চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রকাশ্যে চলছে রাজনৈতিক দখলদারিত্ব। মুছাপুর আব্দুল বাতেন উচ্চ বিদ্যালয় (এবি হাই স্কুল) কেন্দ্রকে ঘিরে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে যুবদলের মুছাপুর ইউনিয়নের নেতা তসলিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি নিজ সন্তানকে পরীক্ষায় বিশেষ সুবিধা দিতে প্রতিদিন কেন্দ্রে প্রবেশ করছেন, আর এতে সহায়তা করছেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্রসুপার একে ফজলুল করিম।
গোপন সূত্রে জানা গেছে, তসলিমের সন্তান এবি হাই স্কুল কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। তাকে অতিরিক্ত সুবিধা দিতে তসলিম নিয়মিতই কেন্দ্রে প্রবেশ করছেন, যেখানে তিনি পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মাঝে দায়িত্ব বণ্টনেও হস্তক্ষেপ করছেন। এমনি একটি ভিডিও ফুটেজ এসেছে বাংলাধারার হাতে। যেখানে দেখা যায় , পরীক্ষাচলাকালীন কেন্দ্রসুপার একে ফজলুল করিমের কক্ষে বসে চায়ের আড্ডায় ব্যাস্ত বিএনপির যুবদলের এই নেতা। কিন্তু আইননুযায়ী পরীক্ষাচলাকলীন কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে জনসাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ১৪৪ধারা জারি করা হয়। তাহলে কীভাবে নিয়ম নীতি বালাই না করে হরদম পরীক্ষা কেন্দ্রে যাতায়ত করছেন বিএনপির এই নেতা?

শিক্ষকরা অভিযোগ করছেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক ফজলুল করিমই এই অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রধান মদদদাতা। রাজনৈতিক স্বার্থে তসলিমের সব অনিয়মে নীরব সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, তিনি উপজেলা পর্যায়ে প্রশ্ন তৈরি ও সিলেবাস বাণিজ্যের সাথেও জড়িত।
স্থানীয় অভিভাবক মহলে ক্ষোভ থাকলেও, তসলিমের রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে অনেকেই মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। অভিযুক্ত তসলিম এ প্রসঙ্গে বলেন, “উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমতি নিয়ে আমি কেন্দ্রে যাই।” তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিগ্যান চাকমা বলেন, “এসব বিষয়ে আমি কোনো অনুমতি দিইনি। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং জরিমানা করা হবে।”
অন্যদিকে, শিক্ষক ফজলুল করিম প্রথমে সব অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করেন যে, “তসলিম এক ফাঁকে আসেন, আবার চলে যান।”
এই বিষয়ে উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইন্ঞ্জিয়ার বেলায়েত হোসেন বলেন , বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কখনোই অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয় না। আমরা উপযুক্ত প্রমাণ পেলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নিব।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, একদিকে যখন শিক্ষার্থীরা জীবন গড়ার লড়াইয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে, তখন এমন রাজনৈতিক দখলদারিত্ব ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এআরই/বাংলাধারা