ksrm-ads

২ ডিসেম্বর ২০২৪

ksrm-ads

চট্টগ্রামে প্রতিদিন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে ১শ’-১৫০ জন

ইফতি ইমু»

চট্টগ্রামে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা প্রায় চার লাখ। এ বিষয়ে তেমন কোন তথ্য- উপাত্ত না থাকলেও চট্টগ্রামের চিকিৎসকদের ধারণা, এ অঞ্চলে প্রতিদিন নতুন করে শনাক্ত হচ্ছেন গড়ে ১৩০ জন।

অন্যদিকে, বাংলাদেশে প্রতি ১০ জন মানুষের মধ্যে ১জন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। প্রতি ২ জনের মধ্যে ১ জন জানেনই না, তার ডায়াবেটিস আছে। এছাড়াও শারীরিক যেকোনো রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৫জন রোগীর মধ্যে ৩ জনেরই ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। অধিকাংশ রোগীই যা জানেন না।

ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের ২০২০ সালে একটি জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা প্রায় ৮৪ লক্ষ। যা মোট জনসংখ্যার ৮ দশমিক ১ শতাংশ। নতুন করে প্রতি বছর বাড়ছে আরও এক লাখ করে। বর্তমানে সারাবিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান ১০ম স্থানে। সারা বিশ্বে প্রতি বছর ডায়াবেটিস রোগের কারণে ১০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।

চট্টগ্রাম তথা দেশে ডায়াবেটিসের এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আজ রবিবার বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় সারাদেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘ডায়াবেটিস সেবা নিতে আর দেরী নয়’।

চিকিৎসকগণ বলেন, স্বাস্থ্য ভাল রাখতে প্রতিটি মানুষকেই সচেতন থাকতে হবে নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে। নিজের সেবাযত্ন নিজেকেই করতে হবে। আর ডায়াবেটিস রোগীদের তো মেনে চলতে হবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ থ্রি ডি, ডায়েট-ডিসিপ্লিন ও ড্রাগ।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (এন্ডোক্রাইনোলজি) ডা. ফারহানা আক্তার আরো বলেন, ডায়াবেটিস মানব শরীরের জন্য একটা ‘নীরব ঘাতক’। এই রোগ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ধীরে ধীরে নষ্ট করে ফেলে। যা পরবর্তীতে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। নারী-পুরুষ-শিশু সব বয়সী মানুষই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পৃথিবীতে বর্তমানে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা ৪৬৩ মিলিয়ন। এরমধ্যে ৮৮ মিলিয়ন রয়েছে শুধু দক্ষিণ এশিয়াতে।

তিনি বলেন, যাদের মধ্যে মধ্যম বয়সী রোগীর সংখ্যাই বেশি। প্রতি ৭ জন গর্ভবতীর মধ্যে ১ জন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই এখনি মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি না হয়, তবে ধারনা করা হচ্ছে ২০৪৫ সালে এই সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে। এছাড়াও শিশুদের ডায়াবেটিস হচ্ছে। এটি সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে টাইপ-১। যেখানে শিশুর অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন উৎপাদনের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। কিন্তু বর্তমানে শিশুদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের প্রবণতা ও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যা সাধারণত প্রাপ্ত বয়স্কদের বেশি হয় ।

চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের এসিস্টেন্ট ডাইরেক্টর ও পুষ্টিবিদ হাসিনা আক্তার লিপি বলেন, যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের ১০ শতাংশ টাইপ ওয়ানে আক্রান্ত। অন্যটি টাইপ টু ডায়াবেটিস। এই ধরনের ডায়াবেটিসে যারা আক্রান্ত তাদের অগ্ন্যাশয়ে যথেষ্ট ইনসুলিন উৎপন্ন হয় না অথবা এই হরমোনটি ঠিক মতো কাজ করে না। ডায়াবেটিসের পারিবারিকভাবে ও অলস জীবন যাপনের জন্য দায়ী। আজকাল অনেক বাচ্চাই স্মার্ট ফোনের বিভিন্ন গেমসে আসক্ত। দিনের বেশিরভাগ সময় টেলিভিশন ও কম্পিউটারের সামনে কাটিয়ে দেয়। কোভিড ১৯ প্যানডেমিকে বাসায় বসে অনলাইন ক্লাস করায় এদের অনেকেরই ওজন বেড়ে যাচ্ছে। বাহিরের খোলা মাঠে খেলাধুলা করার প্রবণতাও কমে গেছে। ফার্স্ট ফুডের অতি সহজলভ্যতায় বাচ্চারা এসব খাবারে আগ্রহী হয়ে উঠছে। এসব নানাবিধ কারণে বাচ্চাদের স্থূলতা বেড়ে যাচ্ছে। স্থূলতা ইনসুলিন কে সঠিকভাবে কাজ করতে দেয় না। যার ফলে পরবর্তীতে এই বাচ্চাগুলো ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয় । বিজ্ঞানীরা এখনও বের করতে পারেনি কী কারণে এরকমটা হয়। তবে তারা বিশ্বাস করেন যে এর পেছনে জিনগত কারণ থাকতে পারে। অথবা অগ্ন্যাশয়ে ভাইরাসজনিত সংক্রমণের কারণে ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলো নষ্ট হয়ে গেলেও এমন হতে পারে।

বাংলাধারা/এফএস/এফএস

আরও পড়ুন