয়ে অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ওসি।
এর আগে গত ২২ আগস্ট বৃষ্টি ও ঢলের প্লাবনে রামু উপজেলায় চারজন নিখোঁজ হন। এদের ঈদগড়ের সাচিং মারমা (২৬) ও গর্জনিয়ার আমজাদ হোসেন (২২)’র মরদেহ পাওয়া যায়। আরো দুজন এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
এদিকে, শুক্রবার ভোর হতে বৃষ্টিপাত বন্ধ থাকায় নামতে শুরু করেছে এলাকায় তলিয়ে থাকা বানের পানি। ঈদগাঁওর ভোমরিয়াঘোনা, সওদাগরপাড়া, হিন্দুপাড়া, খোদাইবাড়ি, ইসলামাবাদ, শিয়াপাড়া, মাইজপাড়া, চান্দেরঘোনা, রামুর গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, দক্ষিণ মিঠাছড়ি, চেইন্দা, কক্সবাজার সদরের পিএমখালী, বাংলাবাজার, খরুলিয়া, খুরুশকুল এলাকার পানি নেমেছে। ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন। বাসাবাড়ির ভেতরে জমা পানি, কাঁদা পরিস্কার করার চেষ্টা করছে দুর্ভোগে পড়া মানুষগুলো। পানি নামলেও এখনো খাবার রান্নার যোগাড় করতে পারেনি তারা। ভুক্তভোগীদের জীবন সচল রাখতে এলাকায় এলাকায় স্বেচ্ছাসেবীরা সাধ্যমতো রান্না করা ও শুকনো খাবার পানি সরবরাহ করছে। অকস্মাৎ বেড়ে যাওয়া পানি ঢুকে ঈদগাঁওর চান্দেরঘোনাসহ বেশ কিছু এলাকায় মুরগীর খামারে বিক্রয় যোগ্য বিপুল সংখ্যক মুরগী। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে চান্দেরঘোনার ছুরত আলম নামে উদ্যোক্তার। মারা যাওয়া মুরগী পুতে ফেলতে গিয়ে তিনি ফেইসবুকে লিখেন, লালিত স্বপ্ন কবরস্থ করে দিলাম। জীবনের প্রতিটি মূহূর্ত অনিশচয়তা আর প্রতিবন্ধকতায় পরিপূর্ণ, এরই মাঝে মানুষ তার স্বপ্ন ও আশা নিয়ে বেঁচে থাকে।