ksrm-ads

১৬ মার্চ ২০২৫

ksrm-ads

চট্টগ্রামে নৌকা পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে যারা

আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

এ নির্বাচনের জন্য ৩ হাজার ৩৬২টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের বিপরতে মনোনয়ন চেয়েছেন ২১৭ জন। তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বিতরণের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়। এরপর শুরু হয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ।

দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মনে করছেন, এবার প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে এমন নেতাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে নৌকা প্রতীকে নতুনদের আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন এবার বর্তমান সংসদ সদস্যদের কয়েকজন মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নৌকার মনোনয়ন পেতে চট্টগ্রাম জেলার ১৬টি আসনে সর্বোচ্চ ২১৭ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন।

চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের আসন। এই আসনে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কিনেছেন পাঁচজন। বার বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবার মনোনয়ন কেনেননি। তার জায়গায় ছেলে মাহবুবুর রহমান এবার দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন। ফলে পিতার পরিচয় বিবেচনা করলে তিনিই এগিয়ে আছেন।

চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে মহাজোটের শরীক তরিকত ফেডারেশনের দখলে। বর্তমান সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি। বিএনপি নির্বাচনে না এলে আসনটি এবারও তরিকত ফেডারেশনকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। তবে আওয়ামী লীগের হয়ে আসনটি উদ্ধার করতে মনোনয়ন চেয়েছেন ২১ জন। তাদের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি এগিয়ে আছেন।

চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতাসহ মোট ১২ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন। তবে সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতাই মনোনয়ন পাওয়ার জোর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড, চসিকের একাংশ) আসনে মোট ১৩ জন নৌকার টিকিট চান। তাদের মধ্যে এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য দিদারুল আলম। তিনি বাদ পড়লে সদ্য উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করা এস এম আল মামুনের ভাগ্য খুলতে পারে।

চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে এখন আওয়ামী লীগের শরিক দল জাতীয় পার্টির দখলে। বিএনপি নির্বাচনে না এলে এবারও আসনটিতে জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ মনোনয়ন পেতে পারেন। তবে আওয়ামী লীগ ছেড়ে না দিলে এ আসন থেকে নৌকার মনোনয়ন চেয়েছেন ১৩ জন। তাদের মধ্যে এগিয়ে আছেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল।

চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরীকে ছাড়াও আরও ৮জন মনোনয়ন কিনেছেন। তাদের মধ্যে সংসদ সদস্য ফজলে করিমকে এগিয়ে রাখছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি ছাড়াও ওসমান গনি চৌধুরী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কিনেছেন। তবে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদেরই নৌকার টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী, চসিকের একাংশ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন ২৮ জন। বর্তমান সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন আরশেদুল আলম বাচ্চু ও সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম।

চট্টগ্রাম-৯ (বাকলিয়া-কোতোয়ালি) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তার পাশাপাশি এই আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ. জ. ম নাছির উদ্দীন। এই দুজনের কোনো একজন মনোনয়ন পেতে পারেন।

চট্টগ্রাম-১০ (পাহাড়তলী, ডবলমুরিং) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু। তিনি কয়েকমাস আগে অনুষ্ঠিত হওয়া উপ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তিনি ছাড়াও আ. জ. ম নাছির উদ্দিনসহ ১৯ জন আসনটিতে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন। আ. জ. ম নাছির উদ্দিনকে মনোনয়ন না দিলে এখানেও তার কপাল খুলতে পারে।

চট্টগ্রাম-১১ (পতেঙ্গা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কিনেছেন ২৮ জন। তাদের মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য এমএ লতিফ তিনবারের সংসদ সদস্য। ব্যবসায়ীদের নেতৃত্ব দেওয়া সংসদ সদস্য এমএ লতিফ আবারও মনোনয়ন পেতে পারেন।

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য হুইপ শামসুল হক চৌধুরী ছাড়াও ১৬ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। হুইপ শামসুল হক চৌধুরী এ আসনের দুইবারের সংসদ সদস্য। এবারও তাকেই বেছে নিতে পারে আওয়ামী লীগ।

চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। তিনি ভূমি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। তাকে ছাড়া এ আসনে কারও মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা কম।

চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ- সাতকানিয়া) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলামসহ ১৭ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। এ আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী নেই বললেই চলে।

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগড়া) আসনে মোট ১৫ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন। একসময় জামায়াতের ঘাঁটি ছিল এ আসন। কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার নীতি অনুসরণ করে গত দুবার এই আসনে আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিনকে মনোনয়ন দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। নানা বিতর্ক থাকলে এবারও এই আসনে তিনিই এগিয়ে রয়েছেন।

চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীসহ ১৪ জন মনোনয়ন চেয়েছেন। তাদের মধ্যে সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান এগিয়ে রয়েছেন। তবে কোনো কারণে তিনি বাদ পড়লে সেক্ষেত্রে মনোনয়ন পেতে পারেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও শিল্পপতি মুজিবুর রহমান।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ