চট্টগ্রামে ছয় দফা দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (বৈছাআ) বিক্ষোভ কর্মসূচি। এসব ঘটনায় চট্টগ্রামের শিক্ষাঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ছয় দফা দাবিতে কাফন মিছিল
চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ১৬ এপ্রিল (বুধবার) থেকে তাদের ছয় দফা দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলন শুরু করেন। এর অংশ হিসেবে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) জুমার নামাজের পর ইনস্টিটিউট এলাকায় আয়োজন করা হয় একটি ব্যতিক্রমধর্মী ‘কাফন মিছিল’।
মিছিলে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা সাদা কাফনের কাপড় জড়িয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। তারা বলেন, “এই কাফন আমাদের বুকে চাপা অন্যায়ের প্রতীক। দাবি আদায় না হলে আমরা মরতে রাজি, মাথা নত নয়।” মিছিলের সময় শিক্ষার্থীরা ‘এক হও, এক হও, পলিটেকনিক এক হও’, ‘মামা থেকে মাস্টার, মামাবাড়ির আবদার’, ‘ষড়যন্ত্রের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘কুমিল্লায় হামলা কেন, প্রশাসন জবাব দাও’ সহ বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দেন।
তাদের দাবি সমূহের মধ্যে রয়েছে—শিক্ষাগত বৈষম্য দূরীকরণ, শিল্পখাতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের স্বীকৃতি, নিয়োগে সমান সুযোগ, প্রকৌশল পেশায় পলিটেকনিক গ্র্যাজুয়েটদের অন্তর্ভুক্তি, মিথ্যা মামলার প্রত্যাহার, এবং টেকনিক্যাল শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন।
ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি
একই দিনে বিকেলে, মোস্তফা হাকিম কলেজ ও আকবর শাহ থানার সামনে কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম মহানগর শাখা। কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেল তিনটা থেকে জামালখান এলাকায় নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন।
সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বৈছাআ-এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ বলেন, “যারা জুলাই আন্দোলনে আমাদের সহযোদ্ধা ছিল, আজ তাদের বিরুদ্ধেই আমাদের অবস্থান নিতে হচ্ছে। ছাত্র রাজনীতির নামে যারা সন্ত্রাস করছে, তারা শিক্ষাঙ্গনের শত্রু। আমরা তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষাঙ্গনে গুটিকয়েক সন্ত্রাসী সদস্যের দাপট বরদাস্ত করা হবে না। ছাত্র রাজনীতি হতে হবে গণতান্ত্রিক ও শিক্ষার্থীবান্ধব। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।”
সমাবেশ শেষে প্রেসক্লাব এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়, যা নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এএস/বাংলাধারা