বিশেষ প্রতিবেদক »
চট্টগ্রামে লকডাউন দেখতে ঘরে বসে থাকাদের কৌতুহল আকাশচুম্বি। এমন মানুষদের কৌতুহল কমাতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আর তাই রাস্তায় নামা ঠেকানো যাচ্ছে না এসব কৌতুহলীদের। করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা এড়াতে কিছুতেই সচেতন করা যাচ্ছে না সাধারণ মানুষকে। রাস্তায় যান চলাচলে অভিযান, এমনকি মানুষ রাস্তায় না নামতে কঠোর লকডাউন দিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না অসচেতন নগরবাসীকে। জেলাপ্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনী সকাল-সন্ধ্যা অভিযান পরিচালনা করেও সচেতনতা বাড়াতে পারছে না। ফলে মোবাইলকোর্টের মাধ্যমে জরিমানার আশ্রয় নিতে হয়েছে যৌথ বাহিনীকে। দুই শিফটে ১৬টি থানা এলাকায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
অভিযান টিমগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, নগরবাসী নিজেরা সচেতন না হলে করোনা ভাইরাস ঠেকানো যাবে না। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের এ নগরী অচিরেই পরিনত হবে মৃত্যুকূপে। এতে বাধ সাধছে নগরবাসী। এদিকে সর্দি, কাশি ও গলা ব্যাথার নাম শুনলেই করোনা আতঙ্কে নামীদামী চিকিৎসকরা প্রাইভেট চেম্বার ছেড়ে দিচ্ছে। উল্ল্যেখ, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা ভাইরাসের নজির খুঁজে পাওয়া গেছে। এরপর থেকে শুরু হয়েছে এ ভাইরাস ঠেকাতে সরকারী নানা কার্যক্রম। ক্রমশ এই মহামারী ও ভাইরাসের লাগাম টেনে ধরতে শুরু হয় জনসচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম। মুলতঃ শিবচরে লকডাউনের মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছিল প্রথম লকডাউন।

এদিকে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে কঠোর লকডাউনের মাধ্যমে গত ১জুলাই থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সরকারি ও বেসরকারি অফিস আদালত। আগামী ৭জুলাই পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসলে তা আবার সময় বাড়িয়ে দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ক্রমাগত করোনা শনাক্ত বৃদ্ধি ও রোগীর পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে সাধারণ ছুটির পাশাপাশি শুধুমাত্র ওষুধের দোকান, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যাদি ও কাঁচাবাজার ছাড়া সবকিছু বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে এখন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লোকসমাগম নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ ও নগরবাসির অযথা ঘোরাঘুরি বন্ধে অভিযান পরিচালনা করতে বলা হয়েছে। এমন নির্দেশনায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ১২জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে গত ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে অভিযান।

লকডাউনে রাস্তায় আকস্মিক চেকপোস্ট বসিয়ে করোনা ঠেকানোর নানা পক্রিয়া চালু করেছে জেলা প্রশাসন। নগরব্যাপী জেলা প্রশাসনের ১২জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পরিচালানায় ও যৌথ বাহিনীর উপস্থিতিতে দুটি শিফটে কাজ করে যাচ্ছে। তবে নগরবাসীকে বিভিন্নভাবে ছাড় দেয়া হলেও সচেতন করা যাচ্ছে না। ফলে ঘর থেকে অকারণে বের হলেই জরিমানা চালু করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ও জনগনের অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন দুটি শিফটে ১২জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নগরীর ১৬টি থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছে। প্রথম শিফটে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত আর দ্বিতীয় শিফটে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত যৌথ অভিযান অব্যাহত আছে।
বাংলাধারা/এফএস/এআর