গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে হাঁটু থেকে কোমর পরিমাণ জলজট দেখা দেয় চট্টগ্রাম নগরীর অধিকাংশ এলাকায়। আজ সোমবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তুলনামূলক কমলেও উন্নতি হয়নি জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির। পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগে দিন পার করছেন নগরীর চকবাজার, দেওয়ান বাজার, খলিফাপট্টি, মুরাদপুর, ২ নম্বর গেইট, বহদ্দারহাট, বাদুরতলা, শুলকবহর, মোহাম্মদপুর, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ, বাকলিয়া, ফিরিঙ্গিবাজার, চান্দগাঁও, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, তিন পুলের মাথা, রিয়াজুদ্দিন বাজার, মুরাদপুর, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ, কালারপোল, বড়পোল, হালিশহরসহ অধিকাংশ এলাকার বাসিন্দারা।
এদিকে জলজটের কারণে গণপরিবহন সংকট ও রাস্তাঘাট পানির নিচে ডুবে থাকায় সকাল থেকে চরম বিপাকে পড়তে হয়েছে শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীদের। আজ ডিগ্রি ২য় বর্ষের ব্যবস্থাপনা বিষয়ের পরীক্ষা দিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে নগরীর বিভিন্ন কলেজের পরীক্ষার্থীদের।
নগরীর বহদ্দারহাটে হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে রিক্সাভাড়া নিয়ে দরকষাকষি করতে দেখা গেছে এক পরীক্ষার্থীকে। সুষ্মিতা রায় নামের ওই পরীক্ষার্থী জানান, গাড়ি পাচ্ছিনা। চট্টগ্রাম কলেজে পরীক্ষা দিতে যাব। এদিকে হাতে সময়ও খুব কম। সুযোগ বুঝে রিক্সাভাড়া বাড়িয়ে বলছেন রিক্সাওয়ালা মামারা।
এদিকে আজ পরীক্ষা দিতে গিয়ে বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকা নালায় পড়ে হাঁটহাজারীর নিপা নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবরও পাওয়া যায়। বাড়ি থেকে বের হয়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় নালায় পড়লে সেটা থেকে আর উঠতে পারেননি মৃগী রোগে আক্রান্ত এ শিক্ষার্থী।
সোমবার (৭ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২৮ মিলিমিটার। যদিও এর আগের দিন ৩২১ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে আবহাওয়া অফিস। অতি ভারি বৃষ্টির কারণে সমুদ্র বন্দরগুলোকে দেওয়া ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে—এবার গত ৩০ বছরের চেয়ে রেকর্ড পারিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়া গত তিনবছরে এবারেই প্রথম এমন ভরা বর্ষার নাগাল পেল নগরবাসী। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৪ ঘন্টায় চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২১৭ দশমিক ৮ মিলিমিটার।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আগামী ২৪ ঘন্টাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষন হতে পারে। এর প্রভাবে পাহাড় ধ্বসেরও সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আগামী পরশু থেকে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হবে। এরপর ধীরে ধীরে বৃষ্টিপাতও কমে আসবে।’