ksrm-ads

৭ অক্টোবর ২০২৪

ksrm-ads

চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের ডিজিটাল জালিয়াতির ফাঁদ (ভিডিও সহ)

শাহ আলম বাবু »

অনলাইনে সরকারি-বেসরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রকাশিত নীতিমালা অনুসারে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া ১২ মে থেকে শুরু হয়ে ২৩ মে (যারা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করবে তাদের ও এই সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে) পর্যন্ত চলবে।

আবেদন প্রক্রিয়া শেষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ১ম পর্যায়ে নির্বাচিতদের তালিকা বা ফলাফল ১০ জুন প্রকাশ করা হবে। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাশ শুরু হবে ১ জুলাই থেকে।

এরই মধ্যে বেশি সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করাতে মাঠে নেমে পড়েছে কিছু বেসরকারী কলেজের মালিকপক্ষ। তারা আশ্রয় নিচ্ছে বিভিন্ন ডিজিটাল জালিয়াতির। নগরীর চকবাজারে মতি টাওয়ারে অবস্থিত বিজ্ঞান কলেজের ডিজিটাল জালিয়াতির এমনই একটা ভিডিও চিত্র বাংলাধারার কাছে এসে পৌঁছেছে।

সেখানে দেখা গেছে এক ব্যাক্তি বিজ্ঞান কলেজের পক্ষে অনলাইনে ভর্তির আবেদন করা হয় এমন কম্পিউটার দোকানে গিয়ে এক প্রকার চুক্তি করছেন। চুক্তি অনুযায়ী যে সকল শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে আসবে তাদের কলেজ পছন্দের তালিকায় যদি বিজ্ঞান কলেজকে ১ম করে দিতে পারে তাহলে দোকানদার পাবেন ৩শ’ টাকা। আর যদি ২-৫ সিরিয়ালের এর মধ্যে রাখতে পারে তাহলে দোকানদারকে দিবে ১শ‘ টাকা।

দোকানদার টাকা কিভাবে পাবে এমন প্রশ্নের জবাবে লোকটি বলে, আমরা টাকা নগদ অথবা বিকাশে দেব। আপনি যদি বিকাশে টাকা নিতে চান তাহলে আবেদনের এক কপি প্রিন্ট করে রাখতে হবে। আবেদন পত্রে যে রোল নম্বর থাকবে সেটা আপনি আমাদেরকে এসএমএস করলে আপনার টাকা বিকাশে দিয়ে দেওয়া হবে। ৮-১০ টা আবেদন পত্র একসাথে হলেই আপনি আমাকে ফোন করবেন। তাহলে আমরা আপনাকে টাকা নগদ অথবা বিকাশে প্রদান করবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর মোঃ জাহেদুল হক বাংলাধারাকে বলেন, এটা অবশ্যই একটা চরম দূর্নীতি। আমাদেরকে প্রমাণ দেন আমরা এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো। আমরা বারবার শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করছি তারা যেন কোন কম্পিউটার দোকানদারের উপর নির্ভর না করে। তারা আবেদন ফর্মে অবশ্যই নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী কলেজ দিবে।

যদি দূর্নীতির প্রমাণ দেওয়া হয় তাহলে আপনাদের পদক্ষেপ কি থাকবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার হাতে যদি ছাই থাকতো তাহলে বাইং মাছগুলা বের হতে পারতো না। হাতে তো ছাই নাই তাই মাছ গুলাকে ধরলে আস্তে করে বের হয়ে যায়। টাকা যেহেতু দিছে কম্পিউটার অপারেটরকে এক্ষেত্রে আপনারা দুদুকে অভিযোগ করতে পারেন। যারা এ সমস্ত কাজ করে তাদের আমরা অনেক সময় মৌখিক বা লিখিত ভাবে সতর্ক করে থাকি। আপনারা যেমন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলছেন সেটি নেওয়ার মতো ব্যবস্থা আমার কাছে নাই। আপনারা লিখিত অভিযোগ দেন আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবো। এতে অনেক সময় পার হয়ে যাবে যার ফলে যে শাস্তি পাওয়ার কথা সে আর সেটা পাবে না।

তাদের দূর্নীতির একটা ভিডিও আমার কাছে আছে এটা দিলে কি কোন শাস্তি হবেনা এমন প্রশ্নের জবাবে কলেজ পরিদর্শক বলেন, আপনারা সোশ্যাল মিডিয়ায় এটি প্রচার করে দেন। এতেই এদের বেশি শাস্তি হয়ে যাবে। আমরা পদক্ষেপ নিতে হলে এটার লিখিত অভিযোগ করতে হবে, পরে আমরা তদন্ত করে প্রমাণ পেলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। আমার এটা করতে গেলে সময় সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাড়াবে। আমরা গত বছর ও ওদেরকে ধরছিলাম কিন্তু সরাসরি অস্বীকার করে। তারা বলে এটি আমাদের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা চালায় একটি মহল।

যদি কোন শিক্ষার্থী এমন প্রতারণার শিকার হন তাহলে কি ব্যবস্থ গ্রহন করবেন এমন প্রেশ্নের জবাবে প্রফেসর মোঃ জাহেদুল বলেন, ধরেন এখানে একটা ছাত্রকে নিয়ে আসলেন সে অভিযোগ করলো যে কম্পিউটার অপারেটর টাকা নিয়ে আমার এইটা করে দিছে। আমরা আবেদন বাতিল করে দিতে পারি অথবা সিকিউরিটি কোড দিয়ে আবেদন সংশোধন করে দিতে পারি। আমরা এ সমস্ত বিষয় মাথায় রেখেই আবেদন সংশোধ করার সুযোগ দিয়েছি।

বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ জাহেদ খানের কাছে ভিডিও ও ডিজিটাল জালিয়াতির ব্যাপারে জানতে বেশ কয়েকবার ফোন দেবার পর রিসিভ করে কথা না বলে ব্যস্ততা দেখিয়ে পরে ফোন করার কথা বলে ফোন কেটে দেন। পরবর্তিতে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি কল রিসিভ না করে কেট দেন।

ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন

বাংলাধারা/এফএস/এমআর/এসবি

আরও পড়ুন