জিয়াউল হক ইমন»
ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি অন্যরকম আকর্ষণ ছিল তারেকের। তবে অন্যান্য খেলাধুলার চেয়ে বডি বিল্ডিংয়ের প্রতি টান ছিল একটু বেশিই। নিজেকে স্মার্ট ও ফিট রাখতে সবসময় পছন্দ করতেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৭ সাল থেকে জিমে নিয়মিত ব্যায়াম করে আসছেন তিনি। সম্প্রতি তিন দিন ব্যাপী বাংলাদেশ বডি বিল্ডিং ফেডারেশনের উদ্যোগে ও সাউথ পয়েন্ট ফিটনেস জোনের ব্যবস্থাপনায় ‘মি. ঢাকা’ ওপেন বডিবিল্ডিং চ্যাম্পিয়নশিপের ১৭০ প্লাস সেন্টিমিটার উচ্চতা ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হন চট্টগ্রামের ছেলে তারেক মহিউদ্দিন।
তারেকের প্রতিভার যোগ্যতা এখন চট্টগ্রাম ছাড়িয়ে সারাদেশে। সেরা এই বডি বিল্ডার দেশের আরও বিভিন্ন শরীর গঠন প্রতিযোগিতায় সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন। ছিনিয়ে এনেছেন নানা খেতাব। শখের বশে বডি বিল্ডিংয়ে নাম লেখালেও এখন এটাকে পেশা হিসেবেই বেছে নিয়েছেন ‘মি. ঢাকা’ জয়ী সেরা এই বডি বিল্ডার।
রবিবার (৩১ জুলাই) জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে ওয়ালটনের পৃষ্ঠপোষকতায় বিজয়ীদের হাতে ট্রফি ও প্রাইজমানি তুলে দেওয়া হয়। তিন দিন ব্যাপী ১১টি ক্যাটাগরির প্রতিযোগিতায় ১৫০টি ক্লাব ও সংস্থার ৪৫০ জন বডিবিল্ডার অংশ নেন ।
তারেক মহিউদ্দিন নগরের কদমতলী ২৯ নং ওয়ার্ডের পোড়া মসজিদ এলাকার মো. আবদ্ল নবীর ছেলে। তার পড়াশোনা এমবিএ-তে। নিজের ব্যায়ামের পাশাপাশি প্রশিক্ষক হিসাবে বেশ কয়েকটি জিমে কাজ করছেন তিনি। এখন তিনি ‘মিস্টার ঢাকা’ নামেই পরিচিত।
নিজের সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তারেক মহিউদ্দিন বাংলাধারাকে বলেন, ‘এই ২০১১ সাল থেকে শুরু করে ১০ বছর কঠোর পরিশ্রম করে আজ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এই খুশি আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’
তিনি বলেন, ‘ছোট থেকেই বডি বিল্ডিংয়ের শখ ছিল। হাঁটি হাঁটি পা পা করে আজকে এই জায়গায় এসেছি। নিজেকে দেশের হয়ে রিপ্রেজেন্ট করতে পেরেছি। এর আগে বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ গেমস’-এ ব্রোঞ্জ মেডেলিস্ট ছিলাম। এরপর ‘মি. বাংলাদেশ’-এ অংশগ্রহণ করলাম। সেখানে ১১৭ জনের মধ্যে টপ ৬ এ ছিলাম। মাসখানেক পরেই ‘মি. চট্টগ্রাম’-এ অংশ নেই। ওখানে দ্বিতীয় হয়েছিলাম। এরপরে সম্প্রতি ‘মি. ঢাকা’য় অংশ নিয়ে গোল্ড মেডেলিস্ট হই। নিজেকে আরও ভালভাবে তৈরি করে ২০২২-এ ‘মি. বাংলাদেশ’-এ অংশগ্রহণ করব।’
নিজের সাফল্যের পেছনে তাঁর মায়ের অবদানের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার এই অর্জনের পেছনে আমার মায়ের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। আমার ভাইয়েরাও আমাকে অনেক সাপোর্ট করেছে।’
চ্যাম্পিয়ন তারেকের ব্যক্তিগত কোচ রফিক আহমেদ মুন্না বাংলাধারাকে বলেন, ‘গত একছর ধরে ‘মি. ঢাকা’য় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য তারেক অনেক পরিশ্রম করেছে। আমি আশা রাখি তারেক মহিউদ্দিন ভবিষ্যতে আরও ভাল করবে এবং দেশকে রিপ্রেজেন্ট করবে।
এদিকে এবার তারেক মহিউদ্দিনের সাথে ৬০ কেজি ওজনের ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয় চট্টগ্রামের আরেক ছেলে মো. আরিফ।
মাদক থেকে যুবসমাজকে দূরে রাখতে বডি বিল্ডিং হতে পারে কার্যকর উপায়। এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাধারা/জেএইচআই