ksrm-ads

১৬ মার্চ ২০২৫

ksrm-ads

চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে আবারও উত্তপ্ত বাঘাইছড়ি; পাহাড়ি-বাঙালি দাঙ্গা’র আশংকা

আলমগীর মানিক, রাঙামাটি প্রতিনধি »

পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বাঘাইছড়ির জনপথ। সম্প্রতি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় কারণে অকারণে পাহাড়িরা বাঙালিদের উপর ক্ষীপ্ত হয়ে উঠেছে। যা পাহাড়িদের কর্মকান্ডে প্রকাশ পাচ্ছে।

শনিবার (২৪ এপ্রিল) বিকাল ৪টার দিকে উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের আবদুর রব পাশবর্তী ইউনিয়ন সারোয়াতলী গরু নিয়ে গেলে তার কাছে চাঁদা দাবি করে জেএসএস সমর্থিত কর্মীরা।

চাঁদা দিতে অপারগতা দেখালে তাকে বেদম মারধর করে উপজাতি জেএসএস’র কর্মীরা। এতে মোঃ রবমিয়াকে মেরে তার সামনের ৩টি দাঁত ভেঙ্গে দেয়। এদিকে পাহাড়ি সন্ত্রাসী যুবকেরা বাঙালি রবকে মারধর করার পরে লাঠি সোটা নিয়ে বাঙালিদের আক্রমণ করার পাশাপাশি ফেসবুকে ভিডিও লাইভ দিয়ে সরাসরি হুকমি প্রদর্শন করে।

এদিকে রবিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে কিছু বাঙালি পাহাড়ি দূরছড়ি মেদেনিপুর এলাকায় মাছ শিকার করতে গেলে উপজাতিরা জেলেদের শার ধর করে তাদের মাছ শিকারের জাল আগুনে পুড়িয়ে দেয়।

আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, যেহেতু রাতের ঘটনা তাই সকালে উভয় পক্ষকে ডেকে বিষয়টি নিয়ে সমঝোতায় বসার কথা রয়েছে। এতে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকার কথা।

এদিকে উপজাতি যুবকেরা ভিডিও লাইভে হুমকি প্রদর্শন করে বলেছে, বাঙালিরা কে কোথায় আছ সাহস থাকলে তোমার আমাদের সাথে যুদ্ধ করতে আস। ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে বাঙালিদের মারতে ধারালো লম্বা দা, কিরিচসহ আধুনিক ধারালো অস্ত্র হাতে নিয়ে বাঙালিদের ডাকছে যুদ্ধে আসার জন্য।

একইদিনে বাঘাইছড়ির ২ জেলেকে চরম মারধর করে উপজাতিরা। এর সবই হলো পাহাড়ে চাঁদাবাজির কারণ। পরে এ ঘটনা চারদিক ছড়িয়ে পড়লে রাজনগর জোনের অধীনেস্থ চুরাখালী বিজিবি ক্যাম্পের ইনচার্জসহ বিজিবি জোয়ানেরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উভয় পক্ষকে শান্তনা দিয়ে সমাধানের পথ খুঁজে।

গত ২১ এপ্রিল উপজেলার আর্যপুর এলাকায় ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল নিয়ে গেলে পাহাড়ি তিন যুবক মিলে ওই বাঙালির মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এভাবে একর পর এক ঘটনা ঘটিয়েই যাচ্ছে পাহাড়ি যুবকেরা। এতে বুঝা যাচ্ছে বাঘাইছড়িতে দিন দিন আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে। এসব ঘটনার প্রতিবাদে বাঘাইছড়িতে নাগরিক পরিষদ ও সাধারণ জনতা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

আমতলী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রাসেল চৌধুরী বলেন, আমতলী ও সার্রোয়াতলী ইউনিয়ন সীমানা রেখার পাশা পাশি অবস্থান। পাহাড়ি বাঙালি উভয়ে সহবস্থানে বসবাস করে আসছে। কিন্তু সীমানা দখলের চেষ্টায় কয় দিন পরপর উপজাতিরা বিভিন্ন ইস্যু ধরে বাঙালিদের উপর অন্যায় অত্যাচার করে যা উপজাতি যুবকেরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেরাই নিজেদের চরিত্র উন্মোচন করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে ওই ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি যথেষ্ট বলে মনে করি।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে উপজাতি সন্ত্রাসী জেএসএস কর্তৃক লালিত যুবকেরা একের পর একটি ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের দাবি রাঙ্গাপাহাড় এলাকাসহ অতিগুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সেনা ক্যাম্প বা বিজিবি ক্যাম্প বসানো জরুরী। এমতাবস্থা চলতে থাকলে পাহাড়ে বাঙালি বসবাস কঠিন হয়ে পড়বে।

এসব ঘটনার পেছনে হাত রয়েছে এ বিষয়ে বলেন, এসব কিছুর পেছনে নবগঠিত জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক সার্রোয়াতলী ইউপি চেয়ারম্যান প্রিয় নন্দন চাকমার হাত রয়েছে।

জেলা পরিষদ সদস্য প্রিয় নন্দন চাকমা বলেন, আমতলী ইউনিয়নের নাটের গুরু হলো রাসেল চেয়ারম্যান। সে কয় দিন পরপর নতুন নতুন ঝামেলা সৃষ্টি করে। এসব না করলে তার ভাল লাগে না।

তিনি বলেন, সামনে ইউপি নির্বাচন, যার জন্য এসব ঝামেলা সৃষ্টি শুরু করছে রাসেল চেয়ারম্যান। ছোট্ট একটি ঘটনাকে বড় করে তোলা এটা হলো রাসেল চেয়ারম্যানের কাজ। ওইসব এলাকায় যা ঘটছে সকল ঘটনার মূল নায়ক রাসেল।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, এখানকার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে মাঝে মধ্যে কিছু কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে। সেগুলো নিরসনে আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করছি।

তবে এসবের পেছনে জেএসএসের হাত রয়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করছে।

বাংলাধারা/এফএস/এআই

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ