ksrm-ads

২০ মে ২০২৫

ksrm-ads

চট্টগ্রাম বোর্ড

তিন কলেজে শতভাগ ফেল, জিপিএ ৫ নেমেছে অর্ধেকে

জিপিএ

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২৩ এ চট্টগ্রাম বোর্ডে তিন কলেজে শতভাগ ফেল ও জিপিএ ৫ নেমেছে অর্ধেকে। এছাড়াও পূর্ববর্তী বছরগুলোর তুলনায় এবার পাশের হারেও দেখা যায় বড় ধস। চলতি বছর চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ১ লাখ ৩ হাজার ২৪৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাশ করেছে ৭৪.৪৫ শতাংশ। যার মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৬৩৩৯ জন।

২০২২ সালে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় চট্টগ্রাম বোর্ডে পাশের হার ছিলো ৮০.৫০ শতাংশ। সে হিসেবে চলতি বছর পাশের হার কমেছে ৬ শতাংশ। ২০২১ সালের তুলনায় চলতি বছর পাশের হার কমেছে প্রায় ১৫ শতাংশ। ২০২০ সালের তুলনায় চলতি বছর পাশের হার কমেছে প্রায় ২৬ শতাংশ।

বিগত ৩ বছরের পরিসংখ্যানে চলতি বছর পাশের হার যেমন আশঙ্কাজনকহারে কমেছে তেমনি বড় ধস দেখা যায় জিপিএ ৫ এর সংখ্যায়ও। ২০২২ সালের তুলনায় চলতি বছর পাশের হার নেমে এসেছে অর্ধেকে। চট্টগ্রাম বোর্ডে ছাত্র-ছাত্রী মিলেয়ে চলতি বছর জিপিএ ৫ পেয়েছে ৬৩৩৯ জন শিক্ষার্থী। ২০২২ সালে জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ১২ হাজার ৬৭০ জন। গত বছরের তুলনায় এ বছর জিপিএ ৫ কমেছে ৬৩৩১ জন। ২০২১ সালের তুলনায় চলতি বছর জিপিএ ৫ কমেছে ৭৩৮১ জন। ২০২০ সালের তুলনায় চলতি বছর জিপিএ ৫ কমেছে ৫৮০৪ জন।

এছাড়াও চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ ফেল করেছে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শতভাগ ফেল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো, চান্দগাঁওয়ের ন্যাশনাল পাবলিক কলেজ, মহালছড়ির বৌদ্ধ শিশুঘর স্কুল এন্ড কলেজ, মাটিরাঙা মিনিসিপাল মডেল হাইস্কুল এন্ড কলেজ। ন্যাশনাল পাবলিক কলেজে মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ২১ জন, মহালছড়ির বৌদ্ধ শিশুঘর স্কুল এন্ড কলেজে মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ৭ জন, মাটিরাঙা মিনিসিপাল মডেল হাইস্কুল এন্ড কলেজে মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ৭ জন।

রোববার (২৬ নভেম্বর) বিকেল পৌনে তিনটায় চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়। এসময় ফলাফলের তথ্য উপস্থাপন করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এ এম এম মুজিবুর রহমান।

চলতি বছরের ফলাফলে এমন বড় ধসের কারণ জানতে চাইলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এ এম এম মুজিবুর রহমান বলেন, গত দু বছর পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা হয়নি। বিষয় কম ছিলো, সিলেবাস কম ছিলো বলে বিগত দুই বছর পাস ও জিপিএ ৫ পাওয়া অনেকটা সহজ হয়েছে। এর আগের বছর করোনাকালীন সময়ে অটো প্রমোশন হওয়ায় সেবছর শতভাগ পাশ ছিলো। মূলত এবছর সব বিষয়ে পূর্ণ সিলেবাসে পূর্ণমানে ৩ ঘন্টার পরীক্ষা হয়েছে। সেকারণে বিগত তিন বছরের তুলনায় চলতি বছর পাশের হার, জিপিএ অনেক কম।

তিন প্রতিষ্ঠান শতভাগ অকৃতকার্য হওয়ার পেছনে কি কারণ থাকতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো বলা যাচ্ছেনা কি কারণে শতভাগ অকৃতকার্য হলো। এ বিষয়ে শীগ্রই আমরা তদন্ত করব।

এদিকে ৮৬৮ জন জিপিএ ৫ পেয়ে চট্টগ্রাম বোর্ডে প্রথম হয় সরকারী হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজ, ৭৪৬ জন জিপিএ ৫ পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম কলেজ, ৬৭৬ জন জিপিএ ৫ পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সরকারী সিটি কলেজ, ৪০৫ জন জিপিএ ৫ পেয়ে ৪র্থ অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট কলেজ ও ৩৬৬ জন জিপিএ ৫ পেয়ে ৫ম অবস্থানে রয়েছে সরকারী কমার্স কলেজ।

শতভাগ পাশকৃত ১২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে পাশের হারের বিবেচনায় চট্টগ্রাম বোর্ডে ৯৯.৫৪ শতাংশ পাশের হার নিয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম সরকারী কমার্স কলেজ, ৯৯.৩২ শতাংশ পাশের হার নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম কলেজ, ৯৯.৩০ শতাংশ পাশের হার নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে মিরসরাই উপজেলার প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজ,  ৯৯.১৬  শতাংশ পাশের হার নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ ও ৯৯  শতাংশ পাশের হার নিয়ে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে মিরসরাইয়ের অপর একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মহাজনহাট স্কুল এন্ড কলেজ।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনে ১১৩টি কেন্দ্রে ২৭৯টি কলেজ অংশ নেয়। তার মধ্যে ৩ টি কলেজ শতভাগ অকৃতকার্য, ৫৫ টি কলেজ ১০-৫০ শতাংশ কৃতকার্য, ২০৮টি কলেজ ৫১-৯৯ শতাংশ ও বাকী ১২ টি কলেজ শতভাগ কৃতকার্য হয়েছে। চলতি বছরের পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ১ লাখ ৩ হাজার ২৪৮ জন। যার মধ্যে উপস্থিত ছিলো ১ লাখ ১ হাজার ৯৪৯ জন। পাশের হার ৭৪.৪৫ শতাংশ। তার মধ্যে ছাত্র ৭১.২৪ শতাংশ, ছাত্রী ৭৭.২৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বোর্ডে পাশের হার ৭৪.৪৫ শতাংশ। যার মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরে পাশের হার ৮৫.১৯ শতাংশ, মহানগর ব্যতীত জেলায় পাশের হার ৬৮.৫৬ শতাংশ, মহানগরসহ জেলায় পাশের হার ৭৭.২৭ শতাংশ, কক্সবাজার জেলায় পাশের হার ৭০.৩৮ শতাংশ, রাঙামাটি জেলায় পাশের হার ৬৪.৬২ শতাংশ, খাগড়াছড়ি জেলায় পাশের হার ৬২.২৭ শতাংশ, বান্দরবার জেলায় পাশের হার ৬৬.৮১ শতাংশ।

আরও পড়ুন