বাংলাধারা প্রতিবেদন »
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়েশা খানম আর নেই।
শনিবার (২ জানুয়ারি) ভোরে ঢাকার নিজ বাসায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজধানীর বিআরবি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আয়েশা খানমের বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ছিলেন।
ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সহসভাপতি আয়েশা খানম বাষট্টির ছাত্রআন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং মুক্তিযুদ্ধসহ সব আন্দোলনের সক্রিয় সংগঠক ছিলেন।
আয়েশা খানমের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় আয়েশা খানমের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
শোক জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই নারী নেত্রীর মৃত্যুতে দেশের নারী সমাজ একজন অকৃত্রিম বন্ধু ও সাহসী সহযোদ্ধাকে হারাল।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় আয়েশা খানমের মরদেহ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেওয়া হয়, সেখানে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়।
পরে নেত্রকোনায় নিয়ে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক করবরস্থানে সমাহিত করা হবে।
আয়েশা খানমের জন্ম নেত্রকোনার গাবড়াগাতি গ্রামে ১৯৪৭ সালের ১৮ অক্টোবর। পাকিস্তান আমলে হামুদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বাতিলের দাবিতে ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে পা রাখেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি রোকেয়া হল ছাত্র সংসদের সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৭১ সালে ছাত্র ইউনিয়নের সহসভাপতি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে ঢাকায় শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করতে নামেন তিনি। ডামি রাইফেল হাতে ঢাকায় নারী শিক্ষার্থীদের মিছিলের যে ছবি আলোচিত হয়, তাতে আয়েশা খানমও ছিলেন। এছাড়া ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বক্তৃতা দিয়েছিলেন আয়েশা খানম৷
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর নিজেকে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যুক্ত করেন আয়েশা খানম। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক বাহিনী ও তাদের দোসরদের নির্যাতনের শিকার নারীদের পুনর্বাসন এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় কাজও করেন তিনি৷
শুরু থেকেই বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আয়েশা খানম৷ প্রথমে ছিলেন সহ-সাধারণ সম্পাদক, দশক কাল আগে সভাপতি নির্বাচিত হন এবং আমৃত্যু সেই পদে ছিলেন।
বাংলাধারা/এফএস/এআর