ksrm-ads

১৮ মে ২০২৫

ksrm-ads

চট্টগ্রামে বৈশাখে ছিলো ভয়, সিআরবিতে সংস্কৃতি”

চট্টগ্রামে নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে বাংলা নতুন বছর ১৪৩২। তবে সোমবার (১৪ এপ্রিল) শহরের বিভিন্ন স্থানে আংশিক আয়োজনে এবং কম জনসমাগমে বৈশাখী উৎসব উদযাপিত হয়েছে। আয়োজকদের মতে, ডিসি হিলে রবিবার রাতে সংঘটিত হামলা ও মঞ্চ ভাঙচুরের ঘটনায় অনেকেই আতঙ্কে ছিলেন। অপরদিকে রোদের প্রচণ্ডতাও মানুষের উপস্থিতিতে প্রভাব ফেলেছে বলে মত দিচ্ছেন কেউ কেউ।

বছরের সবচেয়ে বড় বর্ষবরণ আয়োজন হওয়ার কথা ছিল ডিসি হিলে। কিন্তু হামলার ঘটনায় সে আয়োজন সোমবার বাতিল করা হয়। নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পুলিশ নগরজুড়ে বাড়তি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

এদিকে ‘নববর্ষ উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম’ আয়োজিত সিআরবির শিরীষতলায় দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক আয়োজন যথারীতি চলছে। সকাল ৭টায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের বিভিন্ন সংগঠনের শিল্পীরা সম্মিলিত সঙ্গীত, বৃন্দআবৃত্তি এবং নৃত্য পরিবেশন করেন। আয়োজনে অংশ নেয় উদীচী চট্টগ্রাম, সঙ্গীত ভবন, রেলওয়ে সাংস্কৃতিক ফোরাম, সৃজামী, শব্দনোঙ্গরসহ আরও কয়েকটি সংগঠন।

ছবি- সিআরবি

নববর্ষ উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফারুক তাহের বলেন, “পহেলা বৈশাখ আমাদের সকলের মিলনমেলা। সব মত ও পথের ঊর্ধ্বে উঠে আমরা একত্রিত হই এই দিনে। এই ঐতিহ্য ধরে রাখাই আমাদের লক্ষ্য।”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে একটি বর্ষবরণ শোভাযাত্রা বের করা হয় সকালে। এবার ব্যানারে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ না লিখে শুধু ‘বর্ষবরণ ১৪৩২’ লেখা হয়। শোভাযাত্রায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা তৈরি করেন ইলিশ, টেপা পুতুলের ঘোড়া, মুখোশসহ বিভিন্ন প্রতীকী শিল্পকর্ম।

শহরের আরও কিছু এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে বর্ষবরণের আয়োজন হয়। চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও মহিলা সমিতি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে শোভাযাত্রা বের হয়। সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এসব আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপিও দলীয় কার্যালয়ে ছোট পরিসরে অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

তবে সিআরবি এলাকাজুড়ে দুপুর পর্যন্ত তেমন কোনো ভিড় দেখা যায়নি। দর্শনার্থীদের মধ্যে উৎফুল্লতা থাকলেও এক ধরনের অস্বস্তি ও দ্রুত ফিরে যাওয়ার প্রবণতা চোখে পড়ে। বলীখেলার পরিবর্তে হা-ডু-ডু খেলার আয়োজন হলেও সেটি দর্শকদের তেমন আকর্ষণ করতে পারেনি।

সুমন নামে এক দর্শনার্থী বলেন, “সবকিছু আছে, কিন্তু প্রাণ নেই। মানুষ নেই বলেই উৎসব যেন ফাঁকা ফাঁকা।”
দেলোয়ার নামে এক দোকানি আক্ষেপ করে বলেন, “ভিড় হবে ভেবে খেলনা তুলেছি, কিন্তু ক্রেতা নেই।”

অন্যদিকে রুকন নামে এক অভিভাবক বলেন, “শিশুদের দেখানো দরকার আমাদের সংস্কৃতি। না হলে একসময় হারিয়ে যাবে। এখন ভয় আছে, বিতর্ক আছে, তবে নিরাপত্তা ভালো ছিল।”

সংগঠকদের একজন জানান, “ডিসি হিলের ঘটনার পর মানুষ আতঙ্কিত। অনেকে এসেছেন, কিন্তু তাড়াতাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।”

সব মিলিয়ে, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও চট্টগ্রামে বৈশাখী আয়োজন হয়েছে। যদিও জনসম্পৃক্ততা ছিল সীমিত, সাংস্কৃতিক চর্চার ধারা অব্যাহত রাখতে আয়োজক ও শিল্পীদের চেষ্টার ঘাটতি ছিল না।

এআরই/বাংলাধারা

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ